শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম

প্রেসার লো হলে করণীয়: কারণ, লক্ষণ ও ঘরোয়া সমাধান

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম

প্রেসার লো হলে করণীয়: কারণ, লক্ষণ ও ঘরোয়া সমাধান

ছবি: সংগৃহীত

রক্তচাপ কমে যাওয়া বা লো প্রেসার (Hypotension) একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা অনেকেই উপেক্ষা করেন। তবে এটি গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে যদি সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।

রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে শরীরে রক্ত প্রবাহ কমে যায়, যার ফলে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছায় না। এই অবস্থাকে লো প্রেসার বা হাইপোটেনশন বলা হয়। সাধারণত, রক্তচাপ ৯০/৬০ mmHg বা এর নিচে হলে তা লো প্রেসার হিসেবে বিবেচিত হয়।

লো প্রেসার হওয়ার কারণ

  •  ডিহাইড্রেশন: শরীরে পানির অভাব হলে রক্তের পরিমাণ কমে যায়, যার ফলে রক্তচাপ কমে যায়।

  • পুষ্টির অভাব: ভিটামিন বি১২, ফোলেট এবং আয়রনের ঘাটতি রক্তশূন্যতা (Anemia) সৃষ্টি করে, যা লো প্রেসারের কারণ হতে পারে।

  • হৃদরোগ: হৃদপিণ্ডের সমস্যা যেমন হার্ট ফেইলিওর বা হার্ট অ্যাটাক রক্তচাপ কমাতে পারে।

  • এন্ডোক্রাইন সমস্যা: থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ডের অসুস্থতা বা লো ব্লাড সুগার রক্তচাপ কমাতে পারে।

  • রক্তক্ষরণ: দুর্ঘটনা বা অপারেশনের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে রক্তচাপ কমে যায়।

  • গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় রক্তনালী প্রসারিত হয়, যার ফলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে।

  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধ যেমন উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ডিপ্রেশনের ওষুধ বা ব্যথানাশক ওষুধ লো প্রেসার সৃষ্টি করতে পারে।

লো প্রেসারের লক্ষণ

লো প্রেসার বা হাইপোটেনশনের রোগীরা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। নিম্নের লক্ষণগুলো জানা থাকলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন এবং নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনার লো প্রেসার বা হাইপোটেনশনের সমস্যা আছে নাকি।

  • মাথা ঘোরা বা ঝিমঝিম করা

  • দুর্বলতা ও ক্লান্তি

  • বমি বমি ভাব

  • ঝাপসা দৃষ্টি

  • হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া

  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

  • শ্বাসকষ্ট বা বুক ধড়ফড় করা

লো প্রেসার হলে করণীয়

লো প্রেসার হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নিচে কিছু ঘরোয়া সমাধান দেওয়া হলো যা আপনার লো প্রেসার বা হাইপোটেনশন ঠিক করতে কাজে লাগতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন-

লবণ-পানি পান করুন: লবণে সোডিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পান করুন। তবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন: ডিহাইড্রেশন লো প্রেসারের একটি বড় কারণ। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন, বিশেষ করে গরমের দিনে বা ব্যায়ামের পর।

কফি বা চা পান করুন: ক্যাফেইন রক্তচাপ সাময়িকভাবে বাড়াতে সাহায্য করে। এক কাপ কফি বা চা পান করলে দ্রুত উপকার পেতে পারেন।

মধু ও লবণের মিশ্রণ: এক চা চামচ মধু ও এক চিমটি লবণ এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এটি রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।

পায়ের উঁচু করে শুয়ে পড়ুন: লো প্রেসার হলে পায়ের নিচে বালিশ বা অন্য কিছু দিয়ে উঁচু করে শুয়ে পড়ুন। এতে পায়ের রক্ত হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের দিকে প্রবাহিত হবে।

গুড় ও লেবুর শরবত: গুড়ে আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ গুড় ও অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস

ডাক্তারদের মতে লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:

লবণযুক্ত খাবার: লো প্রেসার হলে লবণযুক্ত খাবার যেমন স্যুপ, চিজ, বা আচার খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

ফল ও শাকসবজি: কলা, কমলা, আঙুর, গাজর, পালং শাক ইত্যাদিতে পটাসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

বাদাম ও বীজ: কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, তিলের বীজ, এবং সূর্যমুখীর বীজে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও মিনারেল থাকে, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।

ডাল ও শস্য: মুগ ডাল, মসুর ডাল, ওটস, এবং ব্রাউন রাইসে ফাইবার ও প্রোটিন থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেটে ক্যাফেইন ও ফ্লেভোনয়েড থাকে, যা রক্তচাপ সাময়িকভাবে বাড়াতে সাহায্য করে।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, এবং পনিরে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

যদি লো প্রেসারের লক্ষণগুলি ঘন ঘন দেখা দেয় বা গুরুতর হয়, যেমন অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, বা বুকে ব্যথা, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এটি কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়

  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন

  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন

  • সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন, তবে অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন

  • ধীরে ধীরে উঠুন, বিশেষ করে শোয়া থেকে দাঁড়ানোর সময়।

     

    লো প্রেসার একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান এবং ঘরোয়া সমাধানের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে লক্ষণগুলি গুরুতর হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সঠিক জীবনযাপনের মাধ্যমে লো প্রেসার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
     

আরবি/এসএস

Link copied!