ঢাকার ধানমন্ডিতে পিলখানার পাশে এ বছরের শুরুর দিকে উদ্বোধন হওয়া নতুন রেস্টুরেন্ট ‘কাচ্চি ভাবী’ অল্প সময়েই ভোজনরসিকদের মন জয় করে নিয়েছে। সুস্বাদু খাবার এবং অনন্য পরিবেশের কারণে রেস্টুরেন্টটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢাকায় এমন অসংখ্য কাচ্চির রেস্টুরেন্ট থাকতেও ‘কাচ্চি ভাবী’ যে এত দ্রুত খ্যাতি অর্জন করতে পারবে, তা অনেকেই ভাবেননি। তবে মালিক সোহানুর রহমানের সঠিক পরিকল্পনা এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতি তার ভালোবাসা এই সাফল্য এনে দিয়েছে। সঠিক স্বপ্ন এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে যে কোনো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব, ‘কাচ্চি ভাবী’ তারই প্রমাণ।
বাঙালি সবসময়ই ভোজনপ্রিয়, আর সেই ভোজনের তালিকায় কাচ্চি অন্যতম। ঢাকায়ই এর উৎপত্তি এবং এখানেই কাচ্চির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। সোহানুর রহমানের স্বপ্ন ছিল ঐতিহ্যবাহী এই খাবারকেই তার ব্যবসার মূলধারায় নিয়ে আসা। তিনি বলেন, ‘কাচ্চি যেহেতু আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, তাই এটিকে কেন্দ্র করেই রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার ইচ্ছা ছিল। তবে সময় ও সুযোগের অভাবে কিছুটা দেরি হয়ে যায়। অবশেষে গত বছরের শেষে সেই সুযোগ পেয়ে যাই এবং কাজ শুরু করি। এ বছর ৫ ফেব্রুয়ারি আমরা ‘কাচ্চি ভাবী’ রেস্টুরেন্ট উদ্বোধন করি।’ রেস্টুরেন্টটি নতুন হলেও এর কাস্টমারদের সংখ্যা দেখে তা বুঝতে পারা যায় না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবসময়ই ভীড় লেগে থাকে, আর পুরো রেস্টুরেন্ট জুড়ে সবসময় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজমান।
সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমরা চেয়েছি ভিন্ন কিছু করতে। আমরা আমাদের ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং খাবারের স্বাদ সবকিছুতেই ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাচ্চি ঝরঝরে এবং হালকা; এতে কোনো অতিরিক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করা হয় না। খাঁটি, ভেজালমুক্ত খাবার পরিবেশনই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
‘কাচ্চি ভাবী’ নামটি অনেকের কাছেই ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের সাথে মিলে যাওয়ার কারণে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে সোহানুর রহমান পরিষ্কারভাবে জানান, ‘কাচ্চি ভাবী’ সম্পূর্ণ আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান। কাচ্চি ভাইয়ের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। রেস্টুরেন্ট ওপেনিং এর আগে আমরা অসংখ্য নাম ভেবেছি; কিন্তু কোনোটাই মন মতো হচ্ছিলো না। অবশেষে এই নামটি পছন্দ হয়। পরে কাচ্চি ভাই -এর সাথে মিলে যাওয়ার বিষয়টা বুঝতে পারি। তবে এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। এতে আমাদের প্রচারণা আরও সহজ হয়েছে।’
শুধু ভালো খাবারই নয়, কাস্টমারের সন্তুষ্টির দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছেন সোহানুর রহমান। তিনি জানান, ‘আমাদের স্লোগান হলো ‘একবার খাবেন তো বারবার খাবেন’। খাবারের মান ভালো হলে মানুষ বারবার ফিরে আসে। আর একবার যারা আসেন, তারা তাদের ইতিবাচক অভিজ্ঞতা শেয়ার করে অন্যদেরকেও আমাদের এখানে নিয়ে আসেন।’ এভাবেই ধীরে ধীরে ‘কাচ্চি ভাবী’ ঢাকার ভোজনরসিকদের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য নাম হয়ে উঠছে।
বর্তমানে রেস্টুরেন্টটির একটি মাত্র আউটলেট থাকলেও খুব শিগগিরই মিরপুরে আরও একটি আউটলেট চালু হতে যাচ্ছে। এছাড়া ভবিষ্যতে আরও আউটলেট খোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। ‘কাচ্চি ভাবী’ সোহানুর রহমানের স্বপ্নের প্রতিফলন, আর এই স্বপ্নের পথে তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :