সামনে বইখাতার স্তূপ নিয়ে টেবিলে বসে এই মুহূর্তে যে চিন্তাটা সবচেয়ে বেশি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তা হচ্ছে, ‘এবার কি করা যায়?’ কারণ আজ শেষ হয়ে গেল এমএসসি শেষ পর্বের শেষ পরীক্ষাটাও! নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করি এবার পরিকল্পনা কি?
যদিও আমাদের দেশে বিষয়ভিত্তিক চাকরির সুযোগ খুবই কম কিন্তু তাবুও চেষ্টা তো করা যেতেই পারে পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে সেই বিষয়েই কাজ করার। বরাবরই পদার্থবিজ্ঞান আমার পছন্দের শীর্ষে অবস্থান করেছে ফলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে আমি পদার্থবিদ্যাকেই বেছে নিয়েছিলাম। ফলে বিগত কয়েক বছর যে শ্রম আর ধৈর্যের সঙ্গে নিয়মিতভাবে পদার্থবিজ্ঞান পড়ছি সেই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞান চর্চাটা ধরে রাখার জন্য পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কিত কোন সেক্টরে কাজ করতে চাই। সেক্ষেত্রে এটমিক এনার্জি কমিশন, আইটি কোম্পানি, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা পদার্থবিদ্যায় শিক্ষকতা এই ক্ষেত্রগুলোতে আমার আগ্রহ অধিক এবং সেভাবে আমি নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। যেহেতু প্রতিষ্ঠান ভেদে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশ্ন করা হয় তাই সেভাবেই পড়াটা গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। সুনির্মল বসুর ভাষায়,
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,
সবার আমি ছাত্র,
নানান ভাবের নতুন জিনিস,
শিখছি দিবারাত্র...’
মূলত স্নাতকের পরপরই চাকরির জন্য টুকটাক পড়াশোনা শুরু করি। তারপর এমএসসির ক্লাস, ল্যাব শুরু হলে সেই পড়াটা আর ভালোমতো চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এখন তা আবার পুরোদমে শুরু করার পালা। বাজারে চাকরির যেসব বই পাওয়া যায় সেই বইগুলো দিয়েই শুরু করেছি। যেমন বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞানের বইগুলো পড়ছি। সেইসঙ্গে যেহেতু শিক্ষকতায় কিছুটা ঝোঁক রয়েছে তাই বিসিএস ও শিক্ষক নিবন্ধন দেওয়ারও পরিকল্পনা আছে। তাই স্কুল কলেজের পদার্থবিজ্ঞানটাও নিয়মিতভাবে অনুশীলনের মধ্যে রাখার চেষ্টা করছি। আসন্ন বিভিন্ন সার্কুলারকে লক্ষ্য রেখে নিয়মিত পড়ার মধ্যে থাকার জন্য ধারাবাহিক রুটিন ফলো করছি। তাছাড়া একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি একজন খুদে ফটোগ্রাফার হিসেবে আমার কিঞ্চিৎখানিক খ্যাতি রয়েছে। সেই অর্থে কিছুটা সময় আমার ক্যামেরার পেছনেও দিতে হয়।
জনাব আইনস্টাইন শিখিয়ে গেছেন, কল্পনা জ্ঞানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ধারণা থেকেই আসে বিজ্ঞান। সেই প্রদর্শিত বিজ্ঞান অনুসারে পছন্দের সেক্টরে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই, এই চিন্তাকে মাথায় রেখেই এগিয়ে চলেছি।
অনুলিখন : সানজিদা আফরিন সোনিয়া
আপনার মতামত লিখুন :