শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ১১:৪৯ এএম

গ্যাস্ট্রিক? জানুন কারণ, প্রতিরোধ ও করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ১১:৪৯ এএম

গ্যাস্ট্রিক? জানুন কারণ, প্রতিরোধ ও করণীয়

ছবি: সংগৃহীত

অফিসে কাজের চাপ, অনিয়মিত খাবার খাওয়া, ঝাল-মশলাদার খাবারের প্রতি আসক্তি- এসবের ফলে অনেকেই প্রতিদিন গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় ভুগছেন। কখনো হালকা অস্বস্তি, কখনো আবার বুক জ্বালাপোড়া কিংবা পেটে ব্যথা, যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বেশ দুর্বিষহ করে তোলে। অনেকেই এটিকে সাময়িক সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করেন, কিন্তু দীর্ঘদিন অবহেলা করলে এটি আলসার বা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD)-এর মতো জটিল রোগের কারণ হতে পারে।  

তবে চিন্তার কিছু নেই! সঠিক খাবার নির্বাচন, নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন এবং কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন জেনে নিই গ্যাস্ট্রিকের কারণ, প্রতিরোধের উপায়, কী খাবেন আর কী খাবেন না এবং কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি কেন হয়?  

গ্যাস্ট্রিক মূলত পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণের কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত খাবার হজমের জন্য অ্যাসিড প্রয়োজন হয়, কিন্তু অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হলে পাকস্থলীর দেয়ালে জ্বালাপোড়া, ব্যথা ও অস্বস্তি দেখা দেয়। গ্যাস্ট্রিক হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো-

অনিয়মিত খাবার খাওয়া: দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা বা অনিয়মিত সময়ের মধ্যে খাবার খেলে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।  
অতিরিক্ত ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার: এই ধরনের খাবার পাকস্থলীর আস্তরণে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।  
চা, কফি ও সফট ড্রিংকস: এগুলো পাকস্থলীতে অ্যাসিডের নিঃসরণ বাড়ায়।  
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড: এই খাবারগুলো হজম হতে বেশি সময় নেয়, ফলে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।  
ধূমপান ও অ্যালকোহল: এগুলো পাকস্থলীর অ্যাসিড বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।  
স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ পাকস্থলীর অ্যাসিডের ভারসাম্য নষ্ট করে।  

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায়  

গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধ করা সম্ভব কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে। যেমন-

নিয়মিত সময়মতো খাবার খান: প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।  
অতিরিক্ত মশলা এড়িয়ে চলুন: কম মশলাযুক্ত ও সহজপাচ্য খাবার খান।  
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান: তাড়াহুড়ো করে খেলে হজমের সমস্যা হয়।  
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবেন না: এসব খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়।  
প্রচুর পানি পান করুন: হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে ও অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।  
কোমল পানীয় ও কফি এড়িয়ে চলুন: এসব পানীয় পাকস্থলীর অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়।  
ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন: এগুলো পাকস্থলীর ক্ষতি করে।  
মানসিক চাপ কমান: যোগব্যায়াম, মেডিটেশন ও পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।  

গ্যাস্ট্রিকের জন্য কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত?  

গ্যাস্ট্রিক এড়াতে নিচের খাবারগুলো যতটা সম্ভব কম খাওয়া ভালো-

  • ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার  
  • ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড  
  • চা, কফি ও সফট ড্রিংকস  
  • অতিরিক্ত টকজাতীয় ফল (লেবু, আমড়া, আচার)  
  • অতিরিক্ত পেঁয়াজ ও রসুন  
  • অ্যালকোহল ও ধূমপান  

গ্যাস্ট্রিকের জন্য ভালো খাবার  

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে নিচের খাবারগুলো উপকারী- 

  • গোলদাল (ওটস): সহজপাচ্য এবং পাকস্থলীর অ্যাসিড কমায়।  
  • কলা: পাকস্থলীর অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।  
  • দই: ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকার কারণে হজমে সাহায্য করে।  
  • কাঁচা শাকসবজি: শসা, গাজর, লাউ ইত্যাদি পাকস্থলীর জন্য ভালো।  
  • আলু ও মিষ্টি কুমড়া: এগুলো সহজপাচ্য এবং অ্যাসিড কমায়।  
  • চিকেন ও মাছ: গ্রিল বা সিদ্ধ করে খেলে হজমের জন্য ভালো।  
  • নারকেলের পানি: এটি পাকস্থলীর জন্য প্রশান্তিদায়ক।  

গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন  

সঠিক জীবনযাত্রা মেনে চললে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। তাই শুধু গ্যাস্ট্রিক না, অন্য অনেক শারীরিক সমস্যা এড়াতেও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন নিয়ে আসা জরুরী। যেসব পরিবর্তন আপনার জন্য সুস্থতা নিয়ে আসতে পারবে সেগুলো হলো- 

  • সঠিক সময়ে খাবার খান
  • একসঙ্গে বেশি না খেয়ে বারবার অল্প করে খান
  • খাবারের পরপরই শুয়ে পড়বেন না, অন্তত ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন
  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন
  • স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা কমান
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান (৬-৮ ঘণ্টা)

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?  

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মাঝে মাঝে হলে সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত—  

  • গ্যাস্ট্রিকের কারণে নিয়মিত বুক জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হলে
  • অতিরিক্ত বমি বমি ভাব বা বমি হলে
  • ওজন দ্রুত কমে গেলে
  • রক্তবমি বা কালো রঙের পায়খানা হলে
  • বুকের ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট হলে

এগুলো মারাত্মক সমস্যা নির্দেশ করতে পারে, তাই সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।  
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন কিছু নয়, যদি আমরা নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করি এবং সঠিক খাবার নির্বাচন করি। ঝাল-মশলা, ভাজাপোড়া কমিয়ে এবং নিয়মিত সময়মতো খাবার খেলে এই সমস্যা থেকে অনেকাংশেই মুক্ত থাকা সম্ভব। তবে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।  

গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণে রাখুন, সুস্থ থাকুন!

আরবি/এসএস

Link copied!