ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নতুন আশায় কাটছে দিন

মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ১১:৩১ এএম

নতুন আশায় কাটছে দিন

ছবি: সংগৃহীত

অধিকারের জন্য মানুষ লড়ে, অধিকারের জন্য মানুষ মরেও। বাংলাদেশে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল দেশের অবকাঠামোতে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অসন্তোষের ফলাফল। এই আন্দোলন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একটি যৌথ প্রচেষ্টা, যেখানে তারা বিভিন্ন প্রকার বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়েছিলেন। আন্দোলন এতটাই ব্যাপক ছিল যে, দেশের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলে এবং শেষ পর্যন্ত তৎকালীন সংসদীয় সরকার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে এটি সমাপ্ত হয়। তবে আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন মূলত শিক্ষার্থীদের দাবি থেকে শুরু হয়। পরে সেখানে শিক্ষকরা যোগ দেন। আন্দোলনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস স্থগিত ছিল, পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তিত হয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতির ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা পিছিয়ে যায়, যা তাদের ভবিষ্যতের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি, সরকার পরিবর্তনের ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। যদিও নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। নতুন আশায় দিন কাটছে শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিক শুর দৈনিক রুপালী বাংলাদেশকে বলেন, “ মূলত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়, যার ফলে অনেকে নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এতে পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন “তবে, দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাধিত হওয়ায় এই ক্ষতিকে কিছুটা মেনে নেওয়া যেতে পারে। আমি আশা করি, খুব দ্রুত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়া হবে, এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। নতুন করে সাজানো হবে সবকিছু আর এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে এবং শিক্ষাব্যবস্থা পুনরায় সচল হবে।”

বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত পূর্ণ কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার। নতুন সিলেবাস, পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ক্লাস পরিচালনার জন্য একটি জরুরি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত।

যদিও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অস্থির হয়ে উঠেছে, কিন্তু এর ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের নতুন সুযোগও তৈরি হয়েছে। নতুন সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করা এবং একটি আরোও সাম্যবাদী ও সমতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে আসতে পারবে এবং দেশ আবারও একটি স্থিতিশীল শিক্ষা পরিবেশের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। 

আরবি/জেআই

Link copied!