ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ধর্ষণের সাজা ফাঁসি করা হোক: মিম

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ০১:৪০ পিএম

ধর্ষণের সাজা ফাঁসি করা হোক: মিম

বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম। ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ভিন্ন মাত্রার চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসাও কুড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী। বর্তমানে বেছে বেছে চলচ্চিত্রে কাজ করছেন তিনি। মিমের এখনকার ধ্যান-জ্ঞান শুধু চলচ্চিত্র ঘিরেই। মাস খানেকের বিরতি শেষে সম্প্রতি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই নায়িকা অংশ নেন দুটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে। দীর্ঘদিন পর শুটিং ও সমসাময়িক প্রসঙ্গে কথা বলেন আনন্দ আড্ডার সঙ্গে।

বিরতি শেষে
গেল রোজার ঈদের পর কোরবানির আগে শেষ শুটিং করেছিলাম। এরপর আর কাজ করা হয়নি। এই কয়েক মাস সংসার নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। মাঝে মা অসুস্থ ছিল। এখন মা ভালো আছেন। ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত দুটি বিজ্ঞাপনের শুটিং করেছি। শিগগিরই বিজ্ঞাপন দুটি প্রচারে আসবে।

এখন শুটিংয়ের পরিবেশ কেমন?
দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এটিই প্রথম শুটিং। তবে খোলা জায়গায় শুটিং হয়নি যার কারণে সেভাবে বোঝা যায়নি আসলে পরিবেশ কেমন। এফডিসি ও পার্কে দুই দিন শুটিং করেছি। দুটি জায়গাতেই শুটিংয়ের লোকজন ছাড়া আর কেউ ছিল না। তবে সবকিছু স্বাভাবিকের পথে। এরই মধ্যে অনেকেই কাজ শুরু করেছেন। সবকিছু অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।

বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত

দলীয়করণ
কখনোই আমি শিল্পীদের রাজনীতিতে আসার পক্ষে নই। শিল্পীরা সবার। তারা কেন রাজনীতিতে জড়াবে। যখন শিল্পীরা রাজনীতিতে জড়ায় তখন দর্শক ভাগ হয়ে যায়। জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। তাই আমি মনে করি শিল্পীদের নিরপেক্ষ থাকা উচিত। জানি না কেন অনেকেই রাজনীতিতে নাম লেখায়। আমি কখনোই এসব চিন্তা করি না। আমার মূল উদ্দেশ্য ও ভালোবাসা হচ্ছে, শুধুই অভিনয়। আমি সবসময় এই জায়গাতেই থাকব। সবসময় একটাই চাওয়া প্রত্যেকটি মানুষ যেন আমায় ভালোবাসে। একেক জন মানুষের চিন্তা ভাবনা একেক রকম। তারাই ভালো জানে কেন রাজনীতিতে জড়ায়। আমি কখনোই রাজনীতিতে আসব না। অভিনয় আমার জায়গা। সারাজীবন অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই।

দিগন্তে ফুলের আগুন
শহীদজায়া পান্না কায়সারের জীবন অবলম্বনে সিনেমাটি। এতে পান্না কায়সারের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার অংশের পুরো কাজ শেষ। যদি কাজ বাকি থাকে তাহলে অন্যদের। আমার সব কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কাজটি নিয়ে আমি অনেক বেশি আশাবাদী। নারী প্রধান একটি চরিত্র। একটি মেয়ের জীবনের গল্প। সম্প্রতি দেশে যে সমস্যা হয়েছে এটার সঙ্গে সিনেমাটির অনেক মিল রয়েছে। সে সময়ের গল্পের মতো করে সিনেমাটি চিত্রায়ণের চেষ্টা ছিল। চ্যালেঞ্জিং একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। একটি দৃশ্য ছিল আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে দৌড়ে যেতে গিয়ে আমি পড়ে যাই। গল্পে পড়ে যাওয়া থাকলেও আমি সত্যি সত্যি পড়ে গিয়ে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পাই। কান্না করে দেই। চরিত্রের সঙ্গে একদম মিশে যাই। শট শেষে চিৎকার করে বলি আমি সত্যিই ব্যথা পেয়েছি। তবে শটটা দারুণ হয়েছে। হাঁটুর ব্যথা এখনো অনুভব করি। কাজ করতে গেলে অনেক কিছুই মাথায় থাকে না। তখন চরিত্রের মধ্যে ডুবে থাকি। যার ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু কাজটি ভালো হলে সবকিছু ভুলে যাই।

নতুন সিনেমার খবর
অনেক দিন ধরেই বেশ কয়েকটি নতুন কাজের কথা চলছে। পরিস্থিতির কারণে সেগুলোর ঘোষণা হচ্ছে না। পরিস্থিতি পুরোপুরি অনুকূলে এলে তখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। ততদিন অপেক্ষা করতে হবে। আশা রাখি, অনেকদিন পর ভালো কিছু পাবে দর্শকরা। ওটিটি নিয়েও কথা হয়েছে। সবকিছু ঘোষণার অপেক্ষায়।

নাটকে না দেখা
নাটক নিয়ে কোনো পরিকল্পনাই নেই। যদি বড় বাজেটের কিছু হয় তখন হয়তো ভাবা যাবে। এখনকার নাটকের কোয়ালিটি খুব একটা ভালো হয় তা কিন্তু নয়। বড় বাজেটের বড় কিছু হলে তখন চিন্তা করব। যদিও আপাতত নাটক নিয়ে পরিকল্পনা নেই। আমার সব ধ্যান-জ্ঞান সিনেমা ঘিরেই।

বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত

সুখবর
আলহামদুলিল্লাহ, সংসার জীবন বেশ ভালো যাচ্ছে। এখনো সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছি না। সুখবর যখন আসবে তখন জানাব। আগাম কিছু বলতে চাচ্ছি না। সংসার নিয়ে আপাতত ব্যস্ত সময় পার করছি। নিজেকে আরও ফিট রাখতে নিয়মিত জিম করছি। বাসায় থাকলে সিনেমা দেখি। এভাবেই সময় পার হয়।

কেমন বাংলাদেশ চান?
সবার মতো আমিও সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সবাই যেন নতুন এই বাংলাদেশে শান্তিতে থাকতে পারে। নতুন সরকারের কাছে আমার চাওয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যেন মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে থাকে। নিম্ন আয়ের মানুষদের কখনো যাতে অসুবিধা না হয়। সবাই যাতে সুন্দর জীবন-যাপন করতে পারে। সবকিছু যেন বৈষম্যমুক্ত থাকে। বৈষম্যমুক্ত দেশ চাই। একটি দেশের উন্নতি হলে সবার উন্নতি হয়। এখন সুন্দর একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।

চিকিৎসক ধর্ষণ
কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ধর্ষণকারীকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ধর্ষণের সাজা ফাঁসি করা হোক। তাহলেই ধর্ষণ কমবে বলে মনে করি। রাতেও যেন মেয়েরা নিরাপদে চলতে পারে। দু-একজনকে ফাঁসির আওতায় আনা হলে তা দেখে অন্যরা বিরত থাকবে। আইন করলে ধর্ষণ কমে আসবে। তবে আমাদের সবারই পরিবর্তন হতে হবে। ধর্ষণের সাজা যেন ফাঁসি হয় এ জন্য সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!