ঢাকা সোমবার, ০৭ এপ্রিল, ২০২৫

উচ্চশিক্ষায় লন্ডন

মিনহাজুর রহমান নয়ন
প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

যারা বিদেশে যেতে চান তাদের জন্য লন্ডন একটা স্বপ্নের দেশ, বিশেষ করে সিলেটিদের কাছে। প্রচুর পরিমানে সিলেটি মানুষ লন্ডনে থাকে। লন্ডনে প্রতিবছর দক্ষ মানুষের চাহিদা বাড়ছে। চাইলে আপনিও গ্র্যাজুয়েশন করার পর লন্ডন যাওয়ার প্ল্যান করতে পারেন।  

যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহর প্রতিনিয়তই দক্ষ ও প্রতিভাবানের জন্য নতুন দরজা খুলে দিচ্ছে। উন্নত জীবনযাপন, উচ্চ আয় এবং স্থায়ী কর্মসংস্থানের আশায় প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ লন্ডনে কাজের জন্য আবেদন করেন। অনেকে মাস্টার্স করার জন্য লন্ডনে যান। স্কলারশিপ পাবেন কিনা সেটা নির্ভর করে আপনার একাডেমিক রেজাল্ট, স্কোর ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে। সাধারণত মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য টিউশন ফি ১০ হাজার থেকে ১৮ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কত টাকা টিউশন ফি আসবে সেটা নির্ভর করে কোন ইউনিভার্সিটি এবং কোন সাবজেক্ট সেটার উপর। লন্ডনের আঞ্জেলিনা রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্টাডি নিয়ে বিবিএ সম্পূর্ণ করে আসা রিয়াদ রায়হান জানান, এখনো মানুষ লন্ডন যাচ্ছে তবে কাজের সুযোগ কম। অনেকে ব্যবসা করতে পারে তবে সেটা অনেক টাকার প্রয়োজন আবার লন্ডন শহরের বাইরে যদি থাকে তবে কাজের সুযোগ আছে।

যেভাবে শুরু করবেন 
পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্য যেতে চাইলে শুরুতেই স্টাডি ভিসার ফোর টায়ার (সাধারণ) আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ১৬ বা তার বেশি হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেতে হবে।  নিজের যাবতীয় ও পড়াশোনার ব্যয় বহনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে। ইংরেজি ভাষা বলতে, পড়তে, লিখতে ও সাবলীলভাবে বুঝতে পারতে হবে।

কখন আবেদন করতে হবে
আপনার কোর্স শুরু করার ছয় মাস আগে ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। সাধারণত তিন সপ্তাহের মধ্যে ভিসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়।

কতদিন থাকা যাবে
এই ভিসায় যুক্তরাজ্যে কতদিন থাকা যাবে, তা নির্ভর করে কোর্সের মেয়াদ ও ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে কোন পড়াশোনা সম্পন্ন হয়েছে তার ওপর। আবেদনকারীর বয়স ১৮ বা তার বেশি হলে এবং কোর্সটি ডিগ্রি স্তরের হলে সাধারণত পাঁচ বছর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে থাকা যায়। আর কোর্সটি ডিগ্রি স্তরের নিচে হলে সাধারণত দুই বছর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে থাকা যাবে।

যদি বেশি দিন থাকতে চান
যুক্তরাজ্যে বেশি দিন থাকতে হলে আগে থাকার জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করতে হয়। আবেদনকারী যদি ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে থাকেন, তবে অন্য ভিসা থেকে স্টুডেন্ট ভিসা নিতে হবে। আর বর্তমান কোর্সটি সফলভাবে শেষ করার পর কমপক্ষে দুই বছর যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য একটি গ্র্যাজুয়েট ভিসা নিতে পারবেন।

যখন যুক্তরাজ্যে ঢুকতে পারবেন
কোর্স শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন। কোর্সের মেয়াদ যদি ছয় মাস বা তার কম সময় স্থায়ী হয়, তাহলে তা শুরুর এক সপ্তাহ আগপর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ঢোকা যায়। আর কোর্সের মেয়াদ ছয় মাসের বেশি সময় স্থায়ী হলে তাহলে তা শুরুর এক মাস আগপর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ঢোকা যায়। কোর্স যখনই শুরু হোক না কেন, ভিসায় উল্লেখ থাকা তারিখের আগে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ করার কোনো সুযোগ নেই।

ভিসা ফি
যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করলে ফি দিতে হবে প্রায় ৭৬ হাজার ৭২৩ টাকা (৪৯০ পাউন্ড)। আর যুক্তরাজ্যের ভেতর থেকে নতুন করে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করলে বা ভিসার মেয়াদ বাড়াতে চাইলে সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আবেদনকারীর সঙ্গে অন্য কেউ গেলে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য অবশ্যই ভিসা ফি দিতে হবে।

হেলথকেয়ার সারচার্জ
আবেদনের অংশ হিসেবেই প্রত্যেক আবেদনকারীকে হেলথকেয়ার সারচার্জ দিতে হবে। ভিসার মেয়াদ কত দিন, তার ওপর নির্ভর করে এই অর্থের পরিমাণ। আবেদনের আগে এটা অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

সঙ্গে কারা যেতে পারেন
আবেদনকারীর আবেদন গ্রহণ হলে তার সঙ্গে সঙ্গী বা সঙ্গিনী ও সন্তানরা (নির্ভরশীল) যুক্তরাজ্যে যাওয়ার অনুমতি পাবেন।

যুক্তরাজ্যে গিয়ে যা করা যাবে
যুক্তরাজ্য গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে হবে। স্টুডেন্ট ইউনিয়নের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করা যাবে। কোন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন এবং নির্ধারিত মেয়াদে কোনো কাজ করছেন কি না, তার ওপর নির্ভর করে অন্য কাজ করার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।

যা করা যাবে না
যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে সরকারি ফান্ড (বেনিফিট) ও পেনশন দাবি করা যাবে না। কিছু নির্দিষ্ট কাজ, যেমন একজন পেশাদার ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা যাবে না। নিজে নিজে কোনো চাকরিতে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে না। আবেদন গ্রহণ হলে কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না, তা স্টুডেন্ট ভিসায় বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।

রিয়াদ রায়হান বলেন, লন্ডনের প্রধান এলাকার বাইরে থাকলে অনেক কম খরচে থাকতে পারবেন, এ ছাড়া শহরতলীর বাইরে ইস্ট লন্ডনে খুব কম খরচে থাকতে পারবে। যোগাযোগের জন্য বাস, টাক্সি, ট্রাম, বোর্ড ট্রিপ, ওয়াটার বাস আছে।