বড়দের দেখা-দেখি ছোটরাও রোজা রাখার বায়না ধরে। তবে বৈরি আবহাওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে থাকলে শিশুর কোনো ক্ষতি হবে কি না- সেই নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তায় থাকে সবসময়। এই জন্য খেয়াল রাখতে হবে কিছু বিষয়। মগবাজার ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হসপিটালের শিশু বিশেষজ্ঞ ও কনসালটেন্ট ডা. আবু সাঈদ শিমুল দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বিষয়গুলো। তুলে ধরেছেন মিনহাজুর রহমান নয়ন
রোজা ফরজ হওয়ার আগে বাচ্চাদের ওপর জোর না করে তাকে তার শারীরিক সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে জানান। শিশুকে সাত-আট বছর বয়স থেকে রোজা রাখতে অভ্যস্ত করতে পারেন। বয়োঃসন্ধিতে যেহেতু সব রোজা পুরোটা সময়ের জন্য রাখতে হয়, তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, রোজার এক মাস আগ থেকে, না খেয়ে থাকার ব্যাপারে তাকে অভ্যস্ত করে তোলা ভালো। শিশু রোজা রাখবে বলে অনেকে সেহেরিতে বেশি খাইয়ে দেন।
এতে বদহজম হয়ে উল্টো সব বের হয়ে যেতে পারে। সেহরিতে শিশুকে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ বা মাংস দিন। সবজি বা অন্য আঁশ জাতীয় খাবার বেশি খেতে দিন। খাওয়ার পর ফল ও দুধ অবশ্যই দেবেন। ক্যালসিয়ামের জোগান দেওয়া ছাড়াও দুধের আরেকটি উপকারিতা হলো এটি অনেক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে । রোজা চলাকালীন শিশু যেন বাইরে খুব বেশি খেলাধুলা না করে এবং রোদ থেকে দূরে থাকে সেদিকে নজর রাখুন।
শিশুরা সহজেই পানিশূন্য হয়ে যায়। তাই ইফতার ও সেহরির মাঝে সাত থেকে দশ গ্লাস পানি দিন। শিশু দুর্বল হয়ে পড়া কিংবা অতিরিক্ত ছটফট করা, চোখ ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া, জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি পানিশূন্যতার লক্ষণ। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।
রোজার শেষে ইফতারিতে পানি, শরবত ও পানীয় জাতীয় খাবার বেশি দিন। চা, কফি জুস ইত্যাদি পানিশূন্যতা বাড়ায়। তাই এগুলো এড়িয়ে যান। ঝাল, ভাজা-পোড়া না দিয়ে চিরা, পায়েস, ফল ইত্যাদি খেতে দিন। একবারে অনেক খাবার না দিয়ে দুই ধাপে ইফতার খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন অসুস্থতায় আপনার শিশুর রোজা রাখার সক্ষমতা আছে কি না চিকিৎসকের পরামর্শে তা জেনে নিন। আর রোজা রাখতে গিয়ে যদি শিশুর কোনো অসুবিধা হয় তখনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।