ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
শসা, ছবি- সংগৃহীত

শসা একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সবজি। শসায় রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার। গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছর বাজার শসা পাওয়া যায়। শসা বিভিন্নভাবে শরীরের উপকার করে। নিয়মিত শসা খেলে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ হয়।

শসা ওজন কমাতে, রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে উপকারী। শসাতে ক্যালোরি খুব কম,পানির পরিমাণ বেশি। অনেকেই ত্বকের পরিচর্যায় শশাকে কাজে লাগিয়ে থাকেন। তবে এর আছে অপকারিতাও।

পুষ্টি উপাদান-

১০০ গ্রাম শসা থেকে পাওয়া যায়

ক্যালরি - ১৫.৫ গ্রাম

প্রোটিন - ০.৬৪ গ্রাম

কার্বহাইড্রেট- ৩.৭৮ গ্রাম

ফ্যাট - ০.১১ গ্রাম

ডায়াটারি ফাইবার - ০.৬২ গ্রাম

মনোস্যাকারাইড - ১.৭০ গ্রাম

এ সব উপাদান ছাড়া ও রয়েছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।

শসার খাওয়ার উপকারিতা-

১. ফাইবার ও ফ্লুইডসমৃদ্ধ শসা শরীরে ফাইবার এবং পানির পরিমাণ বাড়ায়। পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার থাকার কারণে শসা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।

২.  শসায় রয়েছে স্টেরল নামের এক ধরনের উপাদান, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন, শসার খোসায়ও স্টেরল থাকে।

৩. ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে শসা খুব উপকারী।

৪. কিডনি, ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যায় শসা বেশ সাহায্য করে থাকে।

৫. এরেপসিন নামক অ্যানজাইম থাকার কারণে শসা হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করে থাকে।

৬. শসা বা শসার রস ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী।

৭. শসার রস আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী।

৮. মিনারেলসমৃদ্ধ শসা নখ ভালো রাখতে, দাঁত ও মাড়ির সমস্যায় সাহায্য করে।

৯. ডাক্তারের পরামর্শনুযায়ী শসার রস খেলে আর্থ্রাইটিস, অ্যাগজিমা, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যায় উপকার হতে পারে। 

১০.গাজরের রসের সাথে শসার রস মিশিয়ে খেতে পারেন, ইউরিক অ্যাসিড থেকে ব্যথার সমস্যা হলে অনেক কাজে দেবে।

শসার খাওয়ার অপকারিতা-

শসা ভালো একটি খাবার হলেও মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যায় যখন কেউ মনে করে শুধুমাত্র শশা খেয়ে ওজন কমানো যায়। শসাকে ওজন কমানোর একমাত্র ওষুধ মনে করে।

আমরা ডায়টেশিয়ানরা ডয়েট চার্টে শসাটা রাখি। কিন্তু শুধু শসা খেয়ে আমরা ওজন কমাতে বলি না। কিন্তু অনেকেই ওজন কমানোর জন্য শসাকে ওষুধ হিসবে ধরে নিয়ে সারাদিন ধরে শসা খেতে থাকে। যখনই ক্ষুধা লাগে শসা খেতে শুরু করে।

যেহেতু শসা একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই শসা কেন অন্য যেকোনো কম ক্যালরি যুক্ত খাবার একটানা খেতে থাকলে ওজন কমে যাবে। কিন্তু সেই সঙ্গে আপনার শরীরে দেখা দেবে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদনের ঘাটতি।

অন্য খাবার কম খেয়ে সারাদিন বা অতিরিক্ত পরিমানে শসা খেতে থাকলে বা ক্ষুধা লাগলেই শসা খেলে বদহজম, গ্যাসের সমস্যাসহ পেট ফাঁপা, পেট ব্যাথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দেয়।

প্রায় এক মাস ধরে ওজন কমাতে সারাক্ষণ শসা খেলেই ঘটবে নানা বিপত্তি। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে যাবে। কাজ করার শক্তি পাবেন না। রক্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ছাড়াও রক্তে গ্লুকোজের অভাবে মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে।

যেভাবে শসা খাবেন-

শসা আপনি আপনার অন্য যেকোনো খাবারের সঙ্গে যোগ করে খেতে পারেন।  যেমন- সকালের নাস্তার পর, দুপুরের খাবারের সঙ্গে সালাদ হিসাবে, বিকেলে নাস্তার সঙ্গে, টক দইয়ের সঙ্গে কিংবা রাতের খাবারের সঙ্গে।