ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিক্ষোভের মুখে পড়লেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ১২:৪১ পিএম

বিক্ষোভের মুখে পড়লেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা

ছবি: সংগৃহীত

জনরোষের মুখে পড়েন টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর কাণ্ডের পর রাত দখল কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের কাছে এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি। এদিন ঋতুপর্ণার গাড়ি থেকে নামতেই শোনা যায় ‘গো ব্যাক…গো ব্যাক’ স্লোগান। তারপরও তিনি প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ঋতুপর্ণা এসেছেন শুনেই চিৎকার করে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। কালো কাঁচের গাড়িতে গিয়ে তারা ধাক্কা মারতে থাকেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দ্রুত অভিনেত্রীকে গাড়িতে তোলেন দেহরক্ষীরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে  রীতিমতো পালিয়ে বাঁচেন এই তারকা।

স্থানীয় সময় বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতের এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন ঋতুপর্ণা। কলম তুলে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে লিখেছেন, কেন এমন কিছুর সাক্ষি হতে হলো তাকে?

ঋতুপর্ণা লেখেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়ার জন্য সুবিচার চেয়ে ৪ অগস্ট শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের প্রতিবাদী জমায়েতে উপস্থিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এত মানুষের প্রতিবাদ বৃথা যাবে না। আমিও সুবিচারের আশায় রয়েছি। জমায়েতে যোগ দিয়ে মোমবাতি জ্বালাই। কিন্তু, কিছুক্ষণের মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা। আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লাম। আমার উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন অনেকে। চারপাশ থেকে উলুধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ। তবে এতে কিছু মনে করেছি, এমন নয়। কিন্তু, তারপর গাড়িতে জুতা ছোড়া হল। তখন আমি দরজা খুলে বলি আপনারা এমন করবেন না। আপনাদের সঙ্গে কথা বলতেই এসেছি, বসতে এসেছি। কিন্তু কেউ কোনও কথাই শুনলেন না। আসলে আমার মনে হয়, কিছু মানুষ প্রতিবাদের কথা মাথায় না রেখে, হুজুগে চলে গিয়েছিলেন জমায়েতে।

অভিনেত্রী লেখেন, বুঝতে পারছি, সকলেই ক্ষুব্ধ। তবে, কলকাতার প্রতিবাদী চেহারার মধ্যে এই চেহারাটা দেখে আমি লজ্জিত, আহত, কম্পিত। বুধবার রাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত। আমি একজন অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে, একজন মহিলা হিসেবে অন্য মহিলার পাশে দাঁড়াতে এসেছিলাম। কিন্তু বিরাট সংখ্যক কিছু মদ্যপ এই ঘটনা ঘটাল। আচমকাই একটা জনস্রোত ধাক্কা দিতে শুরু করল। এত চিৎকার হচ্ছিল যে, কারও কোনও কথা শুনতে পাচ্ছিলাম না। অভিনেত্রীর কথায়, আমি তো কাল কোনও তারকা হিসেবে নয়, মানুষ হিসাবে গিয়েছিলাম। যেখানে ঘটনাটা ঘটল সেখানে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মাও এসেছিলেন। ভেবেছিলাম একবার দেখা করব তাদের সঙ্গে। বলতাম, এই লড়াইয়ের সঙ্গে আমিও আছি। কিন্তু সেটা আর হলো কই? তবে এই ঘটনার পর আমি থেমে যাব, এমন নয়। আমার মনের মধ্যে প্রতিবাদ থাকবে। আমিও একইভাবে সুবিচার চাইব। সেটা থামবে না। ঋতুপর্ণা আরও লেখেন, আমি প্রশ্ন করতে চাই আমার সমবেদনা জানানো কি অন্যায়? একটি মেয়ের হয়ে তারা আন্দোলন করছেন আর অন্য একজন নারীকেই হেনস্থার শিকার হতে হলো! হয়তো এই মানসিকতাই আমাদের বর্বরতার দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।

আরবি/জেআই

Link copied!