ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

সকালে খালি পেটে আনারস খাওয়ার উপকারিতা-অপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
আনারস, ছবি- সংগৃহীত

আনারস সুস্বাদু মৌসুমি ফল। অনেকের কাছে এই ফলটি প্রিয়। শতাব্দী ধরে আনারস রোগ নিরাময়ে বেশ কার্যকরী ফল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই বলা হয়, সকালে খালি পেটে আনারস খেলে শরীরের উপকার হয়। আনারসে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। আনারসে থাকা এনজাইম ব্রমেলেইন রোগ নিরাময়ে বেশ কার্যকর।  এ ছাড়া এতে থাকা অন্যসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

প্রদাহের সাথে লড়াই করে

ব্রমেলিনের মধ্যে রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান। ব্রমেলিন শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে, প্রদাহ রোধ করে। নিয়মিত আনারস খাওয়া আরথ্রাইটিসের ব্যথা কমায়।

লিভার ও অন্ত্র

ব্রমেলিন অ্যান্টি প্যারিসটিক। আনারস নিয়মিত খেলে লিভার ও অন্ত্রের উপকার হয়।

ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে

আনারসের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম। এটি আমাদের শরীরকে শক্তিশালী রাখে। এটি ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে।

 

দাঁত ভালো রাখে

গবেষণায় বলা হয়, আনারসের মধ্যে থাকা ব্রমেলেইন দাঁতকে ভালো রাখতে কাজ করে। 

দৃষ্টিশক্তি ভালো করে

আনারসের মধ্যে রয়েছে বেটা কেরোটিন। এটি চোখের জন্য ভালো। প্রতিদিন আনারস খাওয়া বয়স জনিত চোখের সমস্যা কমাতে কাজ করে।  

এ ছাড়া ব্রমেলেইন বিভিন্ন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

আনারসের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-

আনারসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা থাকলেও এটি সবার জন্য ঠিক উপযোগী নয়। অনেকেরই আনারস অ্যালার্জির সমস্যা যেমন বিভিন্ন ধরনের চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি হতে পারে।

আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। আনারসের মধ্যে অতিরিক্ত চিনি আমাদের দেহে রক্তের চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিক রোগীরা আনারস বেশি না খেয়ে সপ্তাহে দুদিন খেতে পারেন। আনারস একটি অ্যাসিডিক ফল। তাই খালি পেটে ফলটি খেলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথার তৈরি হতে পারে।

আনাসর ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া যাবে-

আনারস আর দুধ একসঙ্গে খাওয়া যায় না, এটি একটি কুসংস্কার। এখন পর্যন্ত আনারস ও দুধের মধ্যে এমন কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া খুঁজে পাওয়া যায়নি, যার ফলে এদের একসঙ্গে খেলে সেটা মানুষের জীবনহানি করবে। বর্তমানে অনেক খাবারেই দুধ ও আনারস একসঙ্গে মেশানো হয় এবং সারা বিশ্বেই তা খাওয়া হয়। কোনো গ্যাস্ট্রিকের রোগী যদি খালি পেটে আনারসের সঙ্গে দুধ খান, তাহলে তার পেটে প্রচণ্ড ব্যথার ‘ফুড ট্যাবু’র উদ্ভব হতে পারে। রক্ত তরল করার জন্য যে ওষুধ বানানো হয় তাতে আনারস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ফল দেহে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদান করে থাকে। তাই যাদের আনারস খেলে এসব সমস্যায় ভোগেন তারা অবশ্যই আনারস থেকে দূরে থাকবেন।

আনারস একটি অ্যাসিটিক এবং টকজাতীয় ফল। দুধের মধ্যে যে কোনো টকজাতীয় জিনিস দিলে দুধ ছানা হয়ে বা ফেটে যেতে পারে। ফলে হতে পারে বদহজম, পেটফাঁপা বা পেট খারাপের মতো সমস্যা। তবে এতে বিষক্রিয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, খালি পেটে সকালে আনারস খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। তবে আপনি যদি সকালের নাশতার পর ফল হিসেবে আনারস খান তাহলেও মিলবে অসংখ্য উপকারিতা। তাই ত্বকের জেল্লা বাড়ানোর পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে রসাল ও পুষ্টিকর এই ফলটি নিয়মিত ডায়েট লিস্টে রাখতে পারেন।