শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫

দেশেই আত্মগোপনে রিয়াজ!

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ০১:০২ পিএম

দেশেই আত্মগোপনে রিয়াজ!

ফেরদৌস, শেখ হাসিনা ও রিয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ আহমেদ। এক সময়ের ব্যস্ত এই নায়ক কয়েক বছর ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত। পর্দায় না থাকলেও সব জায়গায় ছিল তার সরব উপস্থিতি। রিয়াজ বহু বছর ধরে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন নির্বাচনে দলটির প্রচার-প্রচারণায় সব সময়েই তাকে সামনের সারিতে দেখা গেছে। 

এমনকি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে রেখে বন্ধু ফেরদৌস শেখ হাসিনার মন জয় করে নেন। হয়েছিলেন ঢাকা-১০ আসনের এমপি। যে কারণে মন খারাপ করে বন্ধুর প্রচারণায় অংশ নেননি রিয়াজ।

সরকার পতনের পর থেকেই লাপাত্তা এই নায়ক। গত আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর থেকে দলটির অন্য নেতাকর্মীর মতো লাপাত্তা রিয়াজও। গত আগস্ট তিনি বিদেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে খবর। 

কিন্তু বিমানবন্দর থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়, এমন একটি প্রতিবেদন সে সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয়েছিল। এমনকি নিজের জন্মদিনেও খোঁজ মেলেনি নায়কের।

নায়কের ঘনিষ্ট একটি সূত্র দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিক করে বলেন,রিয়াজ ঢাকাইতে আত্মগোপনে আছেন। নিজ বাসা রেখে এক আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়ে আছেন।’

বিশেষ সূত্রে খবর, রিয়াজ ঢাকাতেই আছেন। তবে প্রকাশ্যে আসছেন না। কারণ, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি দলটির কয়েকজন তারকা সদস্যদের নিয়ে গঠিতআলো আসবেইনামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সরব ছিলেন তিনি। যেখানে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতও যুক্ত ছিলেন।

এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করেন তারকারা এবং আন্দোলন দমাতে কী কী করণীয় সেই দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়। ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন রিয়াজও।

বলা দরকার, রিয়াজ মহা বিতর্কিত এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের শুধু সদস্যই ছিলেন না, একজন অ্যাডমিনও ছিলেন। অর্থাৎ, গ্রুপে কাকে যুক্ত করতে হবে, কাকে ছাটাই করতে হবে—এই ক্ষমতা তার হাতে ছিল। ফলে বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসেন রিয়াজ।

একজন জনপ্রিয় নায়ক হয়ে গণহত্যার পক্ষে তিনি কীভাবে কথা বলেন, গুলি করে শতশত ছাত্র-জনতা হত্যার পরও কীভাবে তিনি চুপ থাকেন—এমন প্রশ্ন ওঠে সর্বত্র। সে সময় তো রিয়াজকে পেলে গণধোলাই দিয়ে পুলিশ দেওয়া হবে—এমন আওয়াজও ওঠে। সার্বিক এই পরিস্থিতি বিবেচনায় রিয়াজ নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে আত্মগোপনে আছেন বলে খবর।

রিয়াজ বিএনপির আমলে ছিলেন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা, আর আওয়ামী লীগ আসার পর হয়ে গেলেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতা। পরিচিতির কারণে খুব সহজেই শেখ হাসিনার নজর কাড়েন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় হতেন সফর সঙ্গী। তার সঙ্গে ছিল চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। রিয়াজ লীগের ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিভিন্ন তদবির বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা!

রূপালী বাংলাদেশ/রুআ

Link copied!