সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জোবায়ের রাজু

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম

রম্য গল্প: গুপ্তধন

জোবায়ের রাজু

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম

রম্য গল্প: গুপ্তধন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

এক 


সেলিম ভাই গুণী মানুষ হলেও তার একটি বদস্বভাব আছে। দেখা হলেই তিনি হুটহাট পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে মানিব্যাগ বের করে টাকা মেরে দেন। ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতেও পারি না। সেলিম ভাই আমার পাড়ার সিনিয়র মানুষ। সিনিয়র হলেও তার সঙ্গে আমার যথেষ্ট ভাব। আমি তাকে খুব সম্মান করি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি আমার সম্মানের ধার না ধেরে আমার মানিব্যাগের তাজা শরীর চিকনা করে স্থান ত্যাগ করেন। এই অপকর্মের পাশাপাশি আজকাল তিনি ছোঁ মেরে হাতের জিনিস নিয়ে পালিয়ে যেতে শিখেছেন। ঘটনাটা তাহলে খুলে বলি।
সেদিন বিকেলে বাজার থেকে ফিরছিলাম ব্যাগ ভর্তি লাচ্ছি সেমাই নিয়ে। পথে সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা।
কোথায় যাচ্ছো রঞ্জু?
বাড়ি।
হাতে কি?
সেমাইয়ের ব্যাগ।
সেলিম ভাই এদিক-সেদিক তাকিয়ে আমার একেবারে কাছে আসলেন। আমি ধরেই নিয়েছি সেলিম ভাই এবারও আমার মানিব্যাগের ওপর অবিচার চালাবেন। কিন্তু আমার ধারণাকে বদলে দিয়ে সেলিম ভাই আমার হাত থেকে সেমাইয়ের ব্যাগ নিয়ে দিলেন ভোঁ দৌড়। ঘটনাটা শেয়ার করলাম বাপ্পির সঙ্গে। বিরক্ত ভাব প্রকাশ করে বাপ্পি বলল, ‘আর বলিসনে। আমার ফেরদৌসী আপার বাড়ি যাচ্ছিলাম সেদিন মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে। সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে রাস্তায় দেখা। আমার হাত থেকে মিষ্টির প্যাকেট থাবা মেরে সেলিম ভাই দৌড়ে পালালেন।’
এই ঘটনা শোনে জনিরও একই বক্তব্য। আফসোস করে জনি বলল,
‘গতকাল বাজার থেকে আমের আচার কিনে ফিরছিলাম। পথে সেলিম ভাই আমার আমের আচারের বোয়াম কেড়ে নিয়ে দৌড়।’
বাপ্পি আর জনির কথার আলোকে বোঝা যায় সেলিম ভাইয়ের এই বদস্বভাব অন্যদের মাঝেও প্রভাব বিস্তার করেছে। তাকে এভাবে প্রশ্রয় দেওয়া যায় না।

দুই


ইদানীং লোডশেডিং বেশ ঝামেলা তৈার করেছে। গত পরশুদিন কারেন্ট গেল, এখনো আসার হদিস নেই। দুপুর বেলায় আমাদের ডিপ ফ্রিজ থেকে জঘন্য গন্ধ আসতে লাগলো। কারেন্ট নেই বলে ফ্রিজের মালামাল পচতে শুরু করেছে। সেদিন বাজার থেকে আনা যে মাছগুলো আম্মা ফ্রিজে রেখেছেন, সে মাছগুলো পচেগলে এক বিশ্রি গন্ধের আবির্ভূত হওয়ার পর আম্মা পলিথিন শুদ্ধ মাছগুলো আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘যা, দূরের কোনো ডোবায় ফেলে দিয়ে আয়, যাতে গন্ধ আশপাশে না আসে।’
পলিথিনের ভেতর পচা মাছ, এটাকে এভাবে নিয়ে বাইরে বের হলে লোকে কি বলবে, এটা ভেবে দুর্গন্ধযুক্ত মাছের পলিথিনটাকে একটি শপিংব্যাগে ভরে রওনা দিলাম বাড়ি থেকে খানিক দূরের জীর্ণ ডোবার উদ্দেশ্যে। পথে সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা। ভাবলাম, যাক বাঁচা গেল। কষ্ট করে দূরের ডোবার সান্নিধ্যে যেতে হবে না। সেলিম ভাই এটা নিয়ে ভাগলেই হলো।
কিরে রঞ্জু, কই যাস?
বাজারে।
ব্যাগে কি?
কাউকে বলবেন?
না।
আগে কথা দেন।
দিলাম।
শিওর?
হ্যাঁ।
ব্যাগে গুপ্তধন।
বলো কি?
হ্যাঁ। আমাদের ঘরের পেছনে মাটির তলে গুপ্তধন পাওয়া গেছে। আগের যুগের রাজা বাদশাহরা এগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে গেছেন। আজ আমরা পেয়েছি। যাই, পথ থেকে সরেন। বাজারে নিয়ে যাচ্ছি বিক্রি করতে। সেলিম ভাই সরছেন না। তিনি এদিক-সেদিক তাকাচ্ছেন। মনে মনে বলি, ‘প্লিজ সেলিম ভাই, ব্যাগটা থাবা মেরে ভাগেন!’
ভাবতে না ভাবতেই সেলিম ভাই আমার হাত থেকে পচা মাছের ব্যাগটাতে গুপ্তধনের ব্যাগ ভেবে থাবা মেরে দৌড়ে পালাতে লাগলেন। চিৎকার করে বললাম, ‘সেলিম ভাই, এটা ঠিক না। গুপ্তধনের ব্যাগটা দিয়ে যান।’
আমার কথাকে পরোয়া না করে সেলিম ভাই ঝড়ের বেগে দৌড়াতে লাগলেন। আমি খুব খুশি, কষ্ট করে আমাকে ডোবায় যেতে হয়নি।

আরবি/ আরএফ

Link copied!