চিত্রনায়ক শিপন মিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন নির্মাতা হিসেবে। পরর্বতীতে ২০১৪ সালে ‘দেশা—দ্য লিডার’ সিনেমাতে অভিনয়ের পর আর নির্মাণে দেখা যায়নি তাকে। একের পর এক সিনেমাতে অভিনয় করে গেছেন তিনি। এখনো নাটক-সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি। কালেভদ্রে পাওয়া যায় নির্মাণে। দুর্গাপূজার পরিকল্পনা ও সমসাময়িক প্রসঙ্গে রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন শিপন।
ব্যস্ততা
এই মুহূর্তে পূজার ছুটিতে আছি। পূজার কারণে কাজ বন্ধ রেখেছি। পূজা শেষ হলে আবার কাজ শুরু করব। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি কাজ করেছি তা শিগগিরই মুক্তি পাবে। এবার সেভাবে পূজা ঘিরে পরিকল্পনা নেই। তবে বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে যাব। শৈশবের পূজায় বেশ মজা করতাম। এখন কাজের কারণে সেভাবে সময় মেলে না। তারপরও পূজা কখনো মিস করি না।
রাজনীতি
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানার থেকে বেরিয়ে যখন অন্যদের সিনেমায় কাজ শুরু করি তখন চারপাশ দিয়ে নানাভাবে নোংরা রাজনীতির শিকার হই। এ অঙ্গনে অনেক ধরনের নোংরা রাজনীতি হয়। তবে আমি পেশি শক্তি প্রয়োগ করিনি। অনেক শিল্পীই নোংরা রাজনীতির শিকার। তবে কেউ বলে, কেউ বলে না। আমিও একসময় বলতাম না। এখন বলার সাহস পেয়েছি। কারণ, এখন অভিনয় করে আমার চলতে হয় না। কেউ যদি এ জন্য হুমকিও দেয় আমার ব্যাকআপ আছে। আশি ভাগ প্রযোজক ও পরিচালকরা শিল্পীদের ঠকায়। এখানে ভালো করলে অনেকেই পেছন থেকে টেনে ধরে। একজনের ভালো অন্য অনেকে পছন্দ করেন না।
মূল্যায়ন
যোগ্যতার মূল্যায়ন হলে আমাদের সিনেমা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেত। এখন সিনেমা হল নেই। দর্শক সেই অর্থে সিনেমা দেখছেন না। সিনেমা এখন ঈদ কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। চলচ্চিত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে রেষারেষি বাদ দিয়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সিনেমা হল ও সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তবে সবার আগে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। তাহলে আমাদের সিনেমা আরও এগিয়ে যাবে।
অভিনয়
কখনো অভিনয়ে আসার ইচ্ছেই ছিল না। জোর করে আমাকে নায়ক বানানো হয়েছে। শুরুতে প্রযোজনা এবং পরিচালনায় জড়িত ছিলাম। তবে কারো নাম বলতে চাই না। প্রথম সিনেমা মুক্তির এক সপ্তাহ আগে থেকেই আমি রাজনীতির শিকার। এখনো হচ্ছি। যখনই আমার সিনেমা মুক্তি পায় একটি দল লেগে পড়ে আমার পেছনে যাতে সিনেমাটা ভালো না চলে, হল না পায়। শুরুর দিকে ছোট থাকার কারণে বুঝতে পারিনি। যখন বুঝতে পারি তখনো চুপ ছিলাম কারণ, আমার মোকাবেলার ক্ষমতা ছিল না। তাদের সঙ্গে পেশি শক্তিতে না গিয়ে কোয়ালিটি মতো কাজ করেছি। আমার মতো করে এখন বেশ ভালো আছি।
ক্ষোভ
দেশে নাটক-সিনেমায় প্রচুর কাজ হয়। কিন্তু সবাই ঠিকমতো ন্যায্য পারিশ্রমিক পায় না। একটা সময় এ মাধ্যমে নির্ভরশীল ছিলাম যার কারণে কিছু বলতে পারিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যবসা করছি বলে এখন বলতে পারছি। কাজ বন্ধ হয়ে গেলেও সমস্যা নেই। অভিনয় করে আমার চলতে হয় না। বিভিন্ন অজুহাতে এখনকার প্রযোজক ও পরিচালকরা পরিশ্রামিকের অর্ধেক কমিয়ে দেয়। বাকি অর্ধেক ঠিকমতো পাওয়াই যায় না। নব্বই ভাগ শিল্পী তার প্রাপ্য সম্মান পায় না। সবাই ঠিকমতো পারিশ্রামিক পেলে ইন্ডাস্ট্রি আরও এগিয়ে যেত। সবাই আরও ভালো থাকতো। গুটি কয়েক মানুষ জায়গাটা নষ্ট করে ফেলেছে।
কেন অভিনয়
আমার প্রথম সিনেমা ‘দেশা—দ্য লিডার’ দর্শক বেশ পছন্দ করেছেন। তাদের ভালোবাসার জন্য দশ বছর ধরে এখনো কাজ করছি। যে কারণে অভিনয় থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেইনি। পরবর্তী জীবনেও অভিনয় করে যাবো। দর্শকদের ভালোবাসার কারণেই আজ পরিচিতি পেয়েছি। মানুষ আমাকে চিনে-জানে। তাই শেষ দিন পর্যন্ত অভিনয় চালিয়ে যেতে চাই।
আপনার মতামত লিখুন :