প্রায় প্রতিটি মানুষের শরীরের কোনো না কোনো অংশে সুড়সুড়ির অনুভ‚তি লক্ষ্য করা যায়। এসব জায়গায় অন্য কেউ স্পর্শ করলেই সুড়সুড়ি লাগে। আর তৎক্ষণাৎ মানুষটি হাসিতে ফেটে পড়ে। তবে নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিলে তেমন কোনো অনুভূতি বোঝা যায় না।
কখনো কাউকে হাসাতে তো কখনো বা ঘুম ভাঙাতে, সুড়সুড়ির জুড়ি মেলা ভার। আর কেউ রাগ করে গোমড়া মুখে বসে থাকলে এই কাতুকুতু বা সুড়সুড়ি দেওয়া তার মুড ভালো করার বিশেষ ওষুধ। মুহূর্তে ভ্যানিশ রাগরাগ মুখ, গোমড়ামুখো হাসতে হাসতে খুন।
দেখা যায় প্রায় প্রতিটি মানুষের শরীরের কোনো না কোনো অংশে সুড়সুড়ির অনুভূতি রয়েছে। কী বলছে বিজ্ঞান, আসল কারণ কী? এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, যখন কোনো ব্যক্তিকে সুড়সুড়ি দেওয়া হয় তখন মানুষ প্রকৃতপক্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এটি মাকড়সার মতো ছোট পোকামাকড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য একটি প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। তাই অন্য কোনো ব্যক্তি শরীরের বিশেষ অংশে সুড়সুড়ি দিলে এর প্রতিক্রিয়ায় মানুষ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। কিন্তু নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিলে হাসি পায় না কেন?
নিজেকে সুড়সুড়ি দিতে না পারার কারণ হলো-আপনি যখন নিজের শরীরের কোনো অংশ স্পর্শ করেন তখন মস্তিষ্কের একটি অংশ এই নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করে এবং এই সংবেদ যে ঘটবে তা আগে থেকেই অনুমান করতে পারে। শরীরে সংবেদ সৃষ্টির জন্য দায়ী মস্তিষ্কের অংশকে সোমাটোসেন্সরি করটেক্স বলা হয়। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষায় দেখতে পান, অন্যের সুড়সুড়ির তুলনায় নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিলে এই অংশ কম প্রতিক্রিয়া দেখায়।
বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে আরও দেখা যায়, মস্তিষ্কের সেরিবেলাম (মস্তিষ্কের যে অংশ গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে ও ভারসাম্য বজায় রাখে) শরীরের গতিবিধিগুলো পর্যবেক্ষণ করে ও নিজেকে নিজে স্পর্শ করলে যে সংবেদ উৎপন্ন হয় তা দমন করার জন্য সংকেত পাঠায়। গবেষকেরা দেখেন, লিভার টানার মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সুড়সুড়ির অনুভূতি বাড়ানো যায়।
অংশগ্রহণকারীর লিভার টান দেওয়া ও মেশিনের সুড়সুড়ি দেওয়ার মধ্যে এক সেকেন্ডের কম সময় ব্যবধান রাখার মাধ্যমে মস্তিষ্ককে বোকা বানানো কিছুটা হলেও সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :