শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

তিলের তেলের উপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

তিলের তেলের উপকারিতা

ছবি: সংগৃহীত

তিলের তেল (Sesame oil) মূলত একটি ভেজিটেবল অয়েল।  তিলের তেল বেশ উচ্চমাত্রায় পুষ্টিকর, কেননা এই তেল বেশ কিছু অ্যাসেনশিয়াল ভিটামিন যেমন- ভিটামিন ই, বি কমপ্লেক্স ও ডি সমৃদ্ধ। পাশাপাশি এই তেলে আছে কপার, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।  এছাড়াও তিলের তেলে রয়েছে ফ্যাটি এসিড। এর মধ্যে ৪১% লিনলিক এসিড, ৩৯% অলিক এসিড, ৮% পালমিটিক এসিড এবং ৫% স্টেরিক এসিড আছে। বিউটি গ্রেড অয়েল আর এডিবল অয়েল কিন্তু আলাদা! তাই সেলফ কেয়ারে যেই তেল ইউজ করবেন, সেটা কিন্তু রান্নার জন্য নয়!

স্বাস্থ্যরক্ষায় তিলের তেল

Choosing and Using Cooking Oils | How to choose the right cooking oil dgtl  - Anandabazar
রান্নায়  তিলের তেলের ব্যবহার

১. রক্তচাপ হ্রাস করে : তিলের তেল অন্যান্য রান্নার তেলের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

২. ব্লাড সুগার কমায় : এই তেলে আছে ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এ ছাড়াও তিলের তেলে ভিটামিন ই রয়েছে এবং এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর সমৃদ্ধ উৎস, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন গবেষণায়, ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় তিল তেল অন্তর্ভুক্ত করার কথাও প্রকাশ পেয়েছে।

৩. ত্বকের উপকারিতা : তিলের বীজের ব্যবহার ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে, মসৃণ রাখে এবং বলিরেখা প্রতিরোধ করে। এই তেলটি বেশ কয়েকটি ত্বকের ব্যাধি নিরাময়েও ব্যবহৃত হয় এবং এটি প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বক এই তেল তাড়াতাড়ি শোষণ করে, পুষ্ট করে এবং শুষ্কতা, ফাটল থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।

৪. হাড় সুস্থ রাখে : তিলের তেলে ক্যালসিয়াম থাকে যা আমাদের হাড়কে শক্ত রাখে। এতে, তামা, দস্তা এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক। এই তেল গভীরে প্রবেশ করে এবং হাড়কে শক্তিশালী করে। এ ছাড়াও অস্টিওপোরোসিস রোধ করে এবং হাড়ের সমস্যাজনিত বিভিন্ন ধরনের ব্যথার নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।

৫. দাঁতের সমস্যা কমায় : তিলের তেল মৌখিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ‘অয়েল-পুলিং’ নামক দাঁতের পরিচর্যার এক বিশেষ পদ্ধতিতে বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই তেল। মুখগহ্বর ও ক্ষুদ্রান্ত্র পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি দাঁত ঝকঝকে করতেও তিলের তেল অত্যন্ত উপকারি।

৬. হার্ট ভালো রাখে : তিলের তেলে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হার্ট ভালো রাখে। তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো— সেসামল এবং সিসামিন, কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কম রাখতে সহায়তা করে।

৭. চুল ভালো রাখে : এই তেল মাথার ত্বক এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। এটি চুলকে ক্ষতিকারক ইউ ভি রশ্মি এবং দূষণ থেকে রক্ষা করে। তিলের তেল দিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে তা রক্ত ​​সঞ্চালনের উন্নতি করে এবং চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।

৮. মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সহায়তা করে : এটি মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মাত্রা মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। তিলের তেলে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড মানসিক অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তা দূর করে।

সৌন্দর্যচর্চায় তিলের তেল

Hair Care: চুলের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এই ৩ টি তেল ব্যবহার করলেই  হবে, কীভাবে বানাবেন জেনে নিন... - Bengali News | These three oils can  prevent all hair problems |
সৌন্দর্যচর্চায় তিলের তেলের ব্যবহার

১. স্কিনটোন ইভেন করে: তিলের তেলে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকায়, যাদের প্যাচি স্কিন বা ত্বকে দাগ ছোপ আছে, তারা দিনে দুই বার এই অয়েল হালকা করে ম্যাসাজ করে ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে, গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুছে নিলে, স্কিনটোন অনেকটাই ইভেন হয়ে যাবে।

২. শুষ্ক ত্বকের যত্নে : এই তেল একটি অসাধারণ ময়েশচারাইজার। পাশাপাশি এতে ডিটক্সিফাইং উপাদান থাকায় শুষ্ক ডেড সেল দূর করে ত্বককে সফট ও হাইড্রেটেড করে তোলে। রাতে ঘুমানোর আগে দু ফোঁটা তিলের তেল যেকোনো ক্রিমের সাথে মিশিয়ে ফেইসে অ্যাপ্লাই করবেন। চাইলে এই তেল আপনি আপনার পছন্দের ফেইস প্যাকেও লাগাতে পারেন, তবে খুব বেশি না, দুই থেকে তিন ফোঁটা পরিমাণে।

৩. ত্বকের রিংকেলস দূর করতে : বয়স বিশের পরে তিলের তেল ব্যবহার শুরু করা উচিত। আর যদি আপনি আমার মতো ২৫+ হয়ে থাকেন, তাহলে আজকে থেকেই এই তেল ব্যবহার শুরু করা উচিত। কেননা এই তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে বলে এটি অসাধারণভাবে অ্যান্টি-এজিং এর কাজ করে। মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে এই তেল কয়েক ফোঁটা ভালোভাবে অ্যান্টিক্লক ওয়াইজ ম্যাসাজ করবেন। এরপরে গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে মুখের ওপর এক মিনিট পেতে রেখে মুছে ফেলুন।

৪. একনে সমাধান করতে : অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় তিলের তেল একনে সমস্যাতেও দারুণ কাজ দেয়। একটা কথা মনে রাখবেন- যেকোনো তেলই কিন্তু বিভিন্নভাবে আমাদের উপকার করে, কিন্তু তেল লাগিয়ে মুখে কখনোই রেখে দেয়া ঠিক না, কেননা তেল ধুলাবালি টেনে নেয়, তাই প্রয়োজনমত ব্যবহার করে মুছে ফেলতে হবে। তিলের তেল অ্যালভেরা জেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে বেশ ভালো রেজাল্ট পাবেন। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন।

৫. সানবার্ন ও ক্লোরিন বার্ন কমাতে : কক্সবাজার, সেন্ট মারটিন ঘুরে আসার পরে আয়নার দিকে আর তাকাতে মন চায় না কারো। এই সানবার্ন দূর করতে, গোসলের আগে ভালোভাবে তিলের তেল সারা শরীরে, যেমন হাত, পা, মুখ, গলা, ঘাড় যেসব জায়গায় বেশি সানবার্ন হয়েছে, সেখানে ভালোভাবে মালিশ করে, এরপরে গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন। এভাবে বেশ কয়েকদিন করলে ভালো উপকার পাবেন। এছাড়াও যারা নিয়মিত সুইমিং পুলে যান, তাদেরও ক্লোরিন পানিতে স্কিন-এর বেশ সমস্যা হয়। তাই সুইমিং পুলে নামার আগে এই তেল মেখে নিলে ক্লোরিন আপনার ত্বকের কোন ক্ষতিই করতে পারবে না।  

৬. অকালে চুল পাকা রোধ করতে: অনেকের বয়স ত্রিশ ছুঁতে না ছুঁতেই চুল সাদা হওয়া শুরু করে দেয়। এই সমস্যা থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে তিলের তেল। নিয়মিত তিলের তেল মাথার স্ক্যাল্প-এ ম্যাসাজ করুন। তিলের তেল একটু ভারী বলে পুরো চুলে লাগাতে হলে অন্য কোন হালকা তেল যেমন অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে লাগাবেন। অকালে পেকে যাওয়া রোধের পাশাপাশি এটি চুলের রংকেও ডার্ক করে তোলে আস্তে আস্তে।

৭. উকুন দূর করতে : উকুন দূর করতে অনেকেই বিশেষ সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করেন যেগুলো উকুন দূর করার পাশাপাশি চুলকে ফ্রি-ভাবে রুক্ষ করে দেয়। ঘরোয়া রেমেডি হিসেবে, প্রয়োজন অনুযায়ী তিলের তেলের মধ্যে নিম পাতা নিয়ে, একটু মাইক্রোওভেন এ গরম করে স্ক্যাল্প এ লাগান। পুরো চুলে ভালো করে লাগাতে হবে নইলে উকুন দূর হবে না। দু ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে উকুন দূর হবে প্লাস চুলে শাইন আসবে।

৮. খুশকি ও ফাঙ্গাস দূর করতে : চুলে খুশকির সমস্যা থাকলে বা কোনো রকম ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে থাকলে রোজ রাতে তিলের তেল মাথায় দিয়ে সকালে শ্যাম্পু করবেন। তেলটা কীভাবে বানাবেন? ছোটো এক কাপ তিলের তেল নিয়ে তাতে এক চা চামচ মেথি নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন, এরপর সেটা চুলে লাগাতে হবে। আশা করি দ্রুতই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

৯. হেয়ার ড্যামাজ থেকে বাঁচতে : নানারকম স্টাইলিং-এর কারণে চুল ড্যামেজ হয়ে থাকলে, একটা পাকা অ্যাভোকাডো ম্যাশ করে নিয়ে তাতে মেশান ৫ চামচ তিলের তেল (চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী এই পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন)। এবার পুরো চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দু’বার করলে ভালো উপকার পাবেন।

১০. ডিপ কনডিশনিং করতে : ২ টেবিল চামচ তিলের তেল নিবেন, এর সাথে নরমাল হেয়ার-এর জন্য একটা ডিম (অয়েলি হেয়ার-এর জন্য দুটো ডিমের সাদা অংশ এবং শুষ্ক চুলের জন্য দুটো ডিমের কুসুম) মিশিয়ে নিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। ত্রিশ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শ্যাম্পু করে নেবেন। সপ্তাহে দুইবার করলেই দেখবেন, মাস খানেকের মধ্যেই চুল সুন্দর হয়ে যাবে।

রান্নায় এই তেলের ব্যবহার ব্লাড প্রেশার কমায়। ডায়েটে এই তেলের ব্যবহার স্ট্রেস ও ডিপ্রেশন কমায়। রান্নায় তিলের তেলের ব্যবহার ইনসুলিন এবং গ্লুকোজ লেভেল ঠিক রাখে বলে ডায়াবেটিস-এর রোগীরা এটাকে নিয়মিত খাবারের তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

আরবি/শিতি

Link copied!