ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

আধুনিক কৃষি সমৃদ্ধির সম্ভাবনা

মাহফুজার রহমান মাহফুজ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম

আধুনিক কৃষি সমৃদ্ধির সম্ভাবনা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাড়ছে মানুষ কমছে কৃষি জমি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটাতে নির্ভরতা বাড়ছে কৃষির ওপর। কিন্তু নির্ভরতা বাড়লেও বাড়ছে না ফসলি জমি। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে একই জমি থেকে অধিক কিংবা বারবার ফসল পাওয়া যায় ভাবতে হচ্ছে সেই ভাবনা।

আর তাই তো কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় কমাতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও  আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।সেই ধারাবাহিকতায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শাহ বাজার এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তি ও কৃষিযন্ত্র ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষকরাও ঝুঁকেছেন আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে। এলাকাটির ৮০ জন কৃষক চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ৫০ একর জমিতে আধুনিক পদ্ধতি ও কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার করে ধান আবাদ করছেন। ইতোমধ্যে কৃষকরা ট্রেতে ধানের চারা উৎপাদন করেছেন। দুই একদিনের মধ্যে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে জমিতে চারা রোপণ করবেন। সনাতন পদ্ধতি পরিত্যাগ করে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষাবাদ করে অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

এ বিষয়ে কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘আগে সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলায় বীজ বপন করে শ্রমিক দিয়ে জমিতে ধান রোপণ করতাম। এবারে কৃষি অফিসের পরামর্শে ট্রেতে চারা উৎপাদন করেছি। অন্য বছরের তুলনায় এবারে ধানের চারা সুস্থ সবল দেখা যাচ্ছে। আশা করি এবারে অধিক ফলন পাব।’

কৃষক নূর মোহাম্মদ নিয়ে বলেন, ‘কৃষিতে লাভের বড় বাধা উৎপাদন খরচ। শ্রমিকের মূল্য বাড়ায় সে খরচ দিনকে দিন বেড়েই চলছে। এবারে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমরা বোরো ধানের আবাদ করছি। জমিতে ধানের চারা রোপণ, খেতের পরিচর্যা এবং ধান কাটার সময় আমাদের আর শ্রমিকের উপর নির্ভর করতে হবে না।’

যন্ত্রের মাধ্যমে সবকিছুই করা হবে। এতে খরচ খুব কম। তাই আমরা আবাদের লাভের আশা করছি। ‘কৃষক সফিয়ার রহমান বলেন, যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে এক দিকে যেমন কমবে কৃষিতে শ্রমিক নির্ভরতা, অপরদিকে কমবে চাষাবাদের খরচ। উৎপাদন ব্যয় কমায় আরও লাভজনক হবে কৃষি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় কমাতে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

আমাদের পরামর্শে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল মালচিং পদ্ধতিতে আবাদ করে অন্য বারের চেয়ে অধিক ফলন পেয়েছেন। কৃষিতে শ্রমিক নির্ভরতা কমিয়ে যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কম খরচে ফসল উৎপাদনে কৃষকরা সমন্বিত সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। ফুলবাড়ীর কৃষিতে সমৃদ্ধি এখন আর কোনো কল্পকথা নয়।

বাস্তবতায় অনুপ্রাণিত হয়ে এখানকার কৃষকেরা এখন আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়েছেন। আশা করি সমৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত রেখে ক্ষুধামুক্ত, খাদ্যে স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ অঞ্চলের কৃষকেরাও ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।’

ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!