সম্প্রতি চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালাগালাজ ও হুমকির অভিযোগ আনেন এক নারী সাংবাদিক। গেল বুধবার দু’জনের কথোপকথনের সাড়ে ছয় মিনিটের একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে আসে। যেখানে একপাশে কথা বলছিলেন সাংবাদিক মেহনাজ খান এবং অপর পাশে পরীমণি। ঘটনার তিন দিনের মাথায় নিজের ভুল বুঝতে পেরে তৃতীয় পক্ষকে দোষারোপ করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জানিয়ে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই নারী সাংবাদিক।
ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘সাংবাদিক ও শোবিজের তারকারা একে অপরের পরিপূরক। সম্প্রতি আমার আর চিত্রনায়িকা পরীমণির মাঝে ঘটে যাওয়া বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। বলতে গেলে ভুল বোঝাবুঝির জন্য এমন একটি বিষয় হয়েছে। তবে এটাও সত্য যে, এই সময় অনেকে আমাকে মিস গাইড করেছেন। তৃতীয় পক্ষ বা সুযোগ-সন্ধানী অনেকেই এই সময় আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছেন। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করেছে। তাই বিষয়টা এতদূর গড়িয়েছে। দুজন দুজনকে রেসপেক্টর জায়গা থেকে চিন্তা করে, আমিও আমার দুঃখ প্রকাশ করছি। পরী একজন মা হিসেবে অসাধারণ ভূমিকা পালন করছেন। তাও সবার জানা আছে।’
দ্বন্দ্বের মিটমাট জানিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা তো মানুষ, আর ভুল তো আমাদেরই হয়। কিন্তু কারো জন্য পৌষ মাস কারো জন্য সর্বনাশ। এটা এতদূর গড়াবে সেটা আমিও জানতাম না। আর যারা আমার পাশে ছিলেন এবং ভালো পরামর্শ দিয়েছিলেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। যা হওয়ার হয়েছে, এ বিষয়টি এখানে শেষ করছি।’
ঘটনার সূত্রপাত একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে। নিজের পোষাপ্রাণীর (কুকুর, যার নাম পুটু) প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন পরীমণি। পোস্টে নিজ সন্তান রাজ্যের আগমনের পর তাকে সময় দিতে গিয়ে পুটুর সাথে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেকথা জানান তিনি। সন্তান আসার পর নিতান্তই পুটুকে আগের মতো সময় দিতে পারছিলেন না অভিনেত্রী। এক পর্যায়ে সন্তানের সাথে পোষাপ্রাণীর বন্ধুত্ব তৈরির চেষ্টার কথাও লেখেন।
সেই স্ট্যাটাস ঘিরে প্রথম সারির একটি গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল, ‘বড় একটা ভুল করে অনুশোচনায় ভুগছি: পরীমণি’। পরবর্তীতে বিনোদন সাংবাদিক মেহনাজ খান সেই নিউজ কার্ডটি শেয়ার করেন। তবে শেয়ার করার সময় ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ইনজেনারেল —আর কি? এমন মানুষকে বিশ্বাস করা যার মাশুল বাচ্চারও দিতে হয়।’
ক্যাপশনে আপত্তি জানান পরীমণি। প্রথমে সাংবাদিক মেহনাজ খানের সেই পোস্টে নিজের ব্যক্তিগত আইডি দিয়ে মন্তব্য করে বলেন, ‘তার শেয়ার করা ক্যাপশনটি তিনি বোঝেন নি।’ উত্তরে মেহনাজ খান নায়িকাকে বলেন, ‘আপনাকে মিন করে কিছুই লিখিনি। আমি আমার বিষয় এবং আমার সন্তানের পরিস্থিতি নিয়ে লিখেছি।’
পরবর্তীতে দুজনের মধ্যে ফোনে কথা হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে মেহনাজ বলেন, ‘তিনি বিনোদন সাংবাদিক সবাই তাকে চেনে। তিনি কখনও সন্তান নিয়ে লিখবেন না। বলেন, আপনি (পরীমনি) যেমন আপনার বাচ্চা নিয়ে সচেতন, আমিও আমার বাচ্চা নিয়ে সচেতন।’
লম্বা সময় কথার একপর্যায়ে পরীমণিকে বলেন, ‘আপনি রাজ ভাইকে (পরীমণির সাবেক স্বামী) মিন করে লিখেছেন। তখন হাসতে হাসতে পরী তার কথা বলার জন্য দুই মিনিট সময় চান। উত্তরে মেহনাজ সময় দেবেন না জানালে, তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি। তার পরের ঘটনা কারো অজানা নয়।
ওই বিনোদন সাংবাদিক পরবর্তীতে তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে ঘটনাটি জানান। অবশ্য, তিনি ফেসবুকে পরীমণির শুধু গালাগালির অংশটুকু প্রকাশ করেছেন। পরবর্তীতে স্যোশাল মিডিয়ায় পুরো অডিও ক্লিপসটি প্রকাশ পেলে, মূল ঘটনাটি জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে ওই নারী সাংবাদিক একাধিক স্ট্যাটাস দিলেও পুরো সময়জুড়ে নীরব ছিলেন পরীমণি।
বর্তমানে দুই সন্তানকে ঘিরেই পরীমণির সব ব্যস্ততা। তার অভিনীত নির্মাণাধীন ও মুক্তির অপেক্ষায় ওয়েব সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’, কলকাতার প্রথম সিনেমা ‘ফেলুবক্সী’ এবং অনুদানের ‘ডোডোর গল্প’ সিনেমাগুলো। চলতি বছরই সিরিজ ও সিনেমাগুলি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :