মূলধারার চলচ্চিত্রে নায়িকাদের কী কাজ? অনেকেই বলেন, সেজেগুজে ঘোরা এবং দু’একটা গান বা নাচ। প্রথম থেকেই এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন কঙ্গনা বা কারিনার মতো নায়িকারা। কিন্তু এ কথাও তাদের স্বীকার করতে হয়েছে, বলিউডে তেমন সুযোগ তারা পান না। কারিনা তো পারিশ্রমিকের অসাম্য নিয়েও সরব। এবার অ্যাকশন সিনেমাতে অভিনয় করার জন্য বলিউড নায়িকাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সামান্থা রুথ প্রভু। অভিনেত্রী নিজেও খুশি এই ধারার সিনেমাতে অভিনয় করে।
সামান্থা জানিয়েছেন, জেমস বন্ডের কোনো মহিলা সংস্করণে অভিনয় করা তার স্বপ্ন। অ্যাকশন সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য বলিউডের দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভাট, আনুশকা শেঠিদের প্রশংসাও করেছেন তিনি। সামান্থার সেই স্বপ্ন খানিকটা পূরণ হয়েছে বলাই যায়। রাজ নিদিমরু এবং কৃষ্ণ ডিকের পরিচালনায় মুক্তি পেতে চলেছে ‘সিটাডেল: হানি বানি’। হলিউডের মূল সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া জোনাস এবং রিচার্ড ম্যাডেন। ভারতীয় সংস্করণে নাম ভূমিকায় দেখা যাবে বরুণ ধওয়ান ও সমান্থাকে।
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘এই নতুন ধারার সিনেমাতে কাজ করতে পেরে আমি খুবই খুশি। আজকাল অনেক অভিনেত্রীই অ্যাকশন সিনেমাতে অভিনয় করছেন। আলিয়া করেছেন। ইতোমধ্যে দীপিকা পাড়ুকোন, ক্যাটরিনা কাইফও করেছেন। দিশা, কিয়ারাও আজকাল এই ধরনের সিনেমা করছেন। নারীরা সিনেমার নিয়ন্ত্রণ রাখছেন, এটা দারুণ বিষয়।’
দক্ষিণী সিনেমাতে সামান্থার অভিনয়ের অভিজ্ঞতা দীর্ঘ। ‘ইয়ে মায়া চেসাভে’, ‘ইগা’, ‘নিথানে এন পোনভাসন্থাম’, ‘মহান্তি’ এবং ‘সুপার ডিলাক্স’-এর মতো সিনেমাতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। হিন্দিতে ‘ফ্যামিলি ম্যান ২’ সিরিজে অভিনয় করেছিলেন সামান্থা। এই সিনেমার পরিচালকও রাজ নিদিমরু এবং কৃষ্ণ ডিকে। নায়কের প্রতিপক্ষ হিসাবে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু সামান্থার অভিমান, তার অধিকাংশ অ্যাকশন দৃশ্যেই সেবার কাঁচি পড়েছিল। এবার আর তা ঘটবে না। ফলে খুশি সামান্থা।
কেন এত অ্যাকশনের প্রতি আকর্ষণ নায়িকার? জবাবে সামান্থা বলেন, ‘কে না চায় গোয়েন্দা গল্পে নিপুণ লড়াইয়ের দৃশ্যে অভিনয় করতে! আমার তো মনে হয়, সমস্ত অভিনেতারই স্বপ্ন জেমস বন্ডের চরিত্রে অভিনয় করা। আমরা অভিনেতারা এ নিয়ে সব সময় উত্তেজিত। অ্যাকশন সিনেমা করা খুবই আনন্দদায়ক।’
তবে এরপর কমেডি সিনেমাতে অভিনয় করতে চান বলেও জানিয়েছেন সামান্থা। আর সেখানে নায়ক হিসাবে পেতে চান ‘সিটাডেল’-এর বানি বরুণকেই। খুব শিগগিরই এমন একটি সিনেমাতে অভিনয় করতে চলেছেন বলে সরাসরি দাবি করেছেন সামান্থা। অভিনেত্রী বর্তমানে ‘সিটাডেল হানি বানি’ সিরিজের জন্য আলোচনায় রয়েছেন। এই সিরিজে তিনি বরুণ ধাওয়ানের বিপরীতে প্রথম একসঙ্গে কাজ করেছেন। এই নতুন জুটির জন্য দর্শকের মধ্যে অপেক্ষা রয়েছে।
সম্প্রতি সামান্থা ইনস্টাগ্রামে একটি লাইভ সেশন করেছেন, যেখানে তিনি ভক্তদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই সেশনে এক ব্যক্তি তার ওজন নিয়ে মন্তব্য করলে সামান্থা সোজাসুজি সেই ট্রোলের মোকাবিলা করেন। ওই ট্রোলার মন্তব্য করেছিলেন, আপনার ওজন বাড়ছে না কেন? এই প্রশ্নটি শুনে সামান্থা খুবই হতাশ হন এবং তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে বাধ্য হন।
তিনি জানিয়েছেন যে, মায়োসাইটিস নামক একটি রোগে ভুগছেন, যার ফলে তার ওজন বাড়ানো সম্ভব নয়। সামান্থা বলেন, ‘আমি একটি প্রদাহ-বিরোধী খাদ্যে রয়েছি, তাই আপনারা আমাকে বিচার করবেন না। আমি জানি আমি কেমন অনুভব করছি। এটি ২০২৪ সাল, তাই আমাদের ‘বাঁচো আর বাঁচতে দাও’ নীতিতে বিশ্বাস করা উচিত।’
ইনস্টাগ্রামে লাইভ সেশনে সামান্থা ‘সিটাডেল হানি বানি’ সিরিজ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত বলেন। তিনি বলেন, ‘এই ধারাবাহিকে কাজ করতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। এটি আমার জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। আগের কাজগুলোর তুলনায় এই চরিত্রটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি সবসময় নতুন চরিত্রের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেন এবং কখনও কখনও সফলতা না পেলেও সেগুলোকে তিনি স্বীকার করেন।
সামান্থার অভিনয় দক্ষতা এবং তার দৃঢ় মনোভাব তাকে সেলিব্রিটির দুনিয়ায় আলাদা করে রেখেছে। তার এই নতুন সিরিজটিতে কাজ করার সময় তিনি বিভিন্ন ধরনের অ্যাকশন দৃশ্যের মধ্যে অভিনয় করছেন, যা দর্শকদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে। বরুণ ধাওয়ানের সঙ্গে কাজ করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি একটি দারুণ অভিজ্ঞতা। বরুণ একজন দুর্দান্ত অভিনেতা এবং তার সাথে কাজ করা আমাকে নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করেছে।’
সামান্থার ইনস্টাগ্রাম লাইভ সেশনের এই অংশটি তার ভক্তদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। তিনি সেখানেই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহস দেখিয়েছেন এবং নিজের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। এই ধরনের সজাগ ও ইতিবাচক মনোভাব তাকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
নাগা চৈতন্যর সঙ্গে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর একাই রয়েছেন অভিনেত্রী। চলতি বছরেই শোভিতা ধূলিপালার সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন অভিনেতা। যদিও নাগার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অভিনেত্রী। ওই অনুষ্ঠানে আলোকচিত্রীদের সামনে পোজ দেন সামান্থা। সেখানেই সামান্থাকে দেখে নেটাগরিকদের একটা বড় অংশের দাবি, সামান্থা কি আদৌ সুস্থ? কারও চিন্তা হয় অভিনেত্রীর চেহারা নিয়ে। কেউ কেউ আবার চিন্তায় পড়ে যান এটা ভেবে যে নাগার নতুন জীবনের কথা জানতে পেরেই কি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সামান্থা! মুখে হাসি থাকলেও ছবি দেখে অনেকেরই অসুস্থ মনে হয়েছে সামান্থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :