‘পারিবারিক আইনে সমতা আনি, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করি’ স্লোগানের আলোকে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০২৪ পালিত হচ্ছে। দিবসটি নিয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা অনেক কিছুর সঙ্গেই নির্ভরশীল। স্বাধীনতা মানেই দায়িত্বশীলতা। নারীকে যে কোনো ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। সামগ্রিকভাবে স্বাধীনতা দিতে হবে। ছোট থেকেই খাবার টেবিল থেকে শুরু করে সবকিছুতে তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আমরা আগে থেকেই দেখে আসছি ছেলের জন্য আলাদা করে খাবারের বড় একটা অংশ উঠিয়ে রাখা হতো। সেই দিনগুলো পাল্টে যাওয়া খুবই জরুরি। যদিও এখন আগের থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তবে তা সমাজে এখনো বিদ্যমান। সমবন্টন বিষয়টা খুব জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীরা ঘরে থাকবে আর পুরুষ কাজ করবে সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নারী পুরুষ সকল ক্ষেত্রে সমান অধিকার। সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সমপরিমাণ হতে হবে। সবকিছু ঘর থেকেই আসতে হবে। একটি মেয়ের বিয়ে হলেই সে শ্বশুরবাড়ির বিষয়টা তা নয়। সন্তান সব সময় সন্তান। বিয়ে হলেও সন্তান কখনো পর হয় না। মেয়েদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। বেশির ভাগ সময় দেখে আসছি মেয়েরা কথা বলার জায়গাই পায় না। নারীর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমি ভীষণ চিন্তিত। বিভিন্ন কারণে নারীরা ভীষণভাবে বিষণ্নতায় ভুগে। মানসিক চাপের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। সচরাচর দেখা যায় মেয়েরা কোথাও মত প্রকাশের জায়গা পায় না। এ ক্ষেত্রে পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে নওশাবা বলেন, ‘জুলাই ও আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বিজয় আমাদের দারুণ একটি উদাহরণ। যেখানে কেউই বলতে পারবে না এই অভ্যুত্থান কারও একার। এটা সকলের অভ্যুত্থান। সকল শ্রেণির মানুষ এই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিল। এরপর অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি নারীদের যে অবদান সেটা খুব বেশি চর্চায় আসেনি। সেটা আসাটা জরুরি। এই চর্চা চলমান থাকা খুবই জরুরি। চলমান যে কোনো জিনিস তখন সেটা প্রাকটিসে পরিণত হয়।’
নারীর সম্মান প্রতিদিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু নারী দিবসে নারীদের সম্মান করব সে চর্চা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এটা যেন শুধু দিবস কেন্দ্রিক না হয়। প্রতিদিনই নারীকে সম্মান করতে হবে। সকাল থেকে উঠে যেন উদারণ তৈরি করতে পারি। একজন নারী যেমন নিজের জন্য কথা বলবে ঠিক তেমন তার পাশের নারীর জন্যও কথা বলবে। সবাই উদাহরণ তৈরি করলে সন্তানরা শিখবে। এভাবেই সব জায়গায় নারীদের সম্মান দিতে হবে। নারীর সম্মান ঘর থেকেই শুরু হতে হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :