ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

কাজ পাচ্ছেন না বাপ্পি চৌধুরী

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ০২:০৫ পিএম

কাজ পাচ্ছেন না বাপ্পি চৌধুরী

বাপ্পি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরেই নতুন সিনেমার খবরে নেই চিত্রনায়ক বাপ্পি চৌধুরী। মাঝে ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামের ব্যয়বহুল একটি সিনেমায় যুক্ত হয়েও ছিটকে পড়েন তিনি। বাপ্পি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই নায়কের ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ সিনেমার পর এ পর্যন্ত যতগুলো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে তা সেভাবে ব্যবসার আলো দেখেনি। যার কারণে অনেক প্রযোজক-পরিচালক তাকে নিয়ে কাজ করতে অনাগ্রহী।

অনেক দিন ধরেই নতুন সিনেমার সংকটে ‘বাজে ছেলে’র বাপ্পি। কর্মহীন থাকলেও গেল এপ্রিলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বিতর্কিত চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের পরিষদ থেকে। কিন্তু সেখানে নায়িকার মতোই নায়কেরও ভরাডুবি হয়।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে থমকে আছে বাপ্পির বেশ কয়েকটি সিনেমা। সেই সিনেমাগুলো কবে আলোর মুখ দেখবে জানে না কেউই। তার মধ্যে অন্যতম আশরাফ শিশিরের পরিচালনায় ‘৫৭০’, বেলাল সানির ‘ডেঞ্জার জোন’ এবং সাফি উদ্দিন সাফির ‘সিক্রেট এজেন্ট’। অনেক আগেই সিনেমাগুলোর কাজ শেষ হলেও আজও আলোর মুখ দেখেনি। সিনেমাগুলোর ভবিষ্যৎ অনেকটা ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের। সেই ঘটনা নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘৫৭০’ ৬ মাস সেন্সরে আটকে থাকার পর চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি সেন্সর বোর্ড থেকে মুক্তির অনুমতি পেয়েছে। এরপর বছর শেষ হতে চললেও সিনেমাটির মুক্তির খবর নেই। এরই মধ্যে দেশের পটপরিবর্তস হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়েছেন। ‘৫৭০’ সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ছাত্রলীগ নেতা-নায়ক বাপ্পি চৌধুরী।

বাপ্পি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

এ প্রসঙ্গে পরিচালক আশরাফ শিশির দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘সিনেমাটি নির্মাণের শুরু থেকে নানা বাধা ছিল। বহু সত্য তুলে ধরা হয়েছিল, যা গত সরকারের লোকজন চায়নি প্রকাশিত হোক। তাই আমাকে ডিজিএফআই হেড কোয়ার্টারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সেন্সরে প্রায় বছর খানেক আটকে রেখে সিনেমাটা কেটেকুটে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। গত ৯ আগস্ট মুক্তির জন্য তারিখ নেওয়া হলেও ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে হত্যা শুরু হলে সেই আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে সিনেমাটির মুক্তি পিছিয়ে দেই। তবে এ বছরে মুক্তির সম্ভাবনা কম। আগামী বছরে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।’

সিনেমাটির শুটিংয়ে অংশ নিয়ে বাপ্পি বলেছিলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা তো সবাই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার কথা জানি। কিন্তু হত্যার পর আসলে কী কী ঘটলো- সেসব বিষয় বিস্তারিত জানা ছিল না। আমার ধারণা দেশের বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, জাতির পিতাকে খুন করার পর কয়েক ঘণ্টা আসলে কী হয়েছিল। কেমন করে ঢাকার ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে মরদেহ টুঙ্গিপাড়া গেল। কোন প্রক্রিয়ায় দাফন করা হলো। এই সিনেমাটির মাধ্যমে সেই বাস্তব ঘটনাগুলো উঠে আসবে। সিনেমার এই নামটির পেছনে রয়েছে অনেক বেদনার একটি ঘটনা, যা পর্দায় দেখা যাবে।’

নির্মাতার কাছ থেকে সিনেমার গল্পটি শুনে সে সময় বাপ্পি কেঁদেছিলেন অঝোরে। কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও তার অভিনীত ‘৫৭০’ সিনেমাটি সহসাই আলোর মুখ দেখছে না। শোনা যাচ্ছে, পটপরিবর্তনের পর এখন নাকি বাপ্পি নিজেও সিনেমাটি মুক্তি পাক তা চাচ্ছেন না। করছেন সিনেমাটির ঘোর বিরোধীতা। অন্যদিকে, প্রায় অর্ধযুগ ধরে থমকে আছে এই অভিনেতার আরও কয়েকটি সিনেমা। তা ছাড়া কয়েকটি সিনেমা ঘোষণা এবং দু-চার দিন শুটিং করেই শেষ। যা আর কখনোই আলোর মুখ দেখবে না।

রূপালী বাংলাদেশ/রুআ

Link copied!