সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১২:১৪ পিএম

চালকুমড়ার উপকারিতা-অপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১২:১৪ পিএম

চালকুমড়ার উপকারিতা-অপকারিতা

চাল কুমড়া ছবি: সংগৃহীত

চালকুমড়া বা জালিকুমড়া এক প্রকার ফল জাতীয় সবজি। চালকুমড়া উদ্ভিদ লতা জাতীয়। এটি দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্ব এশিয়াতে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়।

চাল কুমড়ায় বেশ কিছু ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

চাল কুমড়ায় থাকা ভিটামিন

ভিটামিন সি: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ভিটামিন বি গ্রুপ: শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। স্নায়ুতন্ত্র ঠিক রাখে।

অন্যান্য পুষ্টি উপাদান
ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক

আয়রন: রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনে সাহায্য করে

ফসফরাস: কোষের কার্যক্রম ঠিক রাখে

ডায়েটারি ফাইবার: হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

পটাশিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

চাল কুমড়া প্রায় ৯৫-৯৬% জল দিয়ে তৈরি, তাই এটি শরীর ঠান্ডা রাখে এবং হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করে।

চাল কুমড়া বা সাধারণ কুমড়া চাষ করা তুলনামূলকভাবে সহজ এবং লাভজনক। নিচে কুমড়া চাষের পদ্ধতি ধাপে ধাপে দেওয়া হলো:

জমি নির্বাচন ও প্রস্তুতি: উর্বর, জলনিকাশযুক্ত, দোঁআশ বা বেলে দোঁআশ মাটি সবচেয়ে ভালো। জমি ২–৩ বার চাষ দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে মই দিয়ে সমান করে নিতে হবে। প্রয়োজনে জৈব সার (গোবর/কম্পোস্ট) প্রয়োগ করতে হবে।

বীজ বপন
সময়:খরিফ মৌসুমে (ফাল্গুন–চৈত্র) রবি মৌসুমে (আশ্বিন–কার্তিক)
বীজের হার: প্রতি বিঘায় ২০০–২৫০ গ্রাম বীজ যথেষ্ট।
বীজ রোপণের আগে ৮–১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে পারো বা ট্রাইকোডার্মা মিশিয়ে শোধন করা ভালো।

গাছের ব্যবধান:
সারি থেকে সারি: ২.৫–৩ ফুট
গাছ থেকে গাছ: ২–২.৫ ফুট
এক একটি গর্তে ২–৩টি বীজ বপন করতে পারেন।

 সেচ ও পানি নিষ্কাশন: গাছে ফুল আসার সময় এবং ফল ধরার সময় সঠিকভাবে সেচ দিতে হবে। অতিরিক্ত পানি জমলে গাছ পচে যেতে পারে, তাই জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা জরুরি।

সার ব্যবস্থাপনা: জৈব সার (গোবর): প্রতি বিঘায় ৮–১০ টন

রাসায়নিক সার (প্রতি বিঘা):

ইউরিয়া: ৩০–৪০ কেজি

টিএসপি: ২০–২৫ কেজি

এমওপি: ২০ কেজি

এই সারগুলো ভাগ করে গাছ লাগানোর সময় এবং ২০–২৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।

রোগ-বালাই ও প্রতিকার: পাউডারি মিলডিউ, পাতার দাগ রোগ—বোর্ডক্স মিশ্রণ বা ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিপজ্জনক পোকা: ফল ছিদ্রকারী পোকা, লেদা পোকা—নিয়মিত নজরদারি এবং জৈব কীটনাশক/নিমতেল স্প্রে করা উপকারী।

ফল সংগ্রহ: ফুল ফোটার ৮০–১২০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায় (জাত ভেদে ভিন্ন হতে পারে)। চাল কুমড়া পরিপক্ক হলে খোসা শক্ত হয়ে যায় এবং টোকা দিলে বোঝা যায়।

চাল কুমড়ার অনেক উপকারিতা আছে! এটি শুধু খাবার হিসেবে নয়, একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। 

চাল কুমড়ার উপকারিতা

শরীর ঠান্ডা রাখে: চাল কুমড়া শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা ভাব এনে দেয়, যা গরমে বা দাহজনিত সমস্যায় দারুণ কার্যকর। এটি গ্রীষ্মকালে খুব উপকারী একটি সবজি।

ডায়ারিয়া ও অম্লত্বে উপকারী: পাকস্থলীর অম্লতা বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় উপশম করে। হালকা হজমযোগ্য হওয়ায় ডায়রিয়ায় খাওয়া যায়।

হৃদযন্ত্র ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: চাল কুমড়ায় থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে: চাল কুমড়া মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখে এবং মানসিক চাপ হ্রাসে সাহায্য করে। এটি মেডিটেশন ও যোগব্যায়ামের সাথে খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

হজম শক্তি বাড়ায়: চাল কুমড়ায় থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং পরিপাকতন্ত্রকে উন্নত করে। লিভারের জন্যও এটি সহায়ক।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: চাল কুমড়ায় প্রাকৃতিক শর্করা কম থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এতে থাকা ভিটামিন C এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে।

চর্মরোগ ও চুলের যত্নে উপকারি: চাল কুমড়ার রস ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করা হয়।

চাল কুমড়ার জুস: চাল কুমড়ার রস খালি পেটে খেলে দেহে টক্সিন বের করে দেয়। ওজন কমাতে সাহায্য করে। রক্ত পরিশোধনে সহায়ক।

চাল কুমড়া যতটা উপকারী, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি কিছু অপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে বা ভুল উপায়ে গ্রহণ করা হয়।

চাল কুমড়ার অপকারিতা

অতিরিক্ত ঠান্ডা ভাব সৃষ্টি করতে পারে: যেহেতু চাল কুমড়া শরীর ঠান্ডা রাখে, তাই যাদের শরীর আগে থেকেই ঠান্ডা ধরনের , তাদের সর্দি, কাশি, বা ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় বা শীতকালে নিয়মিত খেলে ঠান্ডাজনিত অসুস্থতা বাড়তে পারে।

অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে চাল কুমড়া খাওয়ার পর অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন চুলকানি, ত্বকে ফুসকুড়ি বা হালকা ফোলাভাব। খুবই বিরল হলেও সতর্ক থাকা ভালো।

ওষুধের সঙ্গে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া: ডায়াবেটিস বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কিছু ওষুধের সাথে চাল কুমড়া অতিরিক্ত রক্তচাপ বা রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। তাই ওষুধ খাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পরিমাণমতো খাওয়া উচিত।

রস বেশি খেলে পেট খারাপ হতে পারে: চাল কুমড়ার রস খালি পেটে অতিরিক্ত খেলে পেট ফাঁপা বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। রস খাওয়ার আগে সামান্য আদা বা তুলসি পাতা মিশিয়ে খেলে এ সমস্যা কমে।

নকল চাল কুমড়ার রস বা প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্ষতি: বাজারে তৈরি কিছু প্রসেসড চাল কুমড়ার জুসে কেমিক্যাল বা সংরক্ষণকারী মিশ্রণ থাকে, যেগুলো স্বাস্থ্যহানিকর হতে পারে।

আরবি/এসবি

Link copied!