ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইউনানী শাস্ত্রে, জোঁক দিয়ে চিকিৎসা প্রায় ৫ হাজার বছরের পুরোনো। আধুনিক চিকিৎসার যুগে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামের বাজারগুলোতে এখনো ক্যানভাসারদের জোঁকের তেল দিয়ে চিকিৎসা করতে দেখা যায়। ইউনানী শাস্ত্রে জীবন্ত জোঁক দিয়ে চিকিৎসার কথা থাকলেও, তেল দিয়ে চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে।
বাজারে এখন অনেক ভেজাল জোঁকের তেল পাওয়া যায়, আর এগুলোর চাপে আসল তেল চিনে নেওয়াটাই আসল চ্যালেঞ্জ। চলুন জেনে নিই আসল জোঁকের তেল চেনার কিছু কৌশল:
জোঁকের তেল চেনার উপায়
ঘ্রাণ
আসল জোঁকের তেলে একটা হালকা কাঁচা মাছের মতো বা সামান্য জোঁকের মতো কাঁচা গন্ধ থাকতে পারে। ভেজাল তেলে সুগন্ধি বা পারফিউম মেশানো থাকে, যেটা অস্বাভাবিকভাবে মিষ্টি বা ঝাঁঝালো।
রং
আসল তেল সাধারণত হয় হালকা বাদামি, কালচে বাদামি বা কিছুটা সবুজাভ বাদামি রঙের। একেবারে চকচকে সোনালি বা কমলা রং হলে সন্দেহ করো-এগুলোতে রং মেশানো হতে পারে।
ঘনত্ব
আসল জোঁকের তেল একটু ঘন হয়, জলযুক্ত নয়। পাতলা বা পানির মতো ঝরঝরে তেল সাধারণত মেশানো বা কেমিক্যাল যুক্ত।
ঘরে টেস্ট করার উপায়
একটু তেল পানিতে ফেলে দেখুন আসল তেল এক জায়গায় থাকবে, ধীরে ধীরে ছড়াবে।
ভেজাল সাথে সাথে পানি হয়ে মিশে যাবে বা ভিন্ন রং ছড়াবে।
জোঁকের তেলের কাজ বা কার্যকারিতা
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে– এটি চামড়ায় মালিশ করলে রক্ত চলাচল বাড়ায়, ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে সজীবতা আসে।
শিশ্নে সাইজ বৃদ্ধি ও শক্তি বৃদ্ধি – অনেকে বিশ্বাস করেন, নিয়মিত ব্যবহারে লিঙ্গে কিছুটা ঘনত্ব ও শক্তি বৃদ্ধি ঘটে (তবে এর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সীমিত)।
অবসাদ দূর করে– মালিশ করলে পেশির ব্যথা ও ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
ইরেকশন সমস্যায় সহায়ক– যারা লিঙ্গের দৃঢ়তা নিয়ে সমস্যায় ভোগেন, তারা এটি ব্যবহার করে সাময়িক উপকার পেতে পারেন।
ত্বকের জন্য উপকারী– কিছু ব্র্যান্ড এটিকে ত্বকের সমস্যা যেমন ফুসকুড়ি, ড্রাই স্কিনে ব্যবহারের জন্যও বলে।
জোঁকের তেলের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতাও জানা জরুরি।
জোঁকের তেলের অপকারিতা
ত্বকে এলার্জি বা জ্বালা-পোড়া
এ তেল সব ধরনের ত্বকে মানায় না। তেল লাগানোর পর কেউ কেউ চুলকানি, লালচে দাগ, জ্বালাপোড়া, ফুসকুড়ির সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
ভেজাল তেল
অনেক কোম্পানি ভেজাল বা কেমিক্যাল মেশানো তেল বিক্রি করে "জোঁকের তেল" নামে। এর ফলে, ত্বক পুড়ে যেতে পারে, স্থায়ী দাগ বা সংক্রমণ করতে পারে,
যৌনাঙ্গে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে।
আসক্তি তৈরি হতে পারে
অনেকে তেল ছাড়া যেন কিছু হয় না এমন মনে করেন। তেল ব্যবহার না করলে আত্মবিশ্বাস কমে যায় মনে হয়। যা একধরনের মানসিক চাপ তৈরি করে।
স্থায়ী সমাধান দেয় না
জোঁকের তেল স্থায়ী সমাধান দিতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে ইরেকশন দুর্বলতা, দ্রুত বীর্যপাত, হরমোনের অভাব দেখা দেয়।
চর্মরোগ বেড়ে যেতে পারে
যদি তেলটি ভালো মানের না হয় বা বেশি ব্যবহার করা হয় তাহলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হতে পারে।
অতিরিক্ত উত্তেজনা বা জ্বালাভাব
অনেক তেলের মধ্যে এমন উপাদান থাকে যেটা গরম অনুভব করায়। কিন্তু সেটা অতিরিক্ত হলে লিঙ্গে অস্বস্তি ও পুড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়।
আপনার মতামত লিখুন :