সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৩:১২ পিএম

ক্যাম্পাস লাইফ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৩:১২ পিএম

ক্যাম্পাস লাইফ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। ৭৫৩ একরজুড়ে বিস্তৃত চোখ জুড়ানো সবুজে ঘেরা এ ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের এক বিশাল ক্ষেত্র। ক্যাম্পাস জীবনের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি চারন করে কথা বলছেন মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের ২০১৫ ব্যাচের ছাত্র দেলোয়ার সবুজ।

শিক্ষা ও একাডেমিক পরিবেশ
রাবির শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত গুণগত মানসম্পন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১২টি অনুষদ এবং ৫৯টি বিভাগ, যেখানে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে। আধুনিক একাডেমিক ভবন, গবেষণাগার, কম্পিউটার ল্যাব এবং বিশাল গ্রন্থাগার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করে। বিশেষ করে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি প্রায় চার লাখ বই ও অসংখ্য গবেষণাসামগ্রী সংরক্ষণ করে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞানের এক সমৃদ্ধ ভান্ডার।
প্রতিটি বিভাগেই নিয়মিত ক্লাস, সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখানকার শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করেন এবং বাস্তবমুখী শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করেন।

আবাসন ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিশেষত্ব হলো এর আবাসিক হলগুলো। এখানে ১৭টি হল রয়েছে, যার মধ্যে ১১টি পুরুষ ও ৬টি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য। প্রতিটি হলে রয়েছে পাঠাগার, ক্যান্টিন, সাধারণ কক্ষ ও বিনোদনের ব্যবস্থা। হলে থাকলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা আজীবনের স্মৃতি হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন শুধু একাডেমিক পড়াশোনায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস, একে অপরের পাশে থাকা, নতুন কিছু শেখা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জায়গা। আবাসিক হলে রাতের আড্ডা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবৃত্তি, বিতর্ক এবং বিভিন্ন ক্লাবের কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

সাংস্কৃতিক ও সংগঠনমূলক কর্মকাণ্ড
রাবি সাংস্কৃতিক দিক থেকেও সমৃদ্ধ। এখানে রয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিতর্ক ক্লাব, নাট্যদল, ফটোগ্রাফি ক্লাব ও সামাজিক সংগঠন। এসব সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা ও নেতৃত্বগুণ বিকাশের সুযোগ পায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হলো শহিদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যেখানে নিয়মিত নাটক, গান, বিতর্ক এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ, কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন ও শেখ রাসেল চত্বর সাংস্কৃতিক চর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট
রাবির ক্যাম্পাস রাজনৈতিক দিক থেকেও বেশ সচেতন। এখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তোলে। তবে, রাজনৈতিক পরিবেশ কখনো কখনো উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমের তেমন প্রভাব পড়ে না।

ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য ও অবসর সময়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। পদ্মার পাড়, শহিদ মিনার, শহিদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, বঙ্গবন্ধু হলের পাশে লেক, আম বাগান ও বিশাল মাঠ সব মিলিয়ে এক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরি করেছে। বিকেলে শিক্ষার্থীরা চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়, সাইকেল চালিয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়ায় বা পদ্মার পাড়ে বসে সময় কাটায়।

সবুজ আরও জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জীবন শুধু চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি জ্ঞানার্জন, বন্ধুত্ব, আত্মোন্নয়ন ও জীবনবোধ শেখার এক অপূর্ব যাত্রা। এখানে অর্জিত শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা একজন শিক্ষার্থীকে তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। এ কারণে, যারা একবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হয়, তারা আজীবনের স্মৃতি বয়ে বেড়ায়।

আরবি/এসএম

Link copied!