ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ডিরেক্টরস গিল্ডে শ্রম ও মেধা ব্যয় করতে চাই

রুহুল আমিন ভূঁইয়া
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম

নন্দিত অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম। নির্মাণেও সিদ্ধহস্ত। এবার কাঁধে নিলেন নেতৃত্বের ভার। ছোট পর্দার নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্বাচনে সভাপতি পদে দুইবারের নেতা সালাউদ্দিন লাভলুকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। গিল্ডের সামনের দিনগুলো কীভাবে সাজাতে চান নবনির্বাচিত এই সভাপতি— সেসব ভাগ করেছেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে। তুলে ধরেছেন রুহুল আমিন ভূঁইয়া 

পরিকল্পনা
প্রথমে ডিরেক্টরস গিল্ডের সকল সদস্যকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমিসহ নির্বাচিত সবার পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাকে যোগ্য মনে করেছে বিধায় এই জয়টা এসেছে। নির্বাচনে হারেনি কেউ, সবাই জয়লাভ করেছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। ডিরেক্টরস গিল্ডে এখন স্থবিরতা বিরাজ করছে। 

এটি কাটিয়ে সংগঠনটিকে গতিশীল করে তুলতে চাই। এটি হবে প্রথম পদক্ষেপ। ডিরেক্টরস গিল্ডে বর্তমানে দুটি সমস্যা রয়েছে। ঐক্য ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। এগুলো ঠিক করা গেলে পরের কাজগুলো সহজ হবে। নির্মাতাদের শুটিংয়ের পরিবেশ, নিরাপত্তা, মর্যাদা নিশ্চিতকরণ—এগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা গিল্ডের প্রধান কাজ।

এক ছাতার নিচে
ডিরেক্টরস গিল্ডের অন্তর্ভুক্ত পরিচালকদের নিরাপত্তা, সহযোগিতা এবং বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা প্রদানে গিল্ড প্রস্তুত। যত প্ল্যাটফর্মে যত পরিচালক আছেন সবাইকে ডিরেক্টরস গিল্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে চেষ্টা করব। এটাই হবে প্রধান কাজ। 

কেননা কোনো নির্মাতা সংকটে পড়লে তার একার পক্ষে কাটিয়ে ওঠা কঠিন। পাশে যদি শক্তিশালী কোনো সংগঠন থাকে তাহলে সবাই মিলে নিরসন করা যায়। বিষয়টি বুঝিয়ে সবাইকে এক ছাতার নিচে আনা গেলে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে। ডিরেক্টরস গিল্ডের সমস্ত সংগঠনের মধ্যমণি হিসেবে থাকা উচিত। 

কেন নেতৃত্বে
আমি একজন অভিনেতা ও নির্মাতা। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ড্রিম ফ্যাক্টরি নামে আমার একটি নির্মাণ সংস্থা ছিল। সেখান থেকে নির্মিত নাটকগুলো দেশের সমস্ত বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। ওই সময় নতুন যে চ্যানেলগুলো এসেছে সেগুলোর প্রত্যেকটির শুরু আমার পরিচালিত নাটক দিয়ে হয়েছে। 

আমার অনেক প্রশংসিত নাটক আছে। তখন অভিনয়, পরিচালনা দুটোই করতাম। আমার হাত ধরে অনেক শিল্পী, কলাকুশলী তৈরি হয়েছেন। আমার যারা সহকারী পরিচালক ছিলেন তারা এখন নামকরা পরিচালক। যে শিল্পীদের নতুন হিসেবে এনেছিলাম তারাও এখন প্রতিষ্ঠিত। ২০১৮-এর পর শুধু অভিনয়ে মনোযোগী হই। 

সে সময় দুই বছরের জন্য অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতির দায়িত্বও পালন করি। তখন সংঘকে সংগঠিত করেছিলাম। ভালো জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে বর্তমানে আমি অভিনয় করি, নির্মাণে সে অর্থে নেই। কিন্তু নির্মাণের অভিজ্ঞতা আছে। সংগঠন চালানোর অভিজ্ঞতা আছে। এই দুটোকে নিয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডে আমার শ্রম ও মেধা ব্যয় করতে চাই। গিল্ডকে একটি ভালো সংগঠনে রূপান্তরিত করতে চাই। 

ভাবনা
নিকট অতীতে শিল্পীদের সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক বা দলীয় দোষে দুষ্ট হতে দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়। একটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অন্যটি দলীয় বিষয়। রাষ্ট্রীয় সমস্ত কার্যক্রমে যে সংগঠনগুলোর সম্পৃক্ততার বিষয় থাকে সেগুলোতে থাকতে হয়। 

তবে সরকারের দলীয় কর্মসূচি নিয়ে যদি কাজ করা হয় তখন সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। এই যে আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করা হলো। আমি বলব এত চড়াই উৎরাই পেরিয়েও অরাজনৈতিক ও নিরপেক্ষ ইমেজ ধরে রাখার ফসল এটি। 

এই ইমেজটা প্রয়োজন। নির্মাতা ও শিল্পীদের প্রত্যেকের মনে রাখা উচিত তাদের কাজটি দেশের সমস্ত জনগণের জন্য। কে কোন রাজনৈতিক মতাদর্শী সেটা বিবেচনায় রেখে তারা নির্মাণ বা অভিনয় করেন না। এখানে নিরপেক্ষতা খুবই জরুরি। ব্যক্তি ইমেজের সঙ্গে অভিনয়ের ইমেজ যেন মিশ্রিত না হয়। ব্যক্তি ইমেজ ও অভিনয় ইমেজ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।

ব্যস্ততা
ঈদে মুক্তিপ্রতীক্ষিত কয়েকটি সিনেমার ডাবিং করছি। এর মধ্যে রয়েছে ‘দাগি’ ও ‘বরবাদ’। অনিমেষ আইচের পরিচালনায় ‘ছোট কাকু’ নামে একটি সিরিজ আছে। ফরিদুর রেজা সগরের লেখা। ঈদে আসবে। 

এছাড়া ‘দেনা পাওনা’ নামে একটি অত্যন্ত সফল ধারাবাহিক প্রচার হচ্ছে। সেটাতে আমি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছি। বেছে বেছে গল্পনির্ভর কাজগুলো করছি। সামনে নির্মাণ নিয়েও পরিকল্পনা আছে।