মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম

‘স্লিপ ডিভোর্স’এর দিকে ঝুঁকছেন দম্পতিরা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম

‘স্লিপ ডিভোর্স’এর দিকে ঝুঁকছেন দম্পতিরা

ছবি: সংগৃহীত

"স্লিপ ডিভোর্স" বলতে বোঝানো হয় যখন স্বামী-স্ত্রী একসাথে থাকলেও তাদের শয্যার স্থান আলাদা থাকে। এটি প্রথাগত ডিভোর্স নয় তবে সম্পর্কের মধ্যে একটি মঞ্চের মতো। এটি সম্পর্কে কথোপকথন এবং সম্পর্কের উন্নতির দিকে দৃষ্টি দেয়।

কেন জরুরি এই ঘুম-বিচ্ছেদ?

চলুন জেনে নেওয়া যাক স্লিপ ডিভোর্সের কারণসমূহ:

ব্যস্ত জীবন: আধুনিক জীবনে কাজের চাপ, সন্তানদের যত্ন এবং অন্যান্য দায়িত্বের কারণে স্বামী-স্ত্রীদের একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ কমে যায়। এর ফলে একে অপরকে ঘুমানোর সময়ও আলাদা থাকার অভ্যাস হয়ে যায়।

বেড়ে ওঠা সমস্যা: সম্পর্কের মধ্যে যেসব ছোটখাটো অমিল বা সমস্যাগুলি আগে বেশি গুরুত্ব পায়নি, সেগুলো সময়ের সাথে সাথে বড় হয়ে উঠতে পারে এবং একে অপরের ঘুমের ধরনেও তার প্রভাব পড়ে। যেমন নিঃশব্দভাবে ঘুমানো, হঠাৎ ঘুম ভাঙা বা অন্য কিছু কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।

শরীরের নানান সমস্যা: যেসব সমস্যা শয্যাশায়ী অবস্থায় প্রভাব ফেলে, যেমন নাক ডাকা, অস্বস্তিকর শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা বা কোনো শারীরিক অসুবিধা, তা স্বামী-স্ত্রীদের আলাদা শয্যায় শোয়ার পক্ষে প্ররোচিত করতে পারে।

মানসিক দূরত্ব: সম্পর্কের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হলে, শারীরিক ঘনিষ্ঠতা কমে যেতে পারে যার ফলে একে অপরের কাছ থেকে শারীরিকভাবে আলাদা থাকার প্রবণতা বেড়ে যায়।

স্লিপ ডিভোর্সের উপকারিতা:

ঘুমের ‘মান’ বাড়ায়: জাপানিদের দেখবেন ছোট ছোট বিছানা। বিছানা দেখেই বোঝা যায়, একা ঘুমানো তাঁদের ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক আর সাংস্কৃতিকভাবেই জাপানিরা সাধারণত একা ঘুমান। ঘুম তাঁদের জন্য খুবই জরুরি। কোনো কিছুর জন্যই তাঁরা ঘুমের মান বিসর্জন দিতে প্রস্তুত নন। অনেকেই জীবনসঙ্গীর নাকডাকা, নড়াচড়া, উঠে বারবার ওয়াশরুমে যাওয়া অথবা ফ্যান বা এসি চলবে কি চলবে না—সেই সিদ্ধান্তে একমত হতে না পারা, ভিন্ন ঘুমের অভ্যাস—এ রকম নানা কারণে আলাদা ঘুমান। তাতে নিজেদের ঘুম ভালো হয়। কেননা সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম খুবই জরুরি।

দূরত্ব কমিয়ে আনে: শুনতে অবাক শোনালেও বাস্তবতা হলো, আপনার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে মনোবিদেরা কয়েক দিন আলাদা ঘুমানোর পরামর্শ দেন। সহজেই আপনি এতে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সংঘাতের মানসিক যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

আলাদা স্পেস: একেকজনের ঘুমের অভ্যাস একেক রকম। অনেকে আলো জ্বালিয়ে ঘুমান আবার কেউ আলো মোটেই সহ্য করতে পারে না। কেউবা এসি ছেড়ে ঠান্ডায় কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমায়, কারও কারও আবার এসি ‘সহ্য’ হয় না। এছাড়াও কিছু মানুষের ঘুম খুবই পাতলা। ফলে নিজের মতো করে ঘুমের একটা পরিবেশ তৈরি করেন।

সন্তানের জন্য: শিশুর জন্য অন্তত দুই বছর পর্যন্ত (যতকাল বুকের দুধ খায়) মায়ের কাছে ঘুমানো খুবই জরুরি। বুকের দুধ খাওয়ার পাশাপাশি মায়ের কোল, মায়ের পাশে ঘুমানো, মায়ের ‘ওম’-এ থাকা খুবই জরুরি। নানা কারণে বারবার বাবু ঘুম থেকে উঠে যাওয়ায় জীবনসঙ্গীর ঘুমের অসুবিধার কারণেও অনেক সময় স্লিপ ডিভোর্স হয়। জীবনসঙ্গী আলাদা ঘুমান। তবে নতুন মায়ের এমন সংকটের সময় শিশুর বাবার উচিত দায়িত্ব যতটা সম্ভব ভাগাভাগি করে নেওয়া। ন্যাপি, কাঁথা বদলে দেওয়া। কোলে নিয়ে ঘুরে ঘুরে ঘুম পাড়ানো। তবে একেবারেই যদি তিনি কোনো সাহায্য না করতে পারেন, তাহলে আলাদা ঘুমানোই সমীচীন। তাঁর বদলে এমন কেউ নতুন মায়ের পাশে থাকল, যে তাঁকে সাহায্য করতে পারে। যাতে নতুন মা আরাম করে খানিকটা ঘুমাতে পারেন।

সার্বিক সুস্থতা, স্বস্তি: অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী আলাদা ঘুমানোর ফলে তাঁদের ঘুম ভালো হওয়া, নিজেদের স্বাস্থ্য ভালো থাকা, সারা দিন এনার্জি নিয়ে পার করা থেকে শুরু করে নিজেদের সম্পর্কে ভারসাম্য রাখাও সহজ হয়। জীবনসঙ্গী চাইলে গভীর রাত পর্যন্ত নিজের পেশাগত দায়িত্ব বা ব্যক্তিগত কাজ করতে পারেন। আরেকজনের তাতে কোনো সমস্যা হয় না।

স্লিপ ডিভোর্সের ক্ষতিকর প্রভাব:

অন্তরঙ্গতার অভাব: শয্যাসঙ্গী আলাদা থাকলে, সম্পর্কের মধ্যে শারীরিক এবং মানসিক অন্তরঙ্গতার অভাব দেখা দেয়। এতে সম্পর্কের মধ্যে আস্থার অভাব বা অবহেলা সৃষ্টি হতে পারে।

একাকিত্ব এবং উদ্বেগ: একে অপরের থেকে দূরে থাকলে একজনের মধ্যে একাকিত্ব, উদ্বেগ বা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা বাড়তে পারে।


স্লিপ ডিভোর্সের দরকার আছে। তবে জীবনসঙ্গীকে নিয়ে যদি একসঙ্গে আরামে ঘুমানো যায়, সেটাই সবচেয়ে ভালো। সম্পর্কের গভীরতার জন্য শারীরিকভাবে কাছাকাছি থাকার কোনো বিকল্প নেই। ঘুমবিশেষজ্ঞ ও মনোবিদ ডা. ওয়েন্ডি ট্রক্সেল একই বিষয়ে সিএনএনের একটা প্রতিবেদনে বলেন, ‘জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ঘুমানো দুজনকেই সম্পর্কে গভীর নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়। আর তা অনেকক্ষণ পর্যন্ত শরীরে থাকে। ফলে ঘুমের মানও ভালো হয়।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, আলাদা ঘুমানোর ফলে সম্পর্কে ছন্দপতন ঘটে। ভুল-বোঝাবুঝির আশঙ্কা তৈরি হয় বেশি। এমনকি একে অপরকে অকারণে সন্দেহ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় সহজেই। তাই কী কারণে আলাদা ঘুমানোর প্রয়োজন, সেটা আগে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক। আলাদা ঘুমানোটা এরপরের ধাপের বিকল্প।

আরবি/শিতি

Link copied!