শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম

সিনেমার পর্দা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ভারতের দেশপ্রেম

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম

সিনেমার পর্দা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ভারতের দেশপ্রেম

‘গ্রাউন্ড জিরো’ চলচ্চিত্রে বলিউড তারকা ইমরান হাশমি। ছবি: সংগৃহীত

সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত দেশাত্মবোধক বলিউড ছবি ‘গ্রাউন্ড জিরো’ দেখে বুঝতে কষ্ট হয় না— বলিউড আজকাল সিনেমার রণক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদকে রসদ বানিয়ে গর্জে ওঠে। অথচ বাস্তব রণক্ষেত্রে তাদের অস্তিত্ব প্রায় ‘জিরো’।

ইমরান হাশমির নতুন রূপ দেখাতে গিয়ে দর্শকরা তর্জনী উঁচু করেছেন, যে, পর্দার দেশপ্রেম যেন রীতিমতো ‘প্যাট্রিয়টিজম ওভারডোজ’।  

বিএসএফ কমান্ড্যান্ট নরেন্দ্রনাথ ধর দুবের ভূমিকায় ইমরান হাশমি বলিউডি রণক্ষেত্রে নামার চেষ্টা করেছেন বটে, কিন্তু যুদ্ধে জয়টা যে কেবল সিনেমার পর্দাতেই সম্ভব— সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে ‘গ্রাউন্ড জিরো’র প্রথম দিনের আয়: মাত্র ৩৭ লাখ রুপি।

দেশজুড়ে যেখানে শো বাতিল হচ্ছে দর্শকের অভাবে, সেখানে প্রশ্ন উঠছে— দেশপ্রেম কি কেবল থিয়েটারের স্ক্রিপ্টেই দাপট দেখায়?

চিত্রনাট্যের কেন্দ্রবিন্দু ২০০১ সালের পার্লামেন্ট ও অক্ষরধাম হামলার মূল চক্রী ঘাজি বাবা। বাস্তবের ভরকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে কল্পনার উড়ান! পরিচালক তেজস প্রভা বিজয় দেওস্কর জানিয়েছেন— ঘাজি বাবা নামটা উপত্যকায় ছিল আতঙ্কের প্রতীক, আর এ আতঙ্ককে টেনে এনে আট বছরের মিশনের গল্প সাজানো হয়েছে রঙিন ফ্রেমে। সমস্যা একটাই— এ ফ্রেমে শুধু জাতীয়তাবাদ, বাস্তব নেই।  

ইমরান হাশমি নিজেই স্বীকার করেছেন— ‘বেশি উগ্র জাতীয়তাবাদ যেন ছবিকে ঢেকে না ফেলে’, অথচ ছবির পুরো নির্মাণটাই যেন সেই জাতীয়তাবাদের ঢাকঢাক গুড়গুড়।

এমনকি কিছু দর্শক টুইটারে লিখেছেন, ‘এ সিনেমা যেন বাস্তবতাকে থাপ্পড় মারল’— কিন্তু বক্স অফিসে থাপ্পড়টা যেন ফিরল উল্টো দিক থেকেই।  

কাশ্মীরের পেহেলগামে সদ্য ঘটে যাওয়া হামলার আবহে ছবির সময় আর প্রেক্ষাপট এমনই সংবেদনশীল ছিল যে, সিনেমার পর্দা আর বাস্তব জীবন গুলিয়ে গেছে। আর এতেই সিনেমা হারিয়েছে বিশ্বাসযোগ্যতা।  

হ্যাঁ, ৩৮ বছর পর শ্রীনগরে কোনো হিন্দি সিনেমার প্রিমিয়ার নিশ্চয়ই ঐতিহাসিক ঘটনা। নির্মাতারা এটিকে বলছেন যুদ্ধক্ষেত্রে শ্রদ্ধার্ঘ্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে— এ শ্রদ্ধা কি সত্যিই সেই মাটিকে জানানো, না কি শুধুই আত্মপ্রচারের এক অভিনব কৌশল?

প্রসঙ্গত, ভারতীয় সিনেমার মধ্যে আজকাল দেশপ্রেম আর জাতীয়তাবাদ যেন এক ধরনের সস্তা পণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাঠান, টাইগার ফ্র্যাঞ্চাইজ, ওয়ার, অক্ষয় কুমারের বেশির ভাগ সাম্প্রতিক সিনেমা, সিংঘাম,  টাইগার শ্রফের বাঘি ৩ ইত্যাদি চলচ্চিত্রে দেশপ্রেমের যে মেসেজ দেওয়া হচ্ছে, তা অনেকটা কমার্শিয়াল ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের মতো।

ছবির পর্দায় সবই এক বড় যুদ্ধ, দেশকে বাঁচানোর গল্প, কিন্তু বাস্তবে এদের থেকে আসল পরিবর্তন কোথাও নেই।  

উপরন্তু ‘ঘার মে ঘুসকে মারেঙ্গে’, ‘কারো ইয়া মারো’, ‘তুম দুধ মাঙ্গো হাম ক্ষীর দেঙ্গে, তুম কাস্মির মাঙ্গো হাম চীর দেঙ্গে’ কিংবা ‘ভারত সে পাঙ্গা পড়েগা মেহেঙ্গা’, ‘যাহা হাত ডালতে হ্যায় উয়াহা ফাড় ডালতে হ্যায়’—এ ধরনের উগ্র ও কুরুচিপূর্ণ ডায়লগগুলো সিনেমার একটা বড় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর সেটা জাতীয়তাবাদের নামে উগ্র দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে।  

এত অ্যাকশন, এত বড় বড় ডায়লগ, কিন্তু পর্দায় দেশপ্রেমের এ ছবি বাস্তবে কখনোই সফলতা লাভ করে না। ছবির শেষে সবকিছু ঝকঝকে, কিন্তু আসলে দেশের জন্য কিছু হয় না। সিনেমাগুলো যেন শুধুই বক্স অফিসের জন্য, লাভের জন্য তৈরি। যেখানে দেশপ্রেমের নামে বিক্রি হচ্ছে সস্তা ফর্মুলা।  

সবশেষে এটুকুই বলা যায়— ভারত চাইলে বলিউড দিয়ে বিশ্ব জয় করতে পারে, কিন্তু বাস্তবে সেই লড়াইয়ে নামলেই বোঝা যায়, ‘গ্রাউন্ড জিরো’র পায়ের নিচের গ্রাউন্ড আসলেই জিরো। রঙিন পর্দায় হিরোইজম, কিন্তু জীবনের সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখছে ব্যর্থতার কালিক মুখ।

আরবি/নক

Link copied!