ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের শিকার নির্মাতা মাহিন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৪, ১২:৩৭ পিএম

আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের শিকার নির্মাতা মাহিন

নির্মাতা মাহিন আওলাদ। ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়মকে করা হয়েছে নিয়ম। হাসিনা সরকারের নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি শোবিজ কর্মীরাও। নানা ভাবে এ অঙ্গনের মানুষদের ভুগতে হয়েছে। ২০১৩ সালে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন নির্মাতা মাহিন আওলাদ।

দীর্ঘ ১৭ বছরে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া আওয়ামী লীগের নৃশংস বর্বরতার এমনই একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাগ করেছেন সংগীতশিল্পী ও সুরকার সুজন আরিফ। তিনি লেখেন, ২০১৩ সাল, সময় দুপুর ১টা। আমার এক কাছের ছোট ভাই মাহিন আওলাদ যাকে এখন আপনারা দেশের একজন গুণী নির্মাতা হিসেহে চিনেন অনেকেই। তার সাথে ছিল আরেক ছোট ভাই নোয়েল। স্টুডিও থেকে মগবাজার প্যানেলের দিকে যাচ্ছিল ওরা। সিদ্ধেশ্বরী কলেজের সামনে যেতেই ওদেরকে তৎকালীন কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা বাইকের গতিরোধ করে। তারপর বলে, তোরা কটটেল মারলি কেন?

ওরা তখন তাদেরকে ওদের হাতে থাকা হার্ডডিস্ক দেখিয়ে বলে, আমরা মিডিয়ায় কাজ করি। এই হার্ডডিস্কে শুটিং-এর ফুটেজ আছে। এডিটিং করার জন্য প্যানেলে যাচ্ছি। আমারা মিডিয়ায় কাজ করি, ককটেল কেন মারব। কিন্তু ওদের কথা কেউ শুনতে চায় না। ওদের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে ওরা দু’জন অনেক অনুনয়-বিনয় করতে থাকে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ওদের আর কোন প্রকার কথা বলতে না দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কলেজের ভিতরে নিয়ে গিয়ে বেধরক মারধর করে। পুলিশ ও ছাত্রলীগের সাথে সামিল হয়ে তাদেরকে নৃসংশভাবে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদেরকে রমনা থানায় নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় নির্মমভাবে টর্চার করে।

পরে তারা পুলিশের কাছে অনেক অনুরোধ করে বলে, তারা একটা ফোন করতে চায়, অনেক বলার পর পুলিশ রাজি হয়। মাহিন ফোন করে আমাকে পুরো বিষয়টা জানায়। এরপর আমি, ইশতিয়াক, তানভীন রফিক, আমাদের বাড়িওয়ালা তাহের ভাইসহ কয়েকজন ছুটে রমনা থানায় যাই। ওদেরকে দেখ ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাই। মাহিনের অবস্থা ছিল বেশি খারাপ। মানুষ মানুষের প্রতি এমন র্নিমম হতে পারে, ওদেরকে দেখে সেদিন বুঝেছিলাম। অনেক দেন-দরবারের পর ওদেরকে থানা থেকে নিয়ে আসতে সক্ষম হই।

থানা থেকে বের হয়ে মাহিন আক্ষেপের সুরে একটা কথা বলেছিল যেই কথা আজ কানে খুব বাজছে। ও বলেছিল ‘ভাই এরা দেশের সাধারণ মানুষকে, মানুষ হিসেবেই মনে করে না। আজ আমার উপর যে অন্যায় হলো, আমার মন থেকে বদ দোয়া ওদের প্রতি আসলো জাস্ট এই কারণেই একদিন ওদের দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।’

টানা তিনটা মাস মাহিন যে মানবেতর জীবন যাপন করেছে তা আমি দেখেছি। একটা ট্রমার মধ্যে ছিল ছেলেটা। আজও সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে সে। শুধু মাহিন না, এই স্বাধীন দেশের প্রতিটি ঘরে খোঁজ নিয়ে দেখেন, এমন আর্তনাদ, হাহাকার আর আক্ষেপের একজন করে পাবেন।

তবে সেই ঘটনায় ছাত্রলীগের কোন নেতারা ছিলেন তা জানা যায়নি। তবে বিষয়টি সঠিক বলে জানান নির্মাতা মাহিন। বলে রাখা ভালো, এ সময়ের তরুণ নির্মাতা মাহিন আওলাদ। এরই মধ্যে বেশকিছু মিউজিক ভিডিও ও নাটক দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। নির্মাণ নিয়েই তার সব ব্যস্ততা।

রূপালী বাংলাদেশ/রুআ

Link copied!