ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিপুণের গোপন খবর জানালেন সাবেক স্বামী

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম

নিপুণের গোপন খবর জানালেন সাবেক স্বামী

নিপুণ আক্তার । ছবি: সংগৃহীত

ঢালিউডের বিতর্কিত চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ক্যারিয়ারে সেভাবে ব্যবসা সফল সিনেমা না থাকলেও করছেন রাজকীয় জীবন-যাপন। মূলত শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছত্রছায়ায় নিপুণ হয়ে উঠেন অপ্রতিরোধ্য। এমন অভিযোগ এই নায়িকার বিরুদ্ধে। বিষয়টি চলচ্চিত্র পাড়ায় ছিল ওপেন সিক্রেট। এমনকি সহকর্মীদের মধ্যেও চলত রসালো গল্প। তবে মাথার ওপর শেখ পরিবারের সদস্য সেলিমের ছাতা থাকায় কেউ টু শব্দ করতে পারেননি। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিপুণ হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। অপরাগতা যেন তার ডিকশনারিতে ছিলই না। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন, সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে আইন মন্ত্রণালয়। সর্বত্রই ছিল তার দৌড়।

শেখ সেলিমের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় গড়ে তুলেন সম্পদের পাহাড়। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে অভিজাত এলাকা বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে নিপুণ গড়ে তোলেন প্রসাধনী ও লাইফ-স্টাইল কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান ‘টিউলিপ নেইলস অ্যান্ড স্পা’। সাধারণত শেখ সেলিমের মতো নেতা পার্লার উদ্বোধন করার কথা না হলেও নিপুণের এই পার্লারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন তিনি। কথিত রয়েছে, এই পার্লারটি তাকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন শেখ সেলিম। তবে শেখ হাসিনা সরকার দেশত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে খবর রয়েছে শেখ সেলিমের সঙ্গে লাপাত্তা নিপুণও। বর্তমানে বন্ধ রয়েছেন তার পার্লারটি। সরেজমিনে দেখা যায়, সরকার পতনের পর থেকেই বন্ধ নিপুণের পার্লার। খোঁজ মিলছে না নিুপণেরও। শোনা যাচ্ছে, চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে ‘টিউলিপ নেইলস অ্যান্ড স্পা’। যদিও এ নিয়ে একাধিকবার নিপুণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে বেশকিছু দিন ধরে।

২০২২ সালের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। ওই নির্বাচনে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাথমিক ভোট গণনায় জায়েদ খান জয়ী হন। কিন্তু ফলাফল মেনে নেননি সাধারণ সম্পাদক পদে পরাজিত প্রার্থী নিপুণ আক্তার। এর জন্য আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি। পরে আদালতের নির্দেশে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসেন এই চিত্রনায়িকা। বলা যায়, অনেকটা জোর খাটিয়ে আসনটি বাগিয়ে নেন তিনি। এমনকি নিপুণকে জয়ী করতে ১৭ বার ফোনও করেন শেখ সেলিম। এ কথা জানিয়েছেন সে সময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন নিজেই। এতদিন শেখ সেলিমের ভয়ে মুখ না খুলতে সরকার পতনের পর এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।

এমনকি নিপুণের প্রতি দুর্বলতা এতটাই ছিল যে, তার সঙ্গে শেখ সেলিম সিনেমায় অভিনয় করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এমনটি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন নিপুণ নিজেই। শেখ সেলিম ও নিপুণের ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ ছিল ওপেন সিক্রেট। এই বার্তা পৌঁছে যায় শেখ সেলিমের পরিবারের সদস্যদের কাছেও। যে কারণে শেষ পর্যন্ত সিনেমাটি আর করা হয়নি। তবে সিনেমা না করলেও এফডিসিতে নিপুণকে বিশাল প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দিয়েছিলেন শেখ সেলিম। সেই প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনে হেরেও সাধারণ সম্পাদক পদে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেছেন।

নায়িকা নিপুণ আক্তারের পুরো নাম নাসরিন আক্তার নিপুণ। তার ২০০৬ সালে চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু হয়। তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র এফ আই মানিক পরিচালিত ‘পিতার আসন’। নিপুণের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বরুরা উপজেলার জালগাঁও। তার পিতা মনসুর আলী। ১৯৯৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের পর রাশিয়া চলে যান তিনি। মস্কো থেকে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ২০০১ সালে সেখানে নিপুণ বিয়ে করেন কুমিল্লা শ্মশানগাছার সন্তান মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন অপু নামে এক ব্যবসায়ীকে। অপুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একমাত্র সন্তান তানিসা হোসেনকে নিয়ে ঢাকাতেই বসবাস করতেন।

কিন্তু নিপুণের বাধার কারণে কোনোভাবেই মেয়ে তানিসা হোসেনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান না অপু। কথাও বলতে পারেন না। এ বিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন অপু গণমাধ্যমকে জানান, নিপুণ সবসময় শেখ সেলিমের ভয় দেখাতেন। যখনই মেয়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছেন, তখনই প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে। অপু বলেন, নিপুণ মূলত শেখ সেলিমের রক্ষিতা। এসব কারণে ২০০৩ সালে নিপুণ আমাকে ছেড়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আমি তাকে ডিভোর্স দেই। নিপুণ তার কাছ থেকে ১০০ ভরি স্বর্ণসহ বিপুল ডলার নিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!