তার শুরুটা মডেলিং দিয়ে। এরপর নাম লেখান টেলিভিশন নাটকে। সাবলীল অভিনয় দিয়ে অল্প দিনেই জয় করে নেন দর্শকহৃদয়। এরপর শুধু এগিয়ে যাওয়ার গল্প। দুই যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে ভেঙে প্রতিবারই গড়ছেন নতুন করে। যে কারণে এখনো তিনি সবার কাছে প্রিয়, একই সঙ্গে ভীষণ জনপ্রিয়; বলছি আব্দুন নূর সজলের কথা। নাটক ছেড়ে সিনেমায় থিতু হয়ে কুড়াচ্ছেন প্রশংসা।
এক সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেতাকে এখন নাটকে কম দেখা যায়। নাটকে আগের মতো দেখা না গেলেও সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। কাজগুলো থেকে পাচ্ছেন প্রশংসাও। সজল সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘১৯৭১: সেইসব দিনগুলো’ সিনেমায় অভিনয় করে হয়েছেন প্রশংসিত। সেই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ঈদে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত ‘জ্বীন’-এর তৃতীয় সিক্যুয়াল ‘জ্বীন ৩’। সিনেমা মুক্তি সামনে রেখে প্রচারণার অংশ হিসেবে মুক্তি পেয়েছে দুটি গান। তার মধ্যে ইমরান-কনার কণ্ঠে ‘কন্যা’ শিরোনামের গানটি দর্শকহৃদয় জয় করে নেয়। সেই সঙ্গে আলাদাভাবে নজর কড়েছেন সজল।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকবি রবিউল ইসলাম জীবনের কাব্যমালায় গানটি অনলাইনে মুক্তির পর থেকেই তুমুল আলোচনায়। অন্তর্জালে ব্যাপকভাবে গানটি ছড়িয়ে গেছে। গানটিতে এক ভিন্ন অবতারে হাজির হয়েছেন অভিনেতা সজল। হরর সিনেমা হলেও গানটির প্রতিটি সিনে চোখে, মুখে তার রোমান্টিকতা প্রকাশ পেয়েছে। গানটির কথা ও পরিবেশের সঙ্গে একেবারে মিলেমিশে একাকার এই অভিনেতা। শুধু তাই নয়, নাচেও কম যাননি সজল। নুসরাত ফারিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমানতালে নেচে দর্শকদের প্রশংসায় ভাসছেন। অল্প সময়েই গানটি নিয়ে সবার এত ভালোবাসা পেয়ে বেশ আপ্লুত সজল। তিনি বলেন, ‘আসলে এত অল্প সময়ে দর্শকদের এত ভালোবাসা পাব তা বুঝতে পারিনি। অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি। গানটি মুক্তির পর ফেসবুকে ঢুকলেই দেখছি ফেসবুক পুরো কন্যাময়। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে আমার সহকর্মীরাও গানটি শেয়ার দিয়েছেন। পাশাপাশি ফোনে, ম্যাসেজে তাদের ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন। গানটি সবাই পছন্দ করবেন, এমন একটা ধারণা ছিল কিন্তু এত বেশি পছন্দ করবেন বুঝতে পারিনি। আমাদের কষ্ট তখনই সার্থক হবে যখন সিনেমাটি সবাই মিলে দলবলে হলে গিয়ে দেখে ভালো-মন্দ মতামত দিবে। এই সিনেমাটাতে এত পরিমাণ টুইস্ট রয়েছে, যা দেখে দর্শকরাও অবাক হবেন। এখন সেই টুইস্টটা কী জানতে হলে সিনেমা দেখতে হবে।’

যোগ করে এই অভিনেতা বলেন, ‘এবারের গল্পটা একটু আলাদা, তাই পরিশ্রমের মাত্রাটাও ছিল অতিরিক্ত। প্রত্যেকটা শিল্পী অনেক এফোর্ট দিয়ে কাজটি করেছেন। কোনো ঘুম নেই, বিরতি নেই। সবাই যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন কাজটার জন্য। অবশেষে কাজটা যখন সামনে আসছে তখন সত্যি ভালো লাগছে, যখন দর্শকরা প্রকাশ্যে আসা কনটেন্টগুলো দেখে প্রশংসা করছেন তখন মনে হচ্ছে যে, কষ্ট কিছুটা হলেও কাজে দিয়েছে।’
এবারের ঈদে বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে বড় তারকা শাকিব খানের জোড়া সিনেমা। তবে কোনো চাপ অনুভব করছেন না সজল। তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদে অনেকগুলো ভালো সিনেমা আসছে। আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ এবং শাকিব ভাই (শাকিব খান) প্রত্যেকেই আমার ভীষণ প্রিয়। তাদের সিনেমার টিজারগুলো দেখেছি, আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, একটা জমজমাট ঈদ। আমি তাদের তিনটা সিনেমাই দেখতে যাব। আমাদের ‘জ্বীন ৩’-এর কনটেন্ট এখন পর্যন্ত যা এসেছে, দর্শকদের রেসপন্সে আমি অনেক খুশি। আমরা সবাই চাই যেন আমাদের সবার কাজগুলো ভালো যাক। এখানে তো দোষের কিছু নেই। প্রত্যেকের কাজের পেছনেই কিন্তু একটা এফোর্ট থাকে। সেই জায়গা থেকে চেষ্টা, সবার প্রজেক্ট আসুক এবং সেগুলো ভালো চলুক। দর্শকরা ঘুরেফিরে সবগুলো সিনেমা দেখুক, এটাই চাই।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে মুক্তি পায় ‘জ্বীন’। সেটির সাফল্যে পরের বছর আসে এর দ্বিতীয় কিস্তি ‘মোনা: জ্বীন-২’। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ঈদুল ফিতরে আসছে ‘জ্বীন ৩’। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন কামরুজ্জামান রোমান।