প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের রান্নাঘরে বহুল ব্যবহৃত মসলাগুলোর একটি হচ্ছে জিরা। জিরার কাজ শুধু মসলা হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়। রান্নাঘর থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবেও এর জুড়ি মেলা ভার। হজমের সমস্যা, পেটের রোগ সারানো, ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়ার মতো আরও অনেক কিছুরই সহজ সমাধান জিরা। তবে উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও রয়েছে বেশকিছু জটিলতা।
উপকারিতা
জিরার উপকারিতার প্রসঙ্গ আসলে প্রথমেই বলতে হবে হজমে উপকারিতার কথা। হজম সমস্যার মূলেই রয়েছে কারণে-অকারণে রাত জেগে থাকা। এ ছাড়াও অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা, কোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যয়াম না করার মতো আরও অনেক কারণ।
তবে হজমের সমস্যা দেখা দেওয়া মাত্রই যদি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়, তবে মিলবে দ্রুত ও সহজ সমাধান। ঘরোয়া পদ্ধতিতে হজম সমস্যা সমাধানের একটি প্রধান উপায় হলো রান্নায় জিরার ব্যবহার। জিরা ব্যবহৃত খাবার খেলে সহজেই সমাধান হয়ে যায় হজমের সমস্যা। কারণ জিরাতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং অ্যাসিডিটি কমায়। তবে সমস্যা গুরুতর হলে অবশ্যই নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
দ্বিতীয়ত, কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস সমস্যায়ও মেলে জিরার উপকারিতা। অনেকেই এ দুটি সমস্যাকে এক মনে করেন। তবে, সমস্যা দুটি এক নয়। যারা শাক-সবজি কম খান, ফাস্ট ফুড বেশি খান, কম পানি পান করেন, সাধারণত তারাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় বেশি ভোগেন। তবে এ সমস্যা সমাধানেরও মূলমন্ত্র জিরা। কারণ জিরায় আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। ফলে খাবার হজম হয় দ্রুত। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে এর কোনো বিকল্প নেই।
তৃতীয়ত, জ্বর-ঠান্ডার প্রকোপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে জিরা। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
অনেক সমস্যার সমাধানে জিরা থাকলেও অনেকেই জানেন না কীভাবে জিরা খাওয়া যায়।
১. জিরা চা: এক কাপ পরিমাণ পানিতে আধা চা-চামচ জিরা বা জিরার গুঁড়া ফুটিয়ে ছেঁকে এই চা খেলেই মিলবে অনেক ধরনের উপকার।
২. জিরা পানি: এক গ্লাস পানিতে এক চামচ জিরা রেখে পরদিন সকালে তা ছেঁকে পানি গ্রহণ করলেই পেট পরিষ্কার, হজমে সহায়তার মতো উপকার পাওয়া যায়।
সতর্কতা
তবে জিরা খেলেও কিছু ক্ষেত্রে মেনে চলা উচিত সতর্কতা।
১. গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের নির্দেশনায় জিরা খাওয়া উচিত। কারণ জিরা ওষুধ হিসেবে কাজ করে। তাই সন্তান জন্মদানের পর সন্তানের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।
২. যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে জিরা না খাওয়াই ভালো।