অনেকে চাকরির পেছনে ছুটে অনেক সময় পার করেন, অনেকের চাকরির জন্য ঘুরে জানতে পারে অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি নাই। এই অভিজ্ঞতা অর্জনের স্থান হলো প্রশিক্ষণ। যদি আপানার যেকোনো বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভবনা অনেকটা বেড়ে যাবে। দেশে বিভিন্ন ধরনের ইনস্টিটিউট রয়েছে যেখান থেকে অল্প টাকায় প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়। সারা বছর বিভিন্ন ব্যাচে এসব প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান থাকে।
যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ: যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ১৮ থেকে ৩৫ বছরের বেকার যুবক ও মহিলাদের কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়। প্রশিক্ষণ শেষে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আছে। এখানে যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়- কম্পিউটার, (বেসিক ও গ্রাফিকস) ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনিং, রেডিও-টিভি, ভিসিপি মেরামত, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড হাউস ওয়্যারিং, পোশাক তৈরি, ব্লক-বাটিক, দপ্তর বিজ্ঞান, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন এবং মৎস্য চাষ।
প্রশিক্ষণ শেষে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে যুব ঋণ দেওয়া হয়। মাসিক কিস্তিতে এ ঋণ পরিশোধ করতে হয়। বিস্তারিত জানার জন্য ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কিংবা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের যুব উন্নয়ন অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
জনশক্তি ব্যুরোর সুদমুক্ত ঋণ: জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সংক্ষেপে বিএমইটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি সেবামুখী প্রতিষ্ঠান। আমরা অনেকেই হয়তো জানি, বিদেশে কর্মী বা শ্রমিক পাঠানোর মধ্যেই বিএমইটির কার্যক্রম সীমাবদ্ধ। কিন্তু তা নয়।
বিদেশে কর্মী পাঠানো বিএমইটির অনেক সেবামূলক কাজের একটি। জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরো দেশে বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রতিটি বিভাগীয় জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস এবং ৫২টি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে পল্লী ও শহরভিত্তিক ঋণদান কর্মসূচি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তা ছাড়া বিএমইটি ১১টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ১টি মেরিন ডিজেল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী গড়ে তুলছে। যোগাযোগের ঠিকানা: জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, ৮৯/২, কাকরাইল (সপ্তম তলা), ঢাকা।
স্বল্প খরচে বিসিকের প্রশিক্ষণ: বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার (বিসিক) নকশা কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬০ সালে। বর্তমানে সরকারি বা বেসরকারি প্রশিক্ষণ একাডেমিগুলোর মধ্যে একমাত্র বিসিকেরই রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ল্যাবরেটরি।
বিসিক নকশা কেন্দ্র: ব্লক-বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, পুতুল, মৃৎশিল্প, চামড়া, পাট, প্যাকেজিং, ধাতব, বুবুন এবং বাঁশ ও বেত ১১টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিটি কোর্সের মেয়াদ ৩ মাস। জানুয়ারি-মার্চ, এপ্রিল-জুন, জুলাই-সেপ্টেম্বর, অক্টোবর-ডিসেম্বর বছরের চারটি সেশনে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি করা হয়।
প্রশিক্ষণের ব্যাপারে নকশা কেন্দ্রের প্রশিক্ষকরা খুবই বন্ধুসুলভ। তারা প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী বিসিকের নকশা কেন্দ্রে শিখতে আসে। যোগাযোগের ঠিকানা: বিসিক নকশা কেন্দ্র, ১৩৭/১৩৮, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০। ফোন: ৯৫৫৩২০২, ৯৫৫৬১৯৩।
হোটেল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ: খাদ্যসামগ্রী তৈরি ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারণ এ পেশার কাজ জানলে দেশে-বিদেশে রয়েছে উচ্চ বেতনে চাকরি। আর সেই দিকটি বিবেচনা করেই বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, বেকারি অ্যান্ড পেস্ট্রিসহ নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ কর্মসংস্থানে সহায়তা করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট বিদেশেও গ্রহণযোগ্য। এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে বিদেশেও। যোগাযোগ: বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, ৮৩৮৮, মহাখালী, ঢাকা।