দুই বছর আগে শুরু হওয়া কাজের পারিশ্রমিক এখনও পরিশোধ করা হয়নি—পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন অভিনেত্রী আইশা খান। সোমবার রাতে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি জানান এই অভিনেত্রী।
নিজের ফেসবুকে আবু হায়াতের বিরুদ্ধে বকেয়া টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ আনেন আইশা। তাকে মেনশন করে লেখেন, ‘আপনার ভাষ্যমতে আমি যদি একজন লক্ষ্মী শিল্পী-ই হয়ে থাকি, তাহলে ২ বছর আগে শুরু হওয়া কাজের রেমুনারেশন (পারিশ্রমিক) আমাকে দিতে এত অপেক্ষা করাচ্ছেন কেন আবু হায়াত মাহমুদ ভূঁইয়া ভাইয়া?’
এরপর লেখেন, ‘DeeptoPlay, আপনারা কেন পরিচালকের থেকে প্রতিটি শিল্পীর সাইন করা NOC (অনাপত্তি পত্র) আগে সংগ্রহ করে পুরো কাজের বিল তাকে পরিশোধ করেন না? দীপ্ত প্লের কর্মকর্তা সাইফুর রহমান সুজনকে মেনশন করে অভিনেত্রী লেখেন, ‘আপনি কি জানেন ভাইয়া আপনার কাছ থেকে পুরো পারিশ্রমিক পাওয়ার পরও হায়াত ভাইয়া আমার বকেয়া পারিশ্রমিক শোধ করেননি?
আইশা লেখেন, ‘এই কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট আমার প্রতিটি সিনিয়র সহশিল্পী তাদের রেমুনারেশন পেয়েছেন। তাহলে আপনার সেটে, আপনাকে কাজে সহযোগিতা করার পরেও আমার সাথে এই বৈষম্যমূলক আচরণ কেন হায়াত ভাইয়া?’
সবশেষে লেখেন, ‘আপনাকে গত সপ্তাহে অভিমানের সাথে অনুরোধ করে করা খুদেবার্তা কি এতটাই অগ্রহণযোগ্য যে আপনি/ আপনার টিমের কেউ আমাকে কোনো কিছু বলারও প্রয়োজন মনে করলেন না? না কি এখনও অসুস্থতা অথবা কাজের দোহাই দিয়ে যাবেন বিগত ১০ মাসের মতো?’
বিষয়টি নিয়ে আইশা বলেন, ‘আমি পোস্ট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উনি (আবু হায়াত মাহমুদ ভূঁইয়া) আমাকে কল দেন। কিন্তু আমি খুব আপসেট ছিলাম। কারণ কষ্ট বেশি না পেলে এ ধরনের পোস্ট দিতাম না। সেখানে দুই বছর হয়ে গেছে এবং গত আট মাস ধরে তিনি একই অজুহাত দিচ্ছেন। তার পরিবারের সদস্য অসুস্থ, হাতে টাকা নেই, শুটিং চলছে সামনে মাসে টাকা এলেই আমাকে দিয়ে দেবেন—বিষয়গুলো গত দশ মাস ধরে শুনছি। আর শুনতে চাচ্ছিলাম না। এজন্য ফোনটা ধরিনি। এর পাঁচ মিনিট পর দেখি উনি আমাকে ‘থ্যাঙ্কস’ লিখে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন।’
অভিনেত্রীর কথায়, ‘এটি দীপ্ত প্লের একটি সিরিজের কাজ ছিল। ২০২২ সালের অক্টোবর কিংবা নভেম্বরে সম্ভবত শুটিং শুরু হয়। ২৬ পর্বের কাজ ছিল। মাসে দেখা যেত একদিন করে শুটে যেতে হয়েছে আমাকে। প্রথম দুটি বিল উনি আমাকে সঙ্গে সঙ্গে দিয়েছেন। এরপর থেকে দেরি করে দিতেন। সবশেষ এ বছরের কোরবানি ঈদে বিল দেন। ওনার শ্বশুর তখন অসুস্থ ছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। আমার এক লাখের ওপরে বকেয়া ছিল। যেহেতু ঈদ মৌসুম সেহেতু ওনার কাছে আমি পারিশ্রমিক চাই। উনি আমাকে ৫০ হাজার দেন। এখনও সাড়েও ৬২ হাজার বাকি। ঈদের পর থেকেই টাকাটা নিয়ে ঘুরাচ্ছেন। ফোন দিলেই নানা অজুহাত দেন। গতকাল পোস্ট দেওয়ার পর অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা জানান, উনি (আবু হায়াত মাহমুদ) এরকমই। পারিশ্রমিক দেন না ঠিকমতো। কেউ কেউ আশাও ছেড়ে দিয়েছেন ঘুরতে ঘুরতে।’
এদিকে প্রযোজনা সংস্থা থেকে পারিশ্রমিকের পুরোটাই পরিচালককে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে আইশা বলেন, দীপ্ত প্লের কর্মকর্তা সুজন ভাই আমাকে বললেন, আর্টিস্ট পছন্দ করা ছাড়া সিরিজটির কোনো কিছুতে তারা হস্তক্ষেপ করেননি। পরিচালকের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন। সবার পারিশ্রমিকও বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা। আমিও বিষয়টি পোস্টে উল্লেখ করেছি। প্রযোজনা সংস্থা অভিনয়শিল্পীদের পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দেওয়ার পরও পরিচালক আমাকে পারিশ্রমিক দিচ্ছেন না।’
সবশেষে আইশার প্রশ্ন, ‘আমার কথা হচ্ছে একজন শিল্পীকে এসব বিষয় নিয়ে ভুগতে হবে কেন?’ সে উত্তর খুঁজতে আবু হায়াত মাহমুদের সঙ্গে মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠালেও আসেনি কোনো উত্তর।
আপনার মতামত লিখুন :