ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

মায়া কাটাতে মহামায়া

আরফান হোসাইন রাফি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৪, ১২:০৫ পিএম

মায়া কাটাতে মহামায়া

ছবি: সাকিবুল হাসান

‘পুরনো পকেট থেকে উঠে এল কবেকার শুকনো গোলাপ। কবেকার? কার দেওয়া? কোন মাসে? বসন্তে না শীতে?’ পূর্ণেন্দু পত্রীর এই কবিতার মতো স্মৃতিরা যখন হয়ে উঠে বড় উচ্ছৃঙ্খল।  সুবিন্যস্ত জীবনে তখন বয়ে যায় অকস্মাৎ মায়ার ঝড়। থমকে দাঁড়ায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এবং শ্বাসনালিতে ক্রমশ বাড়তে থাকে অস্থিরতা।  তাই সে সময়ে  প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগই আপনাকে ফিরিয়ে দিতে পারে স্বস্তির নিঃশ্বাস। কিন্তু  কোলাহলপূর্ণ বাংলাদেশে এমন নির্জনতা কোথায় পাওয়া যায় কিংবা কত টাকায়? এমন প্রশ্নের জবাবে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন ‘ইউনিক বিডি ট্যুর অ্যান্ড ট্যুরিজমের প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘ট্রাভেল বাংলাদেশ’ গ্রুপের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমরা কংক্রিটের একঘেয়েমি জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে প্রকৃতি থেকে প্রতিনিয়ত দূরে সরে যাচ্ছি। যা আমাদের জীবনকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। আসলে জীবনে মায়া নামক যে আবেগে আমরা বাস করি সেসব প্রকৃতির কাছে কিছুই না। প্রকৃতির নির্জনতা আমাদের নিজেকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। তাই সময় করে সবারই প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া উচিত। বাংলাদেশে কম টাকায় যাওয়ার মতো প্রচুর সুন্দর জায়গা আছে যেখানে জীবনকে উপভোগ করা যায় খুব সহজে। কেউ চাইলে মাত্র হাজার টাকায় চট্টগ্রামের মহামায়া লেক ঘুরে আসতে পারেন। এটি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই লেকটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ। মিরসরাইয়ের দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের কোলে মহামায়া লেক গড়ে উঠেছে। সেখানে গিয়ে লেকের টলটলে পানিতে কায়াকিং কিংবা বোটে চড়ে ঘুরে দেখতে পারবেন পুরো লেকের সৌন্দর্য। সে সময় চোখে পড়বে ছোট বড় কিছু দ্বীপ। যেখানে সময় কাটালে মনে হবে যেন পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে বসে আছেন। এছাড়া দেখা মিলবে পাহাড়ের মিতালী স্পর্শে গড়ে উঠা পাহাড়ি গুহা, রাবার ড্যাম এবং  অনিন্দ্য সুন্দর ঝর্ণার। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা সেই ঝর্ণার শীতল পানি আর প্রকৃতির ভাঁজে ভাঁজে রূপের ঝংকার রোমাঞ্চিত  করবে আপনার বেদনাসিক্ত অশান্ত মনকে।’

যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে ট্রেন অথবা বাসে করে প্রথমে চট্টগ্রাম রোডের মিরসরাই থানাধীন ঠাকুর দীঘি বাজারে নামতে হবে। এস আলম, শ্যামলি, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, ঈগল, এনা প্রভৃতি পরিবহনের নন এসি বাস ভাড়া ৪৫০-৫০০ টাকা। এসি বাসের মধ্যে গ্রিনলাইন, সৌদিয়া, সোহাগ, টি আর এইসব বাস ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে মহামায়া লেক যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যে কোনো আন্তঃনগর ট্রেনে এসে ফেনী স্টেশনে নামতে হবে। শ্রেণি ভেদে ট্রেন ভাড়া জন প্রতি ২৫০-১০০০ টাকা। ফেনী স্টেশন থেকে ১০-১৫ টাকা রিকশা/অটো দিয়ে ফেনী মহিপাল বাসস্ট্যান্ড যেতে হবে। সেখান থেকে লোকাল বাসে ৩০-৪০ টাকা ভাড়ায় মিরসরাই এর আগে ঠাকুরদীঘি বাজার নেমে যেতে হবে। তারপর পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে মহামায়া লেক যাওয়া যাবে।

যেখানে থাকবেন : মহামায়া লেকে তাঁবুতে থাকতে পারেন। তবে মহামায়াতে ক্যাম্পিং এ মেয়েদের থাকার অনুমতি নেই, কেবলমাত্র ছেলেরা থাকতে পারবে। এছাড়া মিরসরাই এ থাকার মতো তেমন ভালো কোনো আবাসিক হোটেল নেই। থাকতে চাইলে মিরসরাই এর কাছে সীতাকুণ্ডে কম টাকায় কিছু সাধারণ মানের হোটেল আছে সেখানে থাকতে পারবেন।
 

আরবি/ আরএফ

Link copied!