মারা গেছেন ‘আমি বাংলায় গান গাই’খ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বার্ধক্যজনিত কারণে এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত সপ্তাহ থেকে ছিলেন আইসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে। শনিবার সকালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান এই গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
গত জানুয়ারিতে এসএসকেএমে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক কান গলার বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার। ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে গায়কের। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা শোনার পর গত বুধবার সন্ধ্য়ায় এসএসকেএম হাসপাতালে শিল্পীকে দেখতে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারিও হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায় ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গেয়ে শোনান মমতাকে।
তার কণ্ঠে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ আজও মুখে মুখে ফেরে। পাশাপাশি, ‘ডিঙা ভাসাও সাগরে’ও অত্যন্ত পছন্দ অনুরাগীদের। গান গাওয়া, লেখা, সবেতেই নিজের প্রতিভার জাত চিনিয়েছেন।
অন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রবীণ শিল্পী। গত সোমবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় আইটিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তাকে। অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের আলোচিত অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ (১৯৮৮), ‘যেতে হবে’ (১৯৯৪), ‘ওঠো হে’ (১৯৯৪), ‘কুট্টুস কাট্টুস’ (১৯৯৭), ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ (২০০০), ‘তোমাকে দেখেছিলাম’ (২০০০), ‘স্বপনপুরে’ (২০০২), ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’ (২০০৪), ‘হযবরল’ (২০০৪), ‘দুই কানুর উপাখ্যান’ (২০০৫), ‘আঁধার নামে’ (২০০৭)। বাংলাদেশে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সর্বশেষ অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের মার্চে।
আপনার মতামত লিখুন :