ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ওমেগা ৩ ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সাপ্লিমেন্ট ট্যাবলেট। ছবি: সংগৃহীত

অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু সব চর্বি অস্বাস্থ্যকর নয়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বিষণ্নতা, ক্যান্সার, ডিমেনশিয়া ও আর্থ্রাইটিস থেকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া মানবদেহে খাবারের বিপাকক্রিয়া ও শরীর সুস্থ রাখতে ওমেগা-৩ চর্বির বিকল্প নেই। 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় স্যামন মাছ, ওয়াল নাট, বাদাম স্পাইনাক বা পাতা শাক ইত্যাদি খাবারে। আমাদের দেশে ইলিশ মাছেও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। ইলিশ মাছ পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে সামুদ্রিক মাছ স্যামন ও টুনা মাছ খাওয়া যেতে পারে। 

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের উপকারিতা

মাছ থেকে যে ধরনের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়, তা ডিএইচএ এবং ইপিএ নামে পরিচিত। যার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বেশি। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের আরেকটি রূপ হলো এএলএ। যা ভেজিটেবল অয়েল, ওয়াল নাট বা বাদাম, গাঢ় পাতাযুক্ত শাকে পাওয়া যায়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রক্তনালি, জয়েন্ট এবং অন্য স্থানের প্রদাহ কমিয়ে রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। উচ্চ মাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 

এ ছাড়া রক্তনালিতে অস্বাস্থ্যকর চর্বি, যেমন– অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রক্তনালিতে প্ল্যাক গঠন প্রক্রিয়ার গতি কমিয়ে দেয়।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড কোলন ক্যান্সার, ক্যান্সার এবং প্রস্টেট, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। যদি আপনি মাছ খেতে না চান, তাহলে ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্টস বা সম্পূরক খাবার গ্রহণ করতে পারেন। 

ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্টস ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়। যাদের হৃদরোগ আছে, তাদের জন্য দৈনিক এক গ্রাম গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এটি শুরু করার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। 

উপকারী ফ্যাটের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ছাড়া ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।

ওমেগা-৬ ফ্যাটি ভেজিটেবল অয়েল ও কাঠবাদামে পাওয়া যায়।

পরিশেষে একটি কথা না বললেই নয়, ইলিশ মাছ খেলে হৃদরোগ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে। তবে যাদের রক্তে ক্রিয়েটিনের মাত্রা বেশি, তাদের ক্ষেত্রে যে কোনো মাছ বা প্রোটিনজাতীয় খাবার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি খাওয়া ঠিক নয়। কিডনি রোগী ছাড়া অন্য সবাই যতদূর সম্ভব ইলিশ মাছ খান এবং সুস্থ থাকুন।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ ৮টি খাবার | AskNestlé
ওমেগা-৩ সম্পূরক খাবার

ওমেগা ৩ এর অভাবের লক্ষণ

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নামে পরিচিত অত্যাবশ্যকীয় চর্বি আমাদের শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। জীবনীশক্তি, চোখের স্বাস্থ্য এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাসহ অনেক কিছুর জন্য ওমেগা-৩ অপরিহার্য। 

ত্বকের শুষ্কতা এবং চুলকানি: শরীরের প্রথম অংশগুলির মধ্যে একটি যেখানে কেউ একটি ওমেগা-৩  ফ্যাটের ঘাটতি লক্ষ্য করতে পারে তা হলো ত্বকে। কিছু লোক সংবেদনশীল, শুষ্ক ত্বক, এমনকি ব্রণের অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধি অনুভব করে। কিছু লোকের মধ্যে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ব্রণ হওয়া ওমেগা-৩ ঘাটতির একটি সূক্ষ্ম লক্ষণ হতে পারে।

ডিপ্রেশন: ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিডগুলি নিউরোপ্রোটেক্টিভ এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য স্বীকৃত। যা তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

জয়েন্টে ব্যথা: আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের জয়েন্টে ব্যথ্যা হওয়া স্বাভাবিক। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওমেগা-৩ সম্বলিত সম্পূরক গ্রহণ করা জয়েন্টের ব্যথা কমাতে পারে এবং গ্রিপ শক্তি উন্নত করতে পারে।

চুলের পরিবর্তন: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে চুলের স্বাস্থ্যকে ভালো করে। এর অভাবে চুল পাতলা হয়ে যায়, চুল পড়া বেড়ে যায়, চুল শুষ্ক এবং দুর্বল হয়ে যায়।

ক্লান্তি এবং ঘুমের সমস্যা: ঘুমের সমস্যায় অবদান রাখতে পারে এমন অসংখ্য কারণের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাব একটি।


ওমেগা-৩ ঘাটতি সমাধান করতে কতক্ষণ সময় লাগে? 

এটি অভাবের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে, ওমেগা-৩ মাত্রা পুনরুদ্ধার করতে এবং ফল পর্যবেক্ষণ করতে ৬ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।