ঢাকা শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫
নির্জন দ্বীপের নিঃসঙ্গতম পাখি

কামরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ ‘নাইজেল’

সাহিত্য ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৬:০৮ পিএম

কামরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ ‘নাইজেল’

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বর্তমান সময়ের প্রগাঢ় চিন্তাধারার কবি কামরুল ইসলাম। নির্জনতা ও অস্তিত্ববাদী ভাবনাকে ধারণ করে তিনি লিখতে ভালোবাসেন নিঃসঙ্গতার কবিতা। কিন্তু বই প্রকাশে ছিল তার তীব্র অনীহা। তবে সব ঝঞ্ঝাট ভেঙে এবারের অমর একুশে বইমেলায় আসছে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নাইজেল’। বিস্তারিত জানাতে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি, তুলে ধরেছেন— আরফান হোসাইন রাফি

রূপালী বাংলাদেশ: অনেক প্রতীক্ষার পর আপনার প্রথম বই ‘নাইজেল’ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, আপনার অনুভূতি কেমন?
কামরুল ইসলাম: ভীষণ আনন্দিত আমি। যদিও আগে বই প্রকাশে অনীহা ছিল। কারণ, এটা বেশ ঝামেলার কাজ। 

ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কবিতা খুঁজে খুঁজে একত্র করা, সাজানো, প্রকাশক খোঁজা, কত কী! কাছের মানুষদের উৎসাহে শেষমেশ জটিল কাজটি করার সাহস কিংবা দুঃসাহস হলো।

রূপালী বাংলাদেশ: সাহিত্যজগতে আপানার কীভাবে আসা?
কামরুল ইসলাম: স্কুলজীবনে গান শুনে শুনে সেরকম কিছু লেখার চেষ্টা করতাম। আর চিঠি লেখার অভ্যাস ছিল। তবে কবিতার প্রতি সখ্য গড়ে ওঠে কলেজ জীবনে। কলেজের ইংরেজির শিক্ষক ক্লাসে এসে কবিতা নিয়ে কথা বলতেন। 

তিনি নিজেও কবি এবং ভীষণ সুন্দর আবৃত্তি করেন। তাকে দেখেই কবিতা লেখার আগ্রহ জন্মে। এরপর ধীরে ধীরে চর্চা বাড়ল।  

রূপালী বাংলাদেশ: আপনি তো একজন গণমাধ্যমকর্মী। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এত ব্যস্ততার মধ্যে লেখালেখির সময়টা কীভাবে বের করছেন?
কামরুল ইসলাম: যেকোনো কাজই ব্যস্ততার। আর সাংবাদিকতা তো চব্বিশ ঘণ্টার চাকরি। সারাক্ষণই খবরাখবরের সঙ্গে থাকতে হয়।  বিরামহীন ব্যস্ততার ফাঁকে কবিতাই আমার অবকাশ। এ অবকাশ আসে ওহির মতো। মানে, আয়োজন করে কিংবা ইচ্ছে করে কবিতা লিখতে পারি না আমি।

হঠাৎ কীভাবে যেন ভাবনা আসে। এমনও হয়, আমি কাজের চাপে আছি, এর মধ্যেই হঠাৎ একটা ভাবনা চলে আসে। আবার কোনো গান শুনছি, সেই গান শুনতে শুনতেই দেখা গেল কবিতা লিখে ফেললাম!

রূপালী বাংলাদেশ: আপনার বইয়ের নাম ‘নাইজেল’ কেন?
কামরুল ইসলাম: নামটা শুনে সবাই এই প্রশ্ন করছেন! নাইজেলের বেশ কিছু অর্থ আছে। তবে আমি নাইজেল ব্যবহার করেছি, মূলত একটি পাখির কথা ভেবে। গ্যানিট প্রজাতির এ পাখি ছিল নিউজিল্যান্ডের একটি নির্জন দ্বীপে। সেই গোটা দ্বীপে একমাত্র পাখি হয়ে বেঁচে ছিল নাইজেল। 

এ জন্য তাকে বলা হয়, পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম পাখি। আর আমার বইয়ের প্রায় সব কবিতায় নিঃসঙ্গতা, বিষণ্ণতার ছাপ রয়েছে। তা ছাড়া আমি কিংবা আমরা প্রত্যেকেই কি কখনো না কখনো নিজেকে নিঃসঙ্গ অনুভব করি না?  

রূপালী বাংলাদেশ: প্রথম বই ‘নাইজেল’ কাকে উৎসর্গ করছেন?
কামরুল ইসলাম: উৎসর্গের কথাটা হুবহু বলে দেই, ‘আমার আব্বা-আম্মাকে, যারা আমার হাতে কলম তুলে দিয়েছিলেন।’

রূপালী বাংলাদেশ: নাইজেল কী ধরনের বই?
কামরুল ইসলাম: কবিতার বই। এর বেশির ভাগ কবিতা নিঃসঙ্গতা ও বিষণ্ণতার। পাশাপাশি কিছু রাজনৈতিক কবিতা রয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ: বইটির মূলভাব যদি জানাতেন?
কামরুল ইসলাম: কবিতা একটা 
ভ্রমণ, একটা অনুভূতি, যেটা পড়তে পড়তে অতিক্রম করতে হয়। আর অতিক্রমের পরও মনে হয়, সেই ভ্রমণেই রয়ে গেছি। বইটির কবিতাগুলো ঠিক ওই রকমই।

রূপালী বাংলাদেশ: কবে এবং কোন প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পাবে?
কামরুল ইসলাম: অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনে বইমেলার প্রথম দিন থেকেই নাইজেল পাওয়া যাবে। তাদের স্টল নম্বর ৪২৫।

রূপালী বাংলাদেশ: বই নিয়ে পাঠকের কাছে কতটা আশাবাদী?
কামরুল ইসলাম: নবীন মানুষ আমি। প্রত্যাশা তাই শূন্যের কোটায়। তবু এটুকু আশা রাখি, কেউ যদি নাইজেলের মলাট খুলে দু-চারটে কবিতা পড়েন, তিনি বইটি সংগ্রহ করবেন।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!