ঘি খাবারের স্বাদ ও গন্ধকে বাড়িয়ে দেয়। আমাদের আশপাশে এ রকম অনেক মানুষই আছে, যারা ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ঘি খেতে চায় না। তবে ঘি কখনোই ওজন বাড়ায় না বরং ওজন কমাতে সহায়তা করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘি কেবল তখনই শরীরের ক্ষতি করে যখন তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাওয়া হয়। প্রতিদিন ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতে এক চামচ ঘি খেলে মিলবে অনেক উপকার।
ঘি খাওয়ার নিয়ম-
গরম ভাতের সঙ্গে ঘি দিয়ে খেতে অনেক মজা লাগে। এই সুস্বাদু খাবার ব্যবহার করে তরকারি রান্না করলে তা অনেক সুস্বাদু হয়। এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে এক চামচ ঘি মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার মিলবে।
যেকোনো তরকারি রান্না করার সময় ঘি দিলে সেই খাবারের স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়। এই কারণে বিয়ে বাড়ি বা কোনো অনুষ্ঠান বাড়িতে ঘি ব্যবহার করা হয়। সেই সঙ্গে সকালের বা বিকেলের নাস্তার সময় রুটি বা চাপাতির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে বাড়তি স্বাদ যোগ করা যায়। মোটকথা, ঘি অনেক পদ্ধতিতেই খাওয়া যায়।
জেনে নিন গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা-
পানির অভাব দূর করে
আমাদের শরীরে আর্দ্রতা ধরে রাখতে কাজ করে ঘি। এর ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য শরীরকে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে কাজ করে। শরীরে কোনো কারণে পানির ঘাটতি দেখা দিলে পর্যাপ্ত পানি পানের পাশাপাশি ঘি খাওয়ার অভ্যাস করুন। ঘি খেলে ত্বকও ভালো থাকে। ঘিয়ে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য। ঘিয়ের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
শক্তি বৃদ্ধি করে
শরীরে শক্তি বাড়াতে চাইলে প্রতিদিন ঘি আপনি খেতেই পারেন। কারণ এটি শরীরে পুষ্টি পৌঁছে দেয়। গরম ভাতের সঙ্গে এক চামচ ঘি খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘিয়ে ফ্যাটের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি। তাই ওজনের সঙ্গে সমন্বয় করে খাওয়াই ভালো। যেকোনো খাবারই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাওয়া হলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। গরম ভাতে ঘি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। ঘি খেলে নানা ধরনের সংক্রমণ ও অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদদের মতে, ঘিয়ে থাকে বাটরিক অ্যাসিড। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। ঘিয়ে থাকা ভিটামিন এ এবং সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ কার্যকরী।
শরীর ঠান্ডা রাখে
ঘি খেলে আমাদের মন এবং শরীরে এক ধরনের শীতলতা আসে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘি প্রদাহ হ্রাস করে। সেইসঙ্গে এটি শরীরকে শিথিল রাখতে কাজ করে। ঘি মিষ্টি এবং শীতল প্রকৃতির। ফলে গরমেও ঘি খাওয়া যায়।
হজম ক্ষমতা ভালো রাখে
ঘি খেলে তা ভালো হজমে সাহায্য করে। হজমে উন্নতি এবং পুষ্টির মান শোষণে কাজ করে ঘি। এতে থাকে প্রচুর বিউটারিক এসিড যা ইন্টেস্টাইনর কার্যক্ষমতা বাড়ায়। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খেলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সামান্য হলেও কমে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
ঘি খাওয়ার অপকারিতা
১/ মাত্রা অতিরিক্ত ঘি খেলে পরিপাকতন্ত্র কাজ করা কমিয়ে দেয়। এতে হজম সমস্যা আরও প্রকট হয়।
২/ ঘি তে যে পরিমাণ চর্বি থাকে তা স্বাভাবিক কিন্তু অতিরিক্ত গ্রহণে তা মাত্রাতিরিক্ত ফ্যাটজনিত সমস্যার সৃষ্টি করে।
৩/ অতিরিক্ত খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেটে পারে।
৪/ বেশি ঘি খেলে বদ হজম সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
৫/ দুগ্ধজাত খাবার হওয়ায় ঘি খেলে আসিডিটি ও পেট ফাঁপা বা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঘি আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার পাশাপাশি অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। আপনি যদি ভালো মানের খাঁটি অর্গানিক ঘি খান তবে অবশ্যই এর উপকার মিলবে। কিন্তু ভেজাল বা খারাপ কোয়ালিটির ঘি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আপনার মতামত লিখুন :