ঐ দেখো কৃষ্ণচূড়ার রঙে ওরা এসেছে ,
ওরা এসেছে লাল সূর্যের আবীর ছুঁয়ে, প্রভাতের সুরে আলপনার রং তুলিতে।
রিনিঝিনি চুড়ির শব্দে শব্দে, লাল সাদার ঝলকানিতে,
নূপুরের ঝংকারে, বেদনার ডালা সাজিয়ে পুরোনো ক্ষতে।
ওরা বায়জীপাড়ার চন্দ্রমুখী নয়,
ওরা লালকেই ভালোবাসে।
গভীর আঁধারে নিঃশব্দ চরণে বারবার ফিরে আসে।
তাই আমিও আসি মলিন শোকে একটু হেসে হেসে।
সে আমার রক্তের ভাই-বোনটিও কপালে লাল তিলকে
অশ্রুসিক্ত চোখে দাঁড়িয়ে মা খোকা বলে ডাকে।
বেসামাল তান বলে দেয়- দেখো আমি এসেছি
কিছু রক্ত চোষা বালিতে নাড়িভুঁড়ি জমা রেখেছি।
আমার মায়ের কসম, আমি এ মাটির সন্তান
পলাশবাড়ি আমার ঠিকানা, ঐ`যে রক্তিমা উঠোন-
সেখানে রঙিন সুতোর চাদর বুনে আমার বোন।
পরিত্যক্ত ডোবার কচুরিপানাগুলো আমার অনুভূতির কথা জানতো
আমি তাকে কথা দিয়েছি বর্ণমালা ফিরিয়ে দিবো - ওরা তাই মানতো।
নিহত বায়ান্ন আমার লাশের প্রথম সূত্রপাত
ওরা রক্তের দামে কিনেছিলো প্রতিঘাত।
নিখোঁজ শিমুলেরা সেদিনের সাক্ষী ছিলো
ওরা স্বাধীনতা বোঝে তাই রক্ত ছিনিয়ে নিলো।
সেদিন এক ফাল্গুন এসেছিল আমাকে রাঙাতে
আমার যৌবন প্রবাহিত অস্থির তরতর স্রোতে
আমি হারিয়ে যাই স্মৃতির অক্ষরে একুশের বর্ণমালাতে।
আজও তো ফাল্গুন আসে বরণের হাতে রং ছোঁয়াতে
ওরা সবাই বলে চল যাই একুশের স্তম্ভ সাজাতে।
আমি গুলিবিদ্ধ বায়ান্নের সেই শহিদের লাশ
অমর একুশের স্তম্ভ জুড়েই আমার বসবাস।
আপনার মতামত লিখুন :