শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০২:০১ পিএম

মিছরির উপকারিতা-অপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০২:০১ পিএম

মিছরির উপকারিতা-অপকারিতা

মিছরি। ছবি: সংগৃহীত

মিছরি মিষ্টিজাতীয় একধরনের দানাদার পদার্থ। এটি প্রধানত সাদা বা চিনির মিছরি ও তালমিছরি—এই দুই ধরনের হয়।  চিনির মিছরি সাধারণত লালাভ সাদা রঙের হয়ে থাকে। হাইড্রোজ নামের রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে এই মিছরিকে ফকফকে সাদা করা হয়। তবে তালমিছরি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মিষ্টি। চিনির মিছরির তুলনায় এই মিছরিতে খাদ্যগুণ বেশি থাকে।

মিছরির পুষ্টিগুণ (প্রতি ১০০ গ্রাম):

শক্তি: ৩৮০–৪০০ কিলোক্যালরি

কার্বোহাইড্রেট: ৯৯–১০০ গ্রাম (প্রধানত সুক্রোজ)

চর্বি ও প্রোটিন: প্রায় শূন্য

ভিটামিন ও খনিজ: খুব অল্প পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ও ফসফরাস থাকতে পারে, তবে পরিমাণ নগণ্য।

 মিছরি বনাম সাধারণ চিনি: মূল পার্থক্য


মিছরির ব্যবহার আমাদের জীবনে অনেক রকমভাবে হয়ে থাকে – খাবারে, চিকিৎসায়, এমনকি কিছু ঐতিহ্যগত রীতিতে পর্যন্ত। 

খাদ্যে মিছরির ব্যবহার

মিষ্টান্ন তৈরিতে: পায়েস, খির, সন্দেশ, লাড্ডু ইত্যাদিতে মিছরি ব্যবহার করা হয় স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে।
চা ও পানীয়তে: অনেকে সাধারণ চিনির বদলে মিছরি দিয়ে চা খেতে পছন্দ করেন, বিশেষ করে হালকা স্বাদের হারবাল চায়ে।
পানের সাথে: বাংলার গ্রামাঞ্চলে পান তৈরিতে মিছরি ব্যবহার খুব প্রচলিত।
মুখশুদ্ধি হিসেবে: খাবার পরে মিছরি ও মৌরি একসাথে মুখে দিয়ে খাওয়া হয়।

আয়ুর্বেদ ও ঘরোয়া চিকিৎসায় মিছরির ব্যবহার

কাশি ও গলা ব্যথায়: তুলসী পাতার সাথে মিছরি খেলে কাশির উপশম হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
শরীর ঠাণ্ডা রাখতে: মিছরি ঠাণ্ডা প্রকৃতির, তাই এটি শরীরের উত্তাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
হজমে সহায়ক: মৌরি বা জিরার সাথে মিছরি চিবিয়ে খেলে হজমে সাহায্য করে বলে অনেকে মনে করেন।
রক্তশূন্যতায়: আয়ুর্বেদে কিছু সময় মিছরি, ঘি ও কালো তিল একসাথে খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

পূজা-অর্চনায় ও ধর্মীয় ব্যবহার

প্রসাদ হিসেবে: হিন্দু ধর্মে মন্দিরে বা পূজায় মিছরি প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়।
দীক্ষা বা আশীর্বাদে: গুরু বা পণ্ডিত আশীর্বাদ দেওয়ার সময় হাতে মিছরি দেন অনেকে।

লোকজ সংস্কৃতি ও প্রথায়

বিয়ের অনুষ্ঠানে: বর-কনের মাঝে মিছরি বিতরণ শুভ লক্ষণ হিসেবে দেখা হয়।
নবজাতকের জন্য: অনেক সময় শিশুকে প্রথম মিষ্টি স্বাদের পরিচয় করিয়ে দিতে মিছরি ব্যবহৃত হয় (যদিও চিকিৎসকরা এখন এটা নিরুৎসাহিত করেন)।

মিছরি শুধু মিষ্টি খাবারই নয়, এর কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাও আছে। বিশেষ করে আয়ুর্বেদ ও ঘরোয়া চিকিৎসায় এর ব্যবহার অনেক পুরনো। 

মিছরির উপকারিতা

গলা ব্যথা ও কাশির উপশমে সহায়ক- মিছরি গলার জন্য খুব আরামদায়ক। তুলসী পাতার রস বা আদার সঙ্গে মিছরি খেলে কাশি ও গলার জ্বালাপোড়া কমে। গলা শুকিয়ে গেলে চুষে খেলে আরাম মেলে।

দ্রুত শক্তি দেয়-  মিছরিতে সুক্রোজ থাকে, যা শরীরে গ্লুকোজে পরিণত হয়ে দ্রুত এনার্জি দেয়। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা দুর্বলতা বোধ করলে একটু মিছরি খেলে শরীরে চটজলদি শক্তি আসে।

হজমে সহায়তা করে- মিছরি ও মৌরি একসাথে খেলে হজমে সাহায্য করে এবং মুখশুদ্ধিও হয়। ভারী খাবারের পর কিছুটা মিছরি খেলে পেট হালকা অনুভব হয়।

শরীর ঠাণ্ডা রাখে- আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, মিছরি ঠাণ্ডা প্রকৃতির। গ্রীষ্মকালে শরীরের অতিরিক্ত তাপ কমাতে সাহায্য করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে- মিছরি চিবিয়ে খেলে মুখের দুর্গন্ধ কমে এবং মুখের স্বাদও ভালো হয়।

চোখের জন্য উপকারী- মিছরি, ঘি ও গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় চোখের জ্যোতি বাড়াতে – যদিও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সীমিত।

মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা রাখে- অনেক সময় মিছরি খেলে মানসিক প্রশান্তি আসে বলেও অনেকে মনে করেন।


মিছরির যেমন কিছু উপকারিতা আছে, তেমনি অতিরিক্ত বা অনিয়মিত ব্যবহারে কিছু অপকারিতাও রয়েছে।

মিছরির অপকারিতা

রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়: মিছরিও মূলত সুক্রোজ, যা দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়।

ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা: অতিরিক্ত মিছরি খেলে ক্যালরি অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে জমে যায়। ফলস্বরূপ, ওজন বাড়ে এবং স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ে।

দাঁতের ক্ষয় ও ক্যাভিটি: মিছরি দাঁতের ফাঁকে থেকে ব্যাকটেরিয়ার খাবার হয়ে দাঁতের ক্ষয় সৃষ্টি করে। শিশুরা বেশি খেলে দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

হৃদরোগের ঝুঁকি: অতিরিক্ত চিনি বা মিছরি গ্রহণ করলে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যেতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

মনোসংযোগের ঘাটতি ও মেজাজের উঠানামা: বেশি চিনি খেলে রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামা হয়, ফলে অনেকে মেজাজ খিটখিটে বা ক্লান্ত অনুভব করেন।

পরোক্ষভাবে হরমোনে প্রভাব ফেলতে পারে: দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ হরমোন ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ইনসুলিন ও কোরটিসল।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!