আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে চালতার অসংখ্য গুণের কথা বর্ণিত রয়েছে। চালতা খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে মেলে নানা উপকারিতা। খেতে টক হলেও অনেকভাবেই খাওয়া যায় অনন্য এই ফলটি।
চালতায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, শর্করা, আমিষ, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, থায়ামিন ও রিবোফ্লাবিনের মতো পুষ্টি গুণ। এসব উপাদান শরীরে নানা সমস্যার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।
শুধু খেতে লোভনীয়ই নয় এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।
চালতার উপকারিতা
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে- চালতা টক জাতীয় ফল হওয়ায় এটি হজমে সহায়তা করে। খাওয়ার পর একটু চালতার টক জুস বা ভর্তা হজমে উপকার করে।
ডায়রিয়া ও আমাশয়ে উপকারি- পাকা চালতা ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানায় ভালো কাজ করে। এতে থাকা প্রাকৃতিক ট্যানিন পেটের সমস্যা কমায়।
লিভারের জন্য ভালো- চালতা লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে- চালতায় আছে পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথায় উপকারী- গরম পানি দিয়ে চালতার রস খেলে কাশি ও গলা ব্যথা কমে যায়। ঠান্ডা জনিত সমস্যায় এটি প্রাকৃতিক ঔষধের মতো কাজ করে।
দাঁতের সমস্যা দূর করে- চালতার পাতার রস বা পাতা চিবালে দাঁতের ব্যথা ও মাড়ির রক্ত পড়া কমে।
চর্মরোগে উপকারী- চালতার পাতা বা ছাল বেটে চর্মরোগে (চুলকানি, একজিমা ইত্যাদি) লাগালে আরাম পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক- গবেষণায় দেখা গেছে, চালতা রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ- চালতায় প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
চালতা যেমন অনেক উপকারি, তেমনি কিছু অপকারিতাও রয়েছেন। বিশেষ করে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় বা সঠিকভাবে ব্যবহার না করা হয়।
চালতার অপকারিতা
অম্লতা (অ্যাসিডিটি) ও গ্যাস্ট্রিক- চালতা টকজাতীয় হওয়ায় বেশি খেলে পেটে অম্বল, গ্যাস্ট্রিক বা বুকজ্বালাপোড়া হতে পারে।
পেটের সমস্যা- অতিরিক্ত চালতা খেলে ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হতে পারে, বিশেষ করে যদি ফলটি কাঁচা বা বেশি পাকা হয়।
রক্তচাপ কমে যেতে পারে- যাদের লো ব্লাড প্রেসার (low blood pressure) আছে, তারা নিয়মিত চালতা খেলে সমস্যা হতে পারে, কারণ এটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী নারীদের জন্য সতর্কতা- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত টকজাতীয় ফল (যেমন চালতা) খেলে অনেক সময় গ্যাস, বুকজ্বালা বা হজমে সমস্যা হতে পারে—তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত খাওয়া উচিত নয়।
ওষুধের সঙ্গে পারস্পরিক ক্রিয়া- যদি কেউ ডায়াবেটিস, হাইপ্রেশার বা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার ওষুধ খান, তাহলে চালতা সেই ওষুধের সঙ্গে পারস্পরিক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই নিয়মিত ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
আপনার মতামত লিখুন :