ঢাকা শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

সবাই গায়ের ওপর উঠে পড়ে: স্বস্তিকা

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম
টালিউড সেন্সেশন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

‘দুর্গাপুর জংশন’-এর মতো থ্রিলার ঘরানার ছবিতে সাংবাদিকের ভূমিকায় অভিনয় করতে গিয়ে বাস্তব সাংবাদিকতা নিয়েই অসন্তোষের সুরে মুখ খুলেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তবে পর্দার বাইরেও তিনি যেন আরও বড়সড় এক অনুসন্ধানী! নিজের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার প্রিমিয়ারে অনুপস্থিত থেকেও বুকে ঝড় বয়ে এনেছেন। 

এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, আর কোনো ছবির প্রিমিয়ারে তিনি যাবেন না। নিজেরটা হোক কিংবা অন্যের, সব প্রিমিয়ারে ‘না’ বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কারণ? তার ভাষায়—‘সবাই গায়ের ওপর উঠে পড়ে!’

এই অভিমান শুধু দর্শক বা পাপারাজ্জিদের নয়, বরং পুরো প্রিমিয়ার সংস্কৃতি নিয়েই। স্বস্তিকা লিখেছেন, ‘ছবির প্রিমিয়ারে সাধারণত কলাকুশলীদের ডাকা হয় না। যাঁরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করেন, তাঁদের মূল্য দেওয়া হয় না।’ 

তিনি স্মরণ করেছেন তার বাবার সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখার দিনগুলোর কথা—‘টগরি’ ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে নবীনা হলে গিয়ে দেখেছেন, কেবল মুখচেনা তারকারা নয়, সেখানে কস্টিউম আয়রন করা লোকটাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর আজ? ‘সব কিছু এখন শুধুই দেখনদারি।’

তবে তার ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ইউটিউবার, ইনফ্লুয়েন্সার ও ভ্লগাররা। তিনি লিখেছেন, ‘এখন কারা সাংবাদিক আর কারা ভ্লগার বোঝার উপায় নেই। মোবাইল হাতে সবাই চড়াও হচ্ছে। পারলে নাকের ফুটোর মধ্যেও ক্যামেরা গুঁজে দিতে দ্বিধা করে না কেউ।’ 

এমনকি এক অনুষ্ঠানে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছেন স্বস্তিকা নিজেই—‘আমার ছবি তুলতে গিয়ে একজন আমাকেই ধাক্কা মেরে ফেলে দিল। এত ঠেলাঠেলি পোষায় না। আমি দেহরক্ষী নিয়ে ঘোরার মানুষ নই।’

তিনি এক প্রকার হাল ছেড়েই দিয়েছেন—‘নিজের ছবি দেখতে যদি বডিগার্ড নিয়ে যেতে হয়, তাহলে আমি যাব না। পরেও টিকিট কেটে দেখে নেব।’ তাই তার স্পষ্ট অনুরোধ—‘দয়া করে আমায় আর কোনো প্রিমিয়ারে ডাকবেন না। না বলতে পারি না, হাসিমুখে হ্যাঁ বলে ফেলি। তাই আগেভাগেই জানিয়ে দিচ্ছি।’

এই উপলক্ষে এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকতার বর্তমান হাল নিয়েও নিজের বক্তব্য রাখেন স্বস্তিকা। তার ভাষায়—‘সবাই এখন ব্রেকিং নিউজের পেছনে দৌড়চ্ছে। ফ্যাক্ট চেক করার সময় নেই কারও। নেতিবাচক কিছু হলে সেটাই ভাইরাল হয় বেশি। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।’

স্বস্তিকার এই বক্তব্য যেন তার নতুন সিনেমার চরিত্রের সঙ্গেই মেলে। ‘দুর্গাপুর জংশন’-এ তিনি একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক, যে ঝুঁকি নিয়ে খোঁজ করে সত্যের। বাস্তবেও যেন সে ভূমিকাতেই অবতীর্ণ স্বস্তিকা। শুধু পার্থক্য—সেখানে ক্যামেরার সামনে, আর এখানে ক্যামেরার আক্রমণেই অতিষ্ঠ হয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।