অনলাইনে পার্ট-টাইম চাকরি শুধুমাত্র স্টুডেন্টদের হাত খরচ চালাতেই সাহায্য করে; তা নয়। বরং এটি আপনার বায়োডেটাকেও বেশ সমৃদ্ধ করে তোলে; যা ভবিষ্যতে কোথাও চাকরি করতে গেলে অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজে দিবে। পার্ট-টাইম জব হিসাবে ট্রান্সলেটর বা অনুবাদকের পেশা বেছে নিতে পারেন। এতে লাগবে না কোন বিনিয়োগ।
একজন ট্রান্সলেটরের কাজ হল তথ্য বা কোনো লেখাকে এক ভাষা থেকে অন্য ভাষাতে অনুবাদ করে। ট্রান্সলেটরের কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই দুই বা ততোধিক ভাষায় কথা বলা এবং লিখতে পারদর্শী হতে হবে। আপনি যদি জার্মান, ফ্রেঞ্চ বা স্প্যানিশের মতো উচ্চ-চাহিদা সম্পন্ন ভাষাগুলোর মধ্যে একটি নিয়ে কোনো ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা করে থাকেন তবে আপনি সহজেই এই কাজের মাধ্যমে মাসে নূন্যতম ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
অনুবাদকের মাধ্যমে কোন অফিসিয়াল কাগজ জমা করলে একদিকে যেমন কাজটি একদম নির্ভুল হয়; অন্যদিকে সংসারের খরচ চালাতেও আয়ের একটা রাস্তা বের হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাজের চাপ বেড়ে যেতে থাকে। পরিচিতির পরিসর কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় তত দিনে সম্মানীর অঙ্কটাও বেড়ে যায় দ্রুত। একপর্যায়ে চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে অনুবাদের কাজে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারবেন। দেশের প্রখ্যাত সব এনজিও, করপোরেট সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন সংগঠন আপনার কাজ দেখে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।
অনুবাদের পাশাপাশি সম্পাদনা, ট্রান্সক্রাইব, বানান দেখা, কনটেন্ট লেখা, আরও নানা ধরনের কাজের বিশাল সুযোগ আছে। পূর্ণকালীন পেশাদার অনুবাদকের অভাবের কারণে এখানে কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজন আরও বেশকিছু দক্ষতা। প্রথমেই বলব ‘সোর্স ল্যাঙ্গুয়েজ’ বা যেই ভাষা থেকে অনুবাদ করতে ইচ্ছুক; সেই ভাষার ওপর সহজলভ্য কোনো কোর্স করে ফেলতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিসহ বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী কোর্স বা কর্মশালা করানো হয়। বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বিখ্যাত অনুবাদকদের সান্নিধ্যে অনুবাদের নানা ধরনের কায়দা-কৌশল এখানে হাতে কলমে শিখতে পারবেন। আপনি যদি কোনো বিশেষ শাখার লেখা অনুবাদ করতে আগ্রহী হন; তাহলে সেই শাখায় ব্যবহৃত শব্দ ও পরিভাষা সম্পর্কে ব্যাপক পরিসরে পড়াশোনা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত পরিভাষা শব্দকোষগুলো আপনাকে সাহায্য করবে। ভাষার দক্ষতার সঙ্গে কম্পিউটারে কাজ করার দক্ষতা, টাইপিং স্পিড, অনুবাদের টুল ব্যবহারের দক্ষতা জরুরি। প্রস্তুতি শেষের পর প্রথম দিকে আপনার ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কের মধ্য থেকেই কাজ খুঁজে নিতে হবে। অনলাইনে অনেক প্লাটফর্ম আছে যার মাধ্যমে ফ্রিলান্সিং করে ট্রান্সলেটর হিসেবে কাজ করতে পারেন। এখানে কাজের মান ধরে রাখতে না পারলে খুব বেশি দিন কাজ করা সম্ভব হয় না। কাজেই প্রতিটি ছোট-বড় কাজকে সমান গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুন। কোন কাজের জন্য অনুবাদের কোন ধরনটি অনুসরণ করবেন, তা বুঝে নিন। অনেক প্রতিষ্ঠান ইদানীং অভ্যন্তরীণ কাজের সুবিধার্থে পূর্ণ মেয়াদে অনুবাদক নিয়োগ দিয়ে থাকে। ফ্রিল্যান্সিং করতে না চাইলে সেসব প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। আপনি ভালো করলে প্রতিষ্ঠান যেমন আপনাকে নিয়ে ভাববে; তেমনি আপনিও দেশসেরা অনুবাদক হয়ে উঠবেন।
আপনার মতামত লিখুন :