ঢাকা বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪

গুমের মূলহোতা জিয়াউলের সঙ্গে কী সম্পর্ক ঊর্মিলার?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৪, ০৫:২১ পিএম

গুমের মূলহোতা জিয়াউলের সঙ্গে কী সম্পর্ক ঊর্মিলার?

ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর। ছবি: সংগৃহীত

ছোট পর্দার অভিনেত্রী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর। ২০১০ সালে ‘জটিল প্রেম’ নাটকের মাধ্যমে শোবিজে পথচলা শুরু করেন তিনি। এরপর নিয়মিত অভিনয় চালিয়ে চান ঊর্মিলা। এক সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেত্রী বেশ কয়েক বছর ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয় পেশা হলেও বিগত কয়েক বছরে সময় পেলে অভিনয়ে দেখা যেত তাকে।

গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত ফুল টাইম সরব ছিলেন রাজনীতিতে। একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন অভিনিয় শিল্পী সংঘের নির্বাচনে। ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সক্রিয় ছিলেন ‘আলো আসবেই’ আলোচিত গ্রুপে। যেখানে বন্ধুকেও ছেড়ে কথা বলেননি তিনি। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আত্মগোপনে তিনি। বর্তমানে তার মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।

হঠাৎ করেই আলোচনায় ঊর্মিলা। তবে নতুন কোনো নাটক বা ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের জন্য না, আওয়ামী লীগের দোসর কুখ্যাত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের সঙ্গে থানা হাজতে দেখা করতে গিয়েই লাইমলাইটে এই অভিনেত্রী।

আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার নানা অপকর্ম এখন একে একে সমনে আসছে। কুখ্যাত জিয়ার সঙ্গে কেন থানায় দেখা করতে গেলেন ঊর্মিলা সেই প্রশ্ন এখন জনমনে।

বর্তমানে নিউমার্কেট থানা হাজতে বন্দি, হাজারো অপকর্মের জন্য দায়ী মেজর জিয়ার সঙ্গে ঊর্মিলার দেখা করতে যাওয়ার বিষয়টি, কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার সংবাদকর্মী জুলকারনাইন সাইর তার ফেসবুকের একটি পোস্টে জানান। যেখানে তিনি সাবেক এনটিএমসির মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান কীভাবে, সরকারী দপ্তরকে নিজের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলেন, তারই একটি অভিযোগ তুলে ধরেন। ফেসবুকের ওই পোস্টে নাম ও পদবিসহ বিস্তারিত আকারে এনটিএমসির সকল অসাধু ও জিয়ার আত্মীয়দের চিহ্নিত করে দেন জুলকারনাইন।

ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর। ছবি: সংগৃহীত

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে ছোট পর্দার অভিনেত্রী ঊর্মিলার কী সম্পর্ক? মূলত ঊর্মিলা শিক্ষা জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ও বর্তমানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। অভিনয় জীবনে তেমন সাফল্য কায়েম করতে না পেরে, তিনি রাজনীতির পথ বেছে নেন উপরে উঠার জন্য। আর কোনো এক পর্যায়ে তিনি আওয়ামী দোসর মেজর জিয়াউল আহসানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।

জুলকারনাইনের সেই পোস্ট অনুযায়ী, অনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও, সাবেক এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জিয়ার অবৈধ বিভিন্ন ব্যবসার সাথেও জড়িত আছেন এই অভিনেত্রী। সেসব ব্যবসার বিষয়েই আলাপ করতে এবং মেজর জিয়ার সহচর শাকিল ও রাসেলের জন্য নির্দেশনা নিতেই ঊর্মিলা থানায় যান বলে জানিয়েছেন জুলকারনাইন।

২০১৬ থেকে বহু শুম-খুনের সাথে জড়িত কুখ্যাত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের ছত্রছায়ায়ই কাজ করতেন এনটিএমসির একটি বিশেষ দল। সেই দলে ছিলেন জিয়ার শ্যালক রিজভান ইসলাম অনতু, জামাল উদ্দিন, আহমেদ ডালিম, জামিউল ইসলাম, মুনাইম শাহরিয়ার। এরা সবাই এনটিএমসির সদস্য।

জিয়াউল আহসান নিজে গ্রেপ্তার হলেও, তার বিশেষ দলের প্রত্যেকে বহাল তবিয়তে বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন। এদিকে, জিয়ার এসব সহচরদের গ্রেপ্তার বা আটকে দেশের কোন একটি সংস্থাও কার্যকরী ভূমিকা রাখছে না। অন্যদিকে, জিয়ার অবৈধ ব্যবসার পরিচালনার উদ্দেশে বার্তালাপ করতেই ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর থানা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে বলে খবর।

বলে রাখা ভালো, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর। তিনি ঢাকা বিভাগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তার ভাগ্য সহায় হয়নি। এর আগেও তিনিও সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে দৌঁড়ঝাপ করেন।

আরবি/এফআই

Link copied!