শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ১১:৩৭ এএম

কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা: কী খাবেন, কী খাবেন না

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ১১:৩৭ এএম

কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা: কী খাবেন, কী খাবেন না

ছবি: সংগৃহীত

কিডনি আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত পরিশোধন করে বিষাক্ত পদার্থ ও অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। কিন্তু যদি কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ না করে, তাহলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে গিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে।  

এ কারণে কিডনির সমস্যা হলে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস কিডনির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং রোগের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে।  

কেন হয় কিডনির সমস্যা?

কিডনি রোগ হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কারণগুলো হলো:  

উচ্চ রক্তচাপ: এটি কিডনির ক্ষতি করার অন্যতম কারণ।  
ডায়াবেটিস: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিডনির রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।  
পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া: শরীরে পানির ঘাটতি হলে কিডনিতে পাথর (স্টোন) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।  
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ: বেশি লবণ খেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।  
প্রস্রাব আটকে রাখা: দীর্ঘ সময় প্রস্রাব আটকে রাখলে কিডনিতে সংক্রমণ হতে পারে।  
অতিরিক্ত ওষুধ সেবন: বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।  
জিনগত সমস্যা: পরিবারের কারও কিডনি রোগ থাকলে অন্যদেরও হওয়ার আশঙ্কা থাকে।  

কিডনি রোগের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনির সমস্যা বোঝা কঠিন। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা গেলে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। লক্ষণগুলো হলো-

  • শরীরে অতিরিক্ত ফুলে যাওয়া (বিভিন্ন অংশে পানি জমা)

  • প্রস্রাবের রং পরিবর্তন বা প্রস্রাব কমে যাওয়া  

  • অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা  

  • ক্ষুধামন্দা ও বমি বমি ভাব  

  • শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি  

  • পেশিতে খিঁচুনি বা ব্যথা  

  • ঘুমের সমস্যা  

  • রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া  

কিডনি রোগীদের জন্য আদর্শ খাদ্য তালিকা

কিডনি রোগীর খাবার নির্ধারণ করতে হলে প্রোটিন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।  

কী খাওয়া উচিত? 

কিডনি রোগীরা এমন খাবার খেতে পারেন যা কিডনির ওপর চাপ কমায় এবং শরীরে পুষ্টি জোগায়।  

প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত খাবার
- ডাল, সয়াবিন, বাদাম (পরিমিত পরিমাণে)  
- সাদা মাংস (মুরগি, মাছ)  
- ডিমের সাদা অংশ (কুসুম এড়িয়ে চলা ভালো)  

কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার
- লবণ কম খেতে হবে (বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা লবণ এড়িয়ে চলা দরকার)  
- ঘরে তৈরি খাবার খাওয়া ভালো, কারণ বাইরে খাবারে বেশি লবণ থাকে  

কম পটাশিয়ামযুক্ত খাবার  
- আপেল, নাশপাতি, আঙুর, পেঁপে  
- বাঁধাকপি, শসা, লাউ  
- সাদা চাল ও পরিশোধিত শস্যজাতীয় খাবার  

পর্যাপ্ত পানি পান করা
- কিডনির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করতে হবে  
- সাধারণত, দিনে ১.৫-২ লিটার পানি পান করা ভালো** (কিন্তু কিডনি ফেইলিওর হলে কম পানি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়)  

কম ফসফরাসযুক্ত খাবার
- লো-ফ্যাট দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (পরিমিত পরিমাণে)  
- মাখন, ঘি এড়িয়ে চলা ভালো  

কী খাওয়া এড়িয়ে চলবেন?

কিছু খাবার আছে যা কিডনির অবস্থা আরও খারাপ করতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি। নিচে এমন কিছু খাবারের উল্লেখ করা হলো যেগুলো  কিডনি রোগীদের খাওয়া উচিত না- 

অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার (কিডনির ওপর চাপ বাড়ায়)  
- লাল মাংস (গরু, খাসি)  
- বেশি পরিমাণে ডাল ও সয়াবিন  

অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত খাবার (রক্তচাপ বাড়ায়)  
- প্রক্রিয়াজাত খাবার (চিপস, ফাস্টফুড, ডিবাবন্দি খাবার)  
- অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার (আচার, চিজ, সস, পাঁপড়)  

বেশি পটাশিয়ামযুক্ত খাবার (রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়)  
- কলা, কমলা, আম, নারকেল পানি  
- আলু, টমেটো, পালং শাক  

বেশি ফসফরাসযুক্ত খাবার (হাড় দুর্বল করে)  
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (চিজ, কনডেন্সড মিল্ক)  
- সফট ড্রিংক, কোল্ড ড্রিংক, প্রসেসড মাংস  

কিডনি রোগ এড়ানোর উপায়

কিডনির সমস্যা থেকে বাঁচতে সুস্থ জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।  

  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন

  • লবণ ও প্রসেসড ফুড কম খান

  • রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন

  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন  

  • প্রস্রাব আটকে না রেখে নিয়মিত প্রস্রাব করুন

  • অপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন
     

কিডনি রোগীদের খাদ্য তালিকা সতর্কতার সাথে নির্ধারণ করা উচিত। ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাবার নির্বাচন করাই সবচেয়ে ভালো। সঠিক খাবার ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চললে কিডনির সমস্যা কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

আরবি/এসএস

Link copied!