৫আগষ্ট অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খাতের মতো দেশের বিনোদন অঙ্গনেও এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার এই অবস্থা ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তবে এরই মধ্যে বেশ কিছু ঘটনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে দেশজুড়ে। সেই ধারা এখনো চলমান রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা একরপর এক ঘটেই চলছে।
যেমন—শিল্পকলায় প্রদর্শনীরত অবস্থায় নাটক বন্ধ করে দেওয়া, চট্টগ্রামে একটি শো-রুম উদ্বোধন করতে গিয়ে ‘তৌহিদী জনতা’র তোপের মুখে অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর ফিরে আসা, কিংবা অতি সম্প্রতি টাঙ্গাইলে একটি প্রসাধনপণ্যের শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা পরীমনির যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল এবং কালিহাতী শাখার আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে যাননি পরীমনি। এই ঘটনাগুলো আমাদের শোবিজ অঙ্গনে একরকম অস্থির করে তুলেছে।
অনেকটা আতংকের মধ্যে দিন পর করছেন শোবিজ অঙ্গনের তারকারা। অনিশ্চয়তার মধ্যে মধ্যে কাটছে তাদের জীবন।গত নভেম্বরে চট্টগ্রামে ‘ব্যবসায়ী ও তৌহিদি জনতা’র বাধার মুখে শোরুম উদ্বোধন করতে গিয়ে ব্যার্থ গয়ে ফিরে আসতে হয় মেহজাবিন চৌধুরীকে।
চট্টগ্রামের স্থানীয় একটি মাদ্রাসার হুজুরের উপস্থিতিতে শো রুমের উদ্বোধন উপলক্ষে মিলাদ মাফিল পড়ানো হয়। পরদিন ছিল অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মুসল্লিরা।
তাই ‘রিয়াজউদ্দিন বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও তৌহিদি জনতা’ ব্যানারে মেহজাবীনকে দিয়ে উদ্বোধন করার বিষয়ে প্রতিবাদ জানায়। একই দিন শিল্পকলা একাডেমিতে বিক্ষুব্ধ জনতার চাপে নাট্যদল দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরাণ’র মঞ্চায়ন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন মহাপিরচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
বিক্ষুব্ধ জনতার অভিযোগ, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরোধিতা ও অন্তর্র্বতী সরকারের সমালোচনা করেছেন নাট্যদলটির সচিব এহসানুল আজিজ বাবু। এ ছাড়াও অতি সম্প্রতি একটি শো-রুমের উদ্বোধনে গেলে তোপের মুখে পড়েন চিত্রনায়িকা পরী মণি। সেই সময় বিষয়টি নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে ব্যপক আলোচনা সমালোচনা হয়। এই ঘটনাগুলোর সাথে ধর্মীয় বিষয়ের সম্পৃক্ততা আছে।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন পরীমণি। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছেন তিনি। পোস্টে তিনি লিখেন - ‘ এতো চুপ করে থাকা যায় নাকি!!!
পরাধীন মনে হচ্ছে। শিল্পীদের এতো বাধা কেন আসবে!? ওহংবপঁৎব ভববষ হচ্ছে ! এমন স্বাধীন দেশে নিরাপদ নই কেন আমরা!
মেহজাবীন, পরশী এর আগে এমন হেনস্থার শিকার হয়েছেন! ধর্মের দোহাই দিয়ে কি প্রমাণ করতে চলেছেন তারা!?
কি বলার আছে আর...এ দেশে সিনেমা/ বিনোদন সব বন্ধ করে দেয়া হোক তাহলে !
তাহলে কি আমরা ধরে নেব, আমরা ইমোশনালি ব্যবহার হয়েছিলাম তখন! নাকি এখন হচ্ছি? কোনটা ???
এই দায়ভার কিন্তু আমাদের সবার নিতে হবে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো পরীমণির এই পোষ্টে বেশিরভাগ মানুষই মজা নিচ্ছে। বিদ্রুপ করছে পরীমনিকে। প্রতিবাদের চেয়ে বিদ্রুপের সংখ্যা ভারী। আরও অবাক করা বিষয় হলো প্রায় ৬০ হাজার মন্তব্যকারীদের মধ্যে পরীমণির সতীর্থদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত ছিলো না।
আপনার মতামত লিখুন :