সংগীত জগতের পরিচিত মুখ হাসান ইথার। হাইওয়ে ব্যান্ডের গায়ক, গিটারিস্ট ও কম্পোজার হিসেবে তিনি যেমন শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন, তেমনি সাহিত্য অঙ্গনেও তার ভাবনার স্বতন্ত্র প্রকাশ ঘটিয়েছেন ভিন্নভাবে। ২০২৪ সালে তার প্রথম গ্রন্থ ‘শূন্যের দরজা’ প্রকাশিত হওয়ার পরই পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর অমর একুশে বইমেলায় কিংবদন্তি পাবলিকেশন থেকে এসেছে তার দ্বিতীয় বই ‘প্রশ্ননামা’।
তার এই বই কোনো উত্তর দেওয়ার জন্য লেখা হয়নি; বরং এটি পাঠককে এমন এক জগতে নিয়ে যেতে চায়, যেখানে উত্তর নয়; প্রশ্নই মুখ্য। দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপচারিতায় বই প্রসঙ্গে ইথার বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রশ্ন সবচেয়ে দামি জিনিস। আমি সারাক্ষণই প্রশ্ন খুঁজতে থাকি। আমার মতে, কী আমি জানি না?- এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। আমাদের শেখানো হয় উত্তর খুঁজতে, কিন্তু প্রকৃত উপলব্ধি তখনই আসে, যখন কেউ নিজেকে প্রশ্ন করতে শেখে। এই বইয়ের প্রতিটি শব্দই সেই প্রশ্নের খোঁজে লেখা।’
প্রতিভাবান এই লেখকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘প্রশ্ননামা’ কেবল বিচ্ছিন্ন কিছু প্রশ্নের সংকলন নয়, বরং এই বইয়ে এক প্রশ্নের সঙ্গে আরেক প্রশ্নের গভীর সংযোগ রয়েছে। বইটি এক প্রকার মানসিক অভিযাত্রা, যা পাঠকের আত্মজিজ্ঞাসার দুয়ার খুলে দিতে সক্ষম। যাদের ভাবনায় নতুন দিগন্তের সন্ধান রয়েছে, যারা প্রশ্নের গুরুত্ব বোঝেন এবং জীবনকে জানার আগ্রহ রাখেন-তাদের জন্যই এই বই।
সমাজে জানার পরিধিকে সীমাবদ্ধ মনে করা হয়। প্রশ্ননামা সেই সীমারেখাকে ভাঙতে চায়, চিন্তার নতুন পরিসর তৈরি করতে চায়। বইটি শুধুমাত্র দার্শনিক বা মনস্তাত্ত্বিক আলোচনার জন্য নয়, বরং এটি এক ধরনের আত্ম-অনুসন্ধানের নির্দেশিকা।
গতবারের মতো এবারের বইয়ের প্রচ্ছদও করেছেন হাসান ইথারের স্ত্রী সাদিয়া তারাননুম, যার শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি বইয়ের আবহকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
‘প্রশ্ননামা’ পাঠকের উপলব্ধি ও ভাবনাকে আরও গভীর করতে, নিজেকে নতুন করে চিনতে এবং বাস্তবতাকে নতুনভাবে অনুধাবন করতে সহায়ক এক গ্রন্থ। চিন্তাশীল পাঠকদের জন্য প্রশ্ননামা নিঃসন্দেহে এক মূল্যবান সংযোজন, যা তাদের জীবন ও বাস্তবতাকে নতুন চোখে দেখতে সহায়তা করবে।
আপনার মতামত লিখুন :