সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম

মানসিক চাপে আছেন? জেনে নিন সমাধান

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম

মানসিক চাপে আছেন? জেনে নিন সমাধান

মানসিক চাপ। প্রতীকি ছবি

আপনার কি আজ মনটা ভারী ভারী লাগছে? কাজের টেনশন, জীবনের দৌড়ঝাঁপ, সম্পর্কের টানাপোড়েন, সব মিলিয়ে মাথা যেন আর কাজ করছে না? চিন্তার কিছু নেই! বিশ্বাস করুন, আপনি একা নন। মানসিক চাপ আমাদের জীবনের একেবারে স্বাভাবিক একটা অংশ। কিন্তু ভালো খবর হলো- এ পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব! চলুন, আজ আমরা একসঙ্গে খুঁজে নেই সহজ কিছু উপায়, যা আপনার মনকে দেবে নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা আর স্বস্তির শ্বাস।

চলুন আগে জেনে নেই মানসিক চাপ কি। মানসিক চাপ হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা, যখন মানুষ উদ্বেগ, ভয়, অস্থিরতা, অথবা অতিরিক্ত দায়িত্বের ভারে বিপর্যস্ত বোধ করে। এটা সাধারণত তখনই হয় যখন কোনো পরিস্থিতি বা চাহিদা ব্যক্তির সামর্থ্যের বাইরে বলে মনে হয়।

মানসিক চাপের বৈশিষ্ট্য 

অসুবিধাজনক অনুভূতি: মানসিক চাপের সময় মানুষ উদ্বেগ, ভয়, বা অতিরিক্ত দুঃখ বোধ করে। মনের শান্তি নষ্ট হয়।

শারীরিক প্রতিক্রিয়া: দেহের বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়, যেমন– হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া, পেশীতে টান, মাথাব্যথা বা পেটের সমস্যা।

আচরণগত পরিবর্তন: চাপের মধ্যে মানুষ অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে-যেমন অল্পতেই রাগারাগি, আলাদা হয়ে থাকা, বা খাওয়া-ঘুমের অভ্যাস বদলে ফেলা।

চিন্তার অস্পষ্টতা: চিন্তা করার স্পষ্টতা কমে যায়। সহজ সিদ্ধান্ত নিতেও দুশ্চিন্তা হয়, মনঃসংযোগ ব্যাহত হয়।

স্থায়ী বা অস্থায়ী: কখনো মানসিক চাপ অল্প সময়ের জন্য হয় (যেমন পরীক্ষার আগে), আবার কখনো দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে (যেমন দীর্ঘদিনের পারিবারিক সমস্যা)।

আবেগের পরিবর্তন: অনেক সময় চাপের কারণে মন দ্রুত খারাপ হতে পারে, হতাশা বা ক্রোধের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

সামাজিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব: চাপের ফলে বন্ধুবান্ধব, পরিবার বা সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে।

মানসিক চাপে যা ঘটে

মানসিক চাপের ফলে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন ও কর্টিসল নিঃসরণ, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মাংসপেশিতে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হওয়া, পাকস্থলীর অসুখ, অহেতুক শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা বাড়া, এমনকি জন্মদান ক্ষমতা পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এসবের প্রতিক্রিয়ায় অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয়, হার্ট ফেইলিওর, হার্ট অ্যাটাক, পাকস্থলীর আলসার বা পেটের পীড়া ইত্যাদি অসুখ হতে পারে।

মানসিক চাপ এড়ানোর কিছু কার্যকর উপায়

সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা করুন: কাজের তালিকা তৈরি করুন। অগ্রাধিকার ঠিক করুন। সবকিছু একসাথে করার চেষ্টা করবেন না।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো, বা হালকা ব্যায়াম করুন। এটা মন হালকা করে এবং চাপ কমায়।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুম ঠিক না হলে মানসিক চাপ দ্রুত বেড়ে যায়।

পজিটিভ চিন্তা করুন: নেতিবাচক চিন্তা কমিয়ে, প্রতিদিন নিজের ভালো কাজ বা সাফল্যের কথা ভাবুন।

মেডিটেশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করুন: গভীর শ্বাস নিন, ধীরে ধীরে ছাড়ুন। মেডিটেশন মন শান্ত রাখে এবং চিন্তা পরিষ্কার করে।

নিজেকে সময় দিন: নিজের পছন্দের কোনো কাজ করুন— যেমন বই পড়া, গান শোনা, আঁকা বা ঘুরতে যাওয়া।

নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝুন: সবকিছু একা সামলানোর চেষ্টা করবেন না। যেখানে দরকার সেখানে ‘না’ বলতে শিখুন।

কাউকে মনের কথা বলুন: বন্ধু, পরিবার, বা কাউন্সেলরের সঙ্গে নিজের অনুভূতি শেয়ার করুন। চাপ হালকা হবে।

সুস্থ খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন: ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত চিনি এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর খাবার (শাক-সবজি, ফল) মানসিক শক্তি বাড়ায়।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে ইসলামী ব্যবস্থা

দুশ্চিন্তা ও হতাশার কারণে মানুষের মাঝে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। পৃথিবীতে এমন কোনো রোগ নেই যার চিকিৎসা আল্লাহতায়ালা দেননি। মানসিক চাপসহ নানাবিধ রোগবালাই থেকে উত্তরণে ইসলামী ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর।

নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত।

বেশি বেশি ইসতেগফার করা।

বেশি বেশি দরুদ পড়া।

পরকালের কথা স্মরণ করা।

আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল করা।

দোয়া করা।

অনেক খাবার আছে যেগুলো প্রাকৃতিকভাবে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এগুলো মস্তিষ্কে সুখের হরমোন (যেমন সেরোটোনিন, ডোপামিন) বাড়াতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ কমানোর খাবার

ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং স্ট্রেস হরমোন কমায়।

গ্রিন টি: গ্রিন টি-তে থাকে ‘থিয়ানিন’ নামক একটি উপাদান, যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।

অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডোতে রয়েছে পটাসিয়াম এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও মন শান্ত করে।

বাদাম: বাদাম ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ, যা স্নায়ু শান্ত রাখতে সহায়ক।

বেরি জাতীয় ফল: বেরিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে, যা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমায়।

সবুজ শাক-সবজি: এগুলো মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়।

ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কলা: কলাতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা স্নায়ুকে শান্ত রাখে এবং ভালো ঘুম আনতে সাহায্য করে।

দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার: দুধে ট্রিপটোফ্যান আছে, যা মুড উন্নত করে এবং ঘুম ভালো করে।

ওটস বা ওটমিল: ওটমিল ধীরে ধীরে শক্তি ছড়ায় এবং মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!