অনেকে শিক্ষা জীবন থেকেই কিছু করার চেষ্টা করেন। অনেক পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বই পড়ার পাশাপাশি স্টেশনারির দোকান দিয়ে থাকেন। এরপর পড়াশোনা শেষ হলে একদম মনোযোগ দেন দোকানের দিকে। সব এলাকাতেই এখন স্কুল-কলেজ আছে, আর শিক্ষাথীর তো অভাব নেই। তাই শিক্ষা উপকরণের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
পড়াশোনার শেষের পর যদি কেউ পুরাদমে একটা স্টেশনারির পেছনে সময় দেয় তবে খুব সহজে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ব্যবসা স্টেশনারি। ছোট জায়গায় স্বল্প পরিসরে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। এ ব্যবসার জন্য বেশি পুঁজির দরকার হয় না। ভালো সম্পর্ক তৈরি হলে সাপ্লাইয়াররা পণ্য দিয়ে যায়।
স্টেশনারি ব্যবসায় স্থান নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের জায়গা নির্বাচন করা উচিত। এসব প্রতিষ্ঠানই মূলত এর ক্রেতা। পড়ালেখা, অফিস আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্যের হিসাব-নিকাশের জন্য প্রয়োজন স্টেশনারি পণ্য। ব্যবসা শুরুর আগে স্টেশনারি পণ্য সম্পর্কে পুরাপুরি ধারণা রাখতে হবে। সচরাচর যেসব পণ্য প্রয়োজন,
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কলম, পেনসিল-রং পেনসিল, পেনসিল কাটার, পেনসিল বক্স, খাতা-রেজিস্ট্রার খাতা, পেপার কাটার, ডাবল এ পেপার, পাঞ্চ মেশিন, নানা ধরনের ফিতা, স্ট্যাম্প সিল, স্ট্যাপলার, ডেস্ক গ্লোব, গাম, রুলার, ক্যালকুলেটর, খাম, ঝুড়ি, ফটো অ্যালবাম, স্টিকার, হিট সিলার, প্রাইস লেবেলার মেশিন, ফাইল-বোর্ড ফাইল-বক্স ফাইল, মার্কার পেন-সাইন পেন, ইরেজার, স্কেল, জ্যামিতি বক্স, পেন হোল্ডার, চক, ডাস্টার, হোয়াইট বোর্ড, শ্লেট, পেপার ওয়েট প্রভৃতি। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খেলাধুলার উপকরণও রাখতে পারেন দোকানে। সারা বছর এসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে। এসব পণ্য পাওয়া যায়, রাজধানীর নয়াবাজার, বাবুবাজার ও চকবাজারের পাইকারি বাজারে।
দোকান ভাড়া ও পণ্য কেনার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানভেদে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন পড়বে। পণ্য বিক্রির ওপর ভিত্তি করে মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এ ব্যবসার অন্যতম সুবিধা বছরের যেকোনো সময়ে প্রশিক্ষণ ছাড়াই শুরু করতে পারবেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন এমন ব্যবসায়ীর পরামর্শ মেনে চলা উচিত। এ ব্যবসায় ঝুঁকি নেই বললে চলে। স্টেশনারি পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়া কিংবা পচে যাওয়ার ভয় নেই। এখন বর্তমানে অনেক বড় করে শোরুম আকারেও স্টেশনারির দোকান হচ্ছে সঙ্গে কফিও পাওয়া যায় কিছু কিছু যায়গায়। এ বিষয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয় রামপুরায় অবস্থিত রাজু স্টেশনারির স্বত্বাধিকারীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে মগবাজার একটা স্টেশনারির দোকানে কাজ করি প্রায় দুই বছর, তারপর রামপুরায় নিজে দোকান দেই। কোনো কর্মচারী নেই, নিজেই দোকান করি, মাসে আমার ৩০ হাজার টাকার ওপর লাভ হয়। আমি নিজেই মালামাল কিনি, এবং বাংলাবাজার থেকে খাতার বান্ডিং করিয়ে আনি। ফলে খাতা দেখতে সুন্দর হয় এবং কাস্টমার নিয়মিত তার খাতা কেনে। রাজু আরও জানান, তিনি নীলক্ষেত, বাংলাবাজার, চকবাজার থেকে ঘুরে ঘুরে মালামাল কেনেন।
কিছু কোম্পানি যেমন আরএফএল, অলিম্পিক তারা পণ্য কোম্পানি থেকে দোকানে দিয়ে যায়। এ ছাড়া বইয়ের কোম্পানি যেমন পাঞ্জেরি, লেকচার গাইউ বই, বিসিএসের বই কোম্পানি থেকে দিয়ে যায়, ফলে নকল বইযের আশঙ্কা কম থাকে। দোকানে বসে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে জ্ঞানও অর্জনেরও সুযোগ থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :