ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫

চিড়ার উপকারিতা-অপকারিতা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
ছবি: চিড়া

আমাদের দেশে সাধারণত ভাতই প্রধান খাদ্য। ভাত থেকেই মূলত আমাদের রোজকার প্রয়োজনীয় শর্করা গ্রহণ করি আমরা। তবে চিড়া অনায়াসেই হতে পারে ভাতের বিকল্প।

পুষ্টিবিদদের মতে, শর্করাজাতীয় খাবার থেকে দেহে শক্তির জোগান হয়। চিড়া পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম চিড়া থেকে পাওয়া যেতে পারে ৩০০ কিলোক্যালরি পর্যন্ত। এ ছাড়া চিড়াতে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে ।

চিড়াতে বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। নিচে প্রধান উপাদানগুলো দেওয়া হলো:

চিড়ার উপাদানসমূহ:

কার্বোহাইড্রেট 
চিড়া হলো মূলত চালের তৈরি, তাই এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। দ্রুত শক্তি দেয় শরীরকে।

আয়রন 
চিড়ায় আয়রন থাকে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তশূন্যতার বিরুদ্ধে সহায়ক।

ডায়েটারি ফাইবার 
হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

প্রোটিন
অল্প পরিমাণ প্রোটিনও থাকে, বিশেষ করে দুধ, দই, বা ডাল দিয়ে খেলে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়।

ভিটামিন বি 
যেমন: থায়ামিন (B1), নিয়াসিন (B3), যা বিপাকে সাহায্য করে।

কম চর্বি 
চিড়া প্রাকৃতিকভাবে খুব কম চর্বি বা ফ্যাটযুক্ত, তাই হালকা খাবার হিসেবে উপযোগী।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
বিশেষ করে ভাজা না হলে, কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য থাকে।

চিড়াতে কিছু উপাদান এমন রয়েছে যা কিছু রোগপ্রতিরোধ ও নিরাময়ে সহায়ক হতে পারে। চিড়া নিয়মিত খাওয়ার ফলে কোন কোন অসুখ থেকে মুক্তি বা উপশম পাওয়া যেতে পারে।

চিড়ার উপকারিতা ও যেসব রোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে:

রক্তশূন্যতা
চিড়ায় আয়রন থাকে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী বা নারীদের জন্য উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য
চিড়ায় কিছুটা ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা হজমে সহায়ক। দুধ বা দইয়ের সঙ্গে খেলে আরও বেশি উপকার মেলে।

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি
চিড়া খুবই হালকা খাবার, সহজে হজম হয়—গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ
কম ফ্যাট ও হালকা খাবার হিসেবে চিড়া ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে, বিশেষ করে যদি দই বা সবজি দিয়ে খাওয়া হয়।

ডায়াবেটিস
চিড়া গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে মাঝামাঝি, তবে পরিমাণ বুঝে ও সঠিকভাবে খেলে (যেমন: দই বা শসা দিয়ে) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

হৃদরোগ
কম ফ্যাট ও কোলেস্টেরলমুক্ত বলে চিড়া হার্টের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ খাবার।

জ্বর বা অসুস্থতার পরে দুর্বলতা
চিড়া সহজপাচ্য ও শক্তিদায়ক হওয়ায় জ্বর বা অসুস্থতার পর দুর্বল শরীরে শক্তি ফেরাতে সাহায্য করে।

চিড়ার যেমন  উপকারিত আছে ঠিক তেমনি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে।

চিড়ার অপকারিতা ও সতর্কতা:

রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারে
চিড়ায় রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে, বিশেষ করে বেশি পরিমাণে খেলে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি সমস্যা করতে পারে, যদি নিয়ন্ত্রিতভাবে না খাওয়া হয়।

ওজন বাড়ার আশঙ্কা
চিড়া মূলত চাল থেকেই তৈরি, তাই অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়তে পারে, বিশেষ করে যদি এটি চিনিসহ মিষ্টি করে খাওয়া হয়।

কম পুষ্টিগুণ
শুধু চিড়া খেলে এতে পর্যাপ্ত প্রোটিন, ফ্যাট, বা ভিটামিন থাকে না। তাই সবজি, দুধ, ডিম বা দই না মেশালে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে।

ভাজা চিড়া ক্ষতিকর হতে পারে
অনেকে চিড়া ভেজে বা ঘি-তেলে রান্না করে খায়। এতে অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও ক্যালোরি যুক্ত হয়ে যায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

ঠান্ডা জাতীয় খাবার
চিড়া ঠান্ডা প্রকৃতির খাবার, তাই ঠান্ডাজনিত সমস্যা বা কাশি থাকলে দুধ বা দইয়ের সঙ্গে খেলে সমস্যা করতে পারে।

সংরক্ষণে সমস্যা
বাতাসে বেশি সময় খোলা রাখলে চিড়া সহজে নরম ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায়, এতে ছাঁচ বা ব্যাকটেরিয়া হতে পারে।